এই ৫টি উপায়ে আপনি আরো দ্রুত লিখতে পারবেন!

একটা বিজনেস চালানো বেশ সময়সাপেক্ষ কাজ। এতে প্ল্যানিং, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, প্রোডাক্ট ডেভলপমেন্ট, সেলস, ডেলিভারি, মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি সহ অনেক কিছু জড়িত। এজন্য যেকোনো কিছু নিয়ে বিজনেস করতে গেলেই আপনাকে সময় দিতে হবে। 

ফ্যামিলি, বিজনেস, বন্ধু বান্ধব সহ সবকিছু তাল মিলিয়ে চলাটা মুশকিল হয়ে পড়ে। মাঝে মাঝে দম ফেলার সময় টুকুও পাওয়া যায় না। এরমধ্যে আপনার ব্লগ পোস্টটা একটা অংশ জুড়ে থাকে। 

ব্লগ পোস্ট করা ইম্পর্ট্যান্ট হলেও, মাঝে মাঝে আপনি বুঝে উঠতে পারেন না কিভাবে এটা করা দরকার।  সিদ্ধান্তের দোলাচলে দুলতে দুলতে অন্য কাজকে প্রায়োরিটি দিয়ে ব্লগপোস্টের ব্যাপারটাই ভুলে যান। প্রায়ই মনে হয়—  আমার আজকেই লেখা উচিত, আমি আজকেই লিখবো, থাক কালকে সকালে উঠে লিখবো। কিন্তু পরে সেই কাল আর আসে না। 

ব্লগ পোস্ট লিখতে সময় লাগে। এটা দু’চার মিনিটের কাজ না। একটানা একটা ব্লগ লেখার পরে সমস্ত ক্রিয়েটিভিটি চুপসে আসে। হাত চলেনা, মন চলেনা, ব্রেইনও থমকে থাকে। 

কেউ একটু হেঁটে আসে, কেউ শুয়ে সিলিং দেখে, কেউ ছোট ঘুম দেয় অথবা কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে নেমে পড়ে। 

ক্লান্ত হলেও ব্লগারদের লিখতে হবে নিয়মিত। কিন্তু কিভাবে দ্রুত লেখা যায় আজকে জানা যাক এ নিয়ে কিছু টিপস!

1. Have a plan 

অনেকে মাঝে মাঝে লেখা পাবলিশ করার আগের দিনও হাত গুটিয়ে বসে থাকে। ভাবতে থাকে, পরে লিখি আরো। একটু পরে লিখলে ভালো করে লিখতে পারবো। এরপরে পাবলিশ করার আগ  মূহুর্তেও লেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। 

কিন্তু তাতে আরো ক্ষতি হয়। দেরী করলেই যে লেখা ভালো হবে, এমন কোনো কথা নেই। ব্যাপারটা সময় খরচ করে অযথা। ফ্রাস্ট্রেটেড করে তোলে। 

লেখা দ্রুত সাড়ার জন্য আপনাকে জানতে হবে, আপনি কি লিখতে চান। এজন্য কী-পয়েন্ট গুলো নোট করুন। সেগুলোর মধ্যে যা দরকার তা নিয়ে রিসার্চ করুন।

মনোবিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে বলে,  ‘implementation intention’।  প্ল্যান ছাড়া কোনো কাজ করতে গেলেই আপনার ব্রেইন আপনাকে সিগন্যাল দেবে, যেন আপনি এটা পারবেন না। সব কাজ প্যাঁচানো তারের মত লাগবে। 

প্ল্যান করে নিলে সব কাজ সহজ হয়ে যাবে। একটার পর একটা টাস্ক শেষ করুন, দেখবেন আগের চেয়ে দ্রুত লিখতে পারছেন। 

2. Make planning a separate exercise 

প্ল্যানিং আর লেখালেখি — দু’টো একসাথে করলে গুলিয়ে ফেলবেন। একই সময়ে দু’টো কাজ না করে এই দু’টো কে আলাদা টাস্ক হিসেবে ধরুন। এতে ভালো ফল পাবেন। যেমন, আপনি আপনার পছন্দের কফিশপে গিয়ে একটা কফির মগ হাতে নিয়ে ঠান্ডা মাথায় প্ল্যান করুন। এরপরে অফিসে গিয়ে তখন লিখুন। 

