যে পাঁচটি বিষয় ব্লগে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ!
নতুন ধরনের, নতুন তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পড়তে কার না ভালো লাগে! কিন্তু যতই তথ্যসমৃদ্ধ হোক না কেন, আর্টিকেলকে পাঠক বান্ধব করে তোলার জন্য কিছু বিষয়ে মনোযোগ দেয়া জরুরি। অনেকেই আর্টিকেল লেখার সময়ে এসব সুক্ষ্ম জিনিস গুলো খেয়াল করেন না। এতে পাঠক হারানোর সম্ভাবনা থাকে। চলুন, কিছু টিপস ফলো করে নিজের আর্টিকেলটাকে আকর্ষণীয় করে তোলা যাক!
১: The Hook
প্রত্যেকটা ব্লগপোস্টেই ইন্ট্রো থাকে। টাইটেল থাকে। আমরা ব্লগাররা বেশ ভালো করেই জানি, প্রতিটা পোস্টে এগুলো কত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু, অনেকে অনেক লম্বা ইন্ট্রো ব্যবহার করেন। তাতে কোনো আকর্ষণীয় কিছু থাকেনা যা একটা পাঠককে আর্টিকেলটা পড়তে বাধ্য করতে পারে।
ইন্ট্রোতে একটা Hook থাকতে হবে। মাছ ধরতে গিয়ে বরশী দিয়ে যেমন টোপ ফেলে মাছ ধরে আনেন, আপনার ইন্ট্রোডাকশনও টোপ হিসেবে তৈরি করুন। যাতে পাঠক কোনোভাবেই আপনার আর্টিকেল না পড়ে যেতে পারে।
২: Subheadings
খুব ছোট আর্টিকেল বাদে সব আর্টিকেলেই সাবহেডিংস দেয়া উচিত। ৪০০ ওয়ার্ডের চেয়ে কম ওয়ার্ডের আর্টিকেল গুলোডে Subheadings লাগে না। কিন্তু এরচেয়ে বড় হলেই Subheading একটা ট্যুর গাইডের মত কাজ করে।
অনেক বড় লেখায় Subheading না থাকলে কিছুক্ষণ পর খেই হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে। এতে আপনি পাঠকের মন পাওয়ার বদলে পাঠকই হারিয়ে ফেলতে পারেন।
এছাড়াও লাগাতার একটা লেখা পড়তে খুব একটা ভালো লাগেনা। এজন্য মাঝে মাঝে একটু টপিকের এদিকসেদিক হলেই নতুন একটা শিরোনাম দিয়ে প্যারাটা একটু আলাদা করে ফেলা উচিত। এতে পাঠকের আগ্রহ বাড়ে।
৩: Transitions
লেখার মধ্যে ট্রানজিশন খুব ভালো কাজ করে। একই লেখার মধ্যে দুই ধরনের চিন্তা ভাবনা চলে আসলে সেটাকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য একটা সেতু দরকার। মাঝে মাঝে এই কাজটা Subheading নিজেই করে দেয়।
এছাড়াও ট্রানজিশন আপনাকে অনেক জায়গায় হেল্প করতে পারে। ইন্ট্রো লিস্টে, নতুন Heading এর শুরুতে এটা খুব কার্যকরী।
৪: Links
পোস্টের মধ্যে অন্য পোস্টের লিংক দিয়ে দেয়া খুব একটা ভালো আইডিয়াই বলা চলে। এতে আপনার আয় বাড়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়, পাঠক ধরে রাখে।
পোস্টে ইন্টার্নাল লিংক বা এক্সটার্নাল লিংক— যেটা খুশি সেটা ব্যবহার করতে পারেন। ইন্টার্নাল লিংক হলো— আপনারই ওয়েবসাইটে পাবলিশ হওয়া পুরোনো কোনো পোস্টের লিংক। আর এক্সটার্নাল লিংক হচ্ছে — অন্য কোনো ওয়েবসাইটে পাবলিশ হওয়া পোস্টের লিংক দেয়া।
ধরুন আপনি একটা আর্টিকেল লিখছেন। কিন্তু একই টপিক নিয়ে একটা লেখা আপনি আগেও লিখেছেন বা আপনার বন্ধু তার ওয়েবসাইটে লিখেছে। নতুন লিখতে থাকা আর্টিকেলটায় কিন্তু এসব পোস্টের লিংক দিয়ে দিতে পারেন।
আমাজনের মত কোনো সাইটের সাথে যুক্ত হয়ে তাদের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। অ্যাফিলিয়েট লিংক পোস্টে জুড়ে দিলেন, এখান থেকেও একটা ইনকাম হয়ে গেলো। এছাড়া নিজের ব্যবসা থাকলে নিজের প্রোডাক্টের লিংক বসিয়ে দিন।
ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং। এতে রিডাররা এসব লিংকে ক্লিক করে আপনার লেখা পড়তেই থাকবে, থামতেই চাইবেনা। এজন্য লিংক বসানোটা গুরুত্বপূর্ণ। আজকেই খুঁজে ফেলুন, আপনার ওয়েবসাইটে পাবলিশ হওয়া কোনো পোস্টে ইন্টারনাল বা এক্সটার্নাল লিংক করা যায় কি-না!
মাঝে মাঝে পোস্টের মাঝখানে লিংক দেয়ার উপায় থাকেনা। সেক্ষেত্রে পোস্টের শেষে সাজেশন হিসেবে আপনার নেক্সট পোস্টের লিংক রাখতে পারেন!
৫: The Conclusion
হুট করে লেখার শেষ লাইন লেখা যায় না। হঠাৎ করে উপসংহার ছাড়াই সমাপ্তি টানলে পাঠকের কাছে অসমাপ্ত লাগতে পারে।
এজন্য একটা গোছানো উপসংহার পোস্টে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ ততটাই,যতটা গুরুত্বপূর্ণ ইন্ট্রো থাকাটা। ইন্ট্রোর মতই উপসংহার ও ছোট করে লিখতে পারেন কিন্তু অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, এতে যেন এট্রাক্টিভ কিছু একটা থাকে — যেটা পাঠককে তৃপ্ত করবে।
যদিও লিখতে বসলে এতকিছু মাথায় আসে না। কিন্তু এসব টিপস মেনে চলুন। এভাবে লেখার অভ্যাস করুন। নিজেই নিজের লেখার পরিবর্তন দেখতে পাবেন। লেখার সময় এই পাঁচটা টিপসকে চেকলিস্ট হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন!