AI Content এর ভবিষ্যৎ কী?

বর্তমানে AI Generated Content Tool খুবই জনপ্রিয় একটি Tool। মাঠে, ঘাটে কিংবা রাস্তায়— যে যেখানে বসেই কাজ করুক না কেন, AI Generated Tool নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেনি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর।

আদতে, AI Generated Tool কি?

AI Generated Content Tool মূলত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কনটেন্ট টুল। আপনি এতে একটি Keyword দিলে সে আপনাকে তদনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে দেবে।

শুনে খুশি হচ্ছেন?

খুশি হওয়ারই কথা। কারণ, AI Generated Content Tool আপনাকে রোবটের মত দ্রুত এবং গ্রামাটিক্যাল এরর মুক্ত কনটেন্ট ক্রিয়েট করে দেবে। সো, আপনার কনটেন্ট ক্রিয়েটর বা রাইটার হায়ার করার চিন্তাও উধাও হবে আবার আপনার নিজেরও কষ্ট করে কনটেন্ট লিখতে হবে না। কিন্তু, এই AI Generated Content Tool এর ভবিষ্যৎ আসলে কি? এটা কতখানি হেল্পফুল? 

হতাশার কথা হচ্ছে, AI Tool আপনার কষ্ট কমিয়ে দিলেও এর বড় বড় দুইটি অসুবিধা রয়েছে।

এক. ফ্যাক্ট ভুল থাকার সম্ভাবনা

ধরুন, আপনি একজন কন্টেন্ট রাইটার।

আপনাকে একটি আর্টিকেলের keyword দেওয়া হলো, ” How Large Do Turtle Grow? “

নরমালি আপনি তখন লিখবেন— একটা কচ্ছপ জন্মানোর সময় কতটুকু লম্বা থাকে, কিছুদিন পরে কতটুকু লম্বা হয়, বাচ্চা কালীন লম্বা হওয়ার হার কতটুকু, যখন অ্যাডাল্ট সময় পার করে তখন কতটুকু লম্বা হয়, একটা কচ্ছপের এভারেজ সাইজ কতটুকু থাকে, হাইয়েস্ট সে কতটুকু লম্বা হতে পারে ইত্যাদি তথ্য একের পরে সাজিয়ে দেবেন। 

কিন্তু, এই সেইম আর্টিকেলের কীওয়ার্ড যদি আপনি একটা AI Content Tool কে দেন তাহলে সে রেডিমেট লিখে দেবে— একটা কচ্ছপ ২০ ইঞ্চি বড় হতে পারে।

প্রশ