আপনি যদি একই চিন্তা ভাবনার চারদেয়ালে নিজেকে আঁটকে ফেলেন, ক্রিয়েটিভ কিছু আর মাথায় আসবে না। নতুন পরিবেশে মিশুন। নতুন নতুন আইডিয়া সম্পর্কে জানুন। সেগুলো আপনার প্ল্যানের মধ্যে ইনক্লুড করুন। এরপরে ঠান্ডা মাথায় কাজ করুন! এতেও লেখার কাজটা সহজ এবং দ্রুত হবে। 

3. Write for 15 minutes a day 

Fellow ProBlogger contributor ‘Kelly Exeter’ পরামর্শ দেন যে, আপনার প্ল্যানিংয়ের পরে ল্যাপটপ নিয়ে বসেই সময়টা নোট করে রাখুন।  এরপরে টানা ১৫ মিনিট লিখুন। কি লিখেছেন তা ব্যাপার না, লিখে যান।  

মাঝখানে আটকে গেলে, মাথায় কিছু না আসলেও লেখা থামাবেন না। যেখানে থেমে গেছে ব্রেইন, সেখানে ব্রেইন কাজ না করা অবধি লিখতে থাকুন, ‘ আমি জানিনা এখানে কি লিখবো’।  

কোনো কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেয়ে শুরু করাটাই বেশ কঠিন। একবার যদি মনকে ভুলিয়ে ভালিয়ে কোনো কাজ ঠিকঠাক শুরু করতে পারেনই— আপনাকে থামানো মুশকিল হয়ে যাবে।  এটাকে বলে, Zeigarnik Effect।  

মানুষের ব্রেইন চলতে থাকলে থামতে চায়না সহজে। এজন্য সঠিক প্ল্যান করে শুরু করুন। মাথায় কিছু না আসলেও কাজ থেকে বের হবেন না। নিয়মিত লিখুন। ১০ মিনিট, ১৫ মিনিট — যাই হোক না কেন। 

4. Set a deadline 

‘লিখতে ইচ্ছে করছে না? লিখবো না। কাল লিখি। কাল সকালে? না থাক, কাল রাতেই।’

এগুলো আমাদের প্রতিদিনের কথা, যা নিজের সাথে নিজে বলি। মনে হয়, আরো অনেক কাজ আছে। সেগুলো আগে শেষ করি। তারপরে ব্লগ পোস্টটা লেখা যাবে। 

কিন্তু এমন করে সব কাজ শেষ হয় ঠিকই, ব্লগপোস্টটা থেকে যায়। এজন্য নিজেই নিজের বস হলেও, নিজেকেই নিজের ক্লায়েন্ট বানান। ডেডলাইন সেট করে দিন নিজের। যেন এই সময়ের মধ্যে ডেলিভারি করতেই হবে কাজটা— এমন একটা শক্ত ডেডলাইন সেট করুন। 

এতে ব্রেইনে কাজের জন্য প্রেশার তৈরি হবে। মাথার মধ্যে ঘুরঘুর করবে ডেডলাইন।  এতে কাজ দ্রুত হয়, নিয়মিত লেখার জন্যও উৎসাহ পাওয়া যায়।

5. Focus on the end result 

পরীক্ষার আগে যদি পরীক্ষার পরের ছুটির কথা চিন্তা করি, তাহলে পরীক্ষার প্রেশার কিছুটা কম অনুভূত হয়। ব্লগিংয়ের বেলায়ও তাই। প্ল্যানিং, রাইটিং, পাবলিশিং— এসব অনেকটা কষ্টের মনে হয়। নিয়মিত কাজ করা, সময় দেয়া একটুও ভালো লাগার মত না। 

কিন্তু আপনি যদি ভাবেন যে, নিয়মিত এই কাজের পেছনে সময়টা দেয়ার পরে একটা রেজাল্ট অপেক্ষা করছে আপনার জন্য — অবশ্যই ভালো লাগবে। 

কথায় আছে, খাটলে কেউ খালি হাতে ফেরে না বা কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে। নিয়মিত লিখুন। দু’চার সপ্তাহ না লিখলে দেখবেন, আপনার অডিয়েন্স আপনাকে আর মনে রাখছে না। 

এজন্য কষ্ট হলেও নিয়মিত লিখুন। অডিয়েন্স বাড়ান। ভাবুন, এভাবে চলতে থাকলে একদিন না একদিন একটা ভালো ফলাফল আসবেই!

Similar Posts