আপনার টাকা ম্যানেজ করার জন্য ৭ টি ফান্ড
হাতে টাকা আসলে সবাই হয়ে উঠি যেন বাংলার স্বাধীন নবাব! বাতাসে উড়াই টাকা, নদীতে ভাসাই টাকা। কিন্তু, এভাবে ভাসাতে ভাসাতে কখন যে নিজেরাই ভেসে যাই, সে খবরটা ঠিক মাথায় থাকে না। কিন্তু, সুন্দর জীবনযাপনে অর্থকড়ি সব ভাসিয়ে দেয়া বা নিজের ভেসে যাওয়াটা ঠিক মানায় না। এর জন্য জরুরি ম্যানেজমেন্ট!
মাসের শুরুতে স্যালারি পেয়ে গোঁটা দশেক পার্টি, ট্যুর আর সিনেমার টিকিট কিনে ফতুর হয়ে মাস শেষে অভুক্ত থাকা’টা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আবার অনেক সময় এসব কিছু না করেও মাসের অর্ধেক যেতে না যেতেই পকেট ফাঁকা হয় অনেকেরই। মাসের শেষেও পকেটে কিছু পয়সা কড়ি রাখতে চাইলে জানতে হবে এবং শিখতে হবে পকেট আর পকেটের টাকা ম্যানেজ করার কৌশল।
” ছোট্ট ছোট্ট বালুকণা, বিন্দু বিন্দু জল গড়ে তোলে মহাদেশ, সাগড় অতল “
ছোটবেলায় কমবেশি এই ভাব সম্প্রসারণ আমরা সবাই পড়েছি। ছোট ছোট বালুকণা যেমন একটা মহাদেশ গড়ে তোলে, প্রতিমাসের ছোট ছোট সেভিংসও অনেক বড় একটা সেভিংস হয়ে দাঁড়ায়। প্রশ্ন হচ্ছে, কিভাবে করবো প্রতিমাসে সেভিংস?
ধরুন, আপনার মাসিক আয় ত্রিশ হাজার টাকা।
প্রতিমাসে আপনার থাকা খাওয়া এবং নিত্য প্রয়োজনীয়— যা না হলেই নয়, তা বাবদ ব্যয় হয় পনেরো হাজার টাকা। বাকী পনেরো হাজার টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে প্রতিমাসে যদি কোথাও, বা কোনো ব্যাংকে সেভিংস করেন তাহলে দেখা যাবে এক বছর পরে টাকার পরিমাণটা কিন্তু অনেক বেশি হবে। এতে দেখা যাবে, ইমার্জেন্সি প্রয়োজনে বা টাকার পরিমাণটা বেশি হয়ে গেলে টাকাটা আপনি অন্য ক্ষেত্রেও কাজে লাগাতে পারবেন। আর চাইলে আপনি এটা আজীবনের জন্যও চালিয়ে নিতে পারেন।
তাহলে এখন গুণে দেখুন, প্রতিমাসে পাঁচ হাজার করে জমালে এক বছরে তার পরিমাণ কত হাজারে গিয়ে দাঁড়ায়!
এরপর বাকী রইল দশ হাজার।
এর থেকে কিছু টাকা ইমার্জেন্সি প্রয়োজনের জন্য হাতে রেখে দেবেন। কিছু টাকা দান করতে পারেন। দান করা একটা লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট! এতে লস হবার চান্স নাই।
ইনভেস্টের কথা থেকে আসলো— আপনার পকেটে থাকা বাকী টাকা থেকে একটা নির্দিষ্ট এমাউন্ট আপনি ইনভেস্ট করতে পারেন। হতে পারে যেকোনো বিজনেস, হতে পারে স্টক মার্কেটেও!
ইনভেস্টমেন্ট, চ্যারিটি ফান্ডে দান, ইমার্জেন্সি ফান্ডে টাকা রাখার পরে দেখলেন আপনার হাতে আরো হাজার তিন চারেক টাকা রয়ে গেছে। তাহলে এর মধ্যে থেকেই আপনি আপনার লাক্সারি ফান্ডে টাকা জমাবেন।
লাক্সারী ফান্ডটা কিসের জন্য?
ঐ যে শুরুতে বলেছিলাম। স্যালারী পেলেই আমাদের শখ পূরণ করার বাতিক ওঠে। আসলে আমরা কেউই শখের উর্ধ্বে না। শখ দমিয়ে রেখে নিজেকে কষ্ট দেয়া যাবে না। তাই, প্রয়োজনীয় জিনিসপাতি এবং ইনভেস্টমেন্ট আর সেভিংসের পরে যেটুকু বাকী থাকবে তা-ই দিয়েই পূরণ করুন সাধ্যের ভেতর সাধ!
এই হলো মানি ম্যানেজমেন্টের কিছু টিপস।
কিন্তু, যদি আপনার ব্যয়ের ক্ষেত্র এবং আয়ের পরিমাণে কম-বেশি হয়ে থাকে তাহলে নিজের মত করে এই টিপস অনুযায়ী সাজিয়ে ফেলুন একটা মানি ম্যানেজমেন্ট চার্ট!
মোটকথা, টাকা হাতে পেয়েই ভাসানো যাবে না। ভালো থাকার জন্য, ভালো রাখার জন্য জরুরি— সেভিংস এবং ম্যানেজমেন্ট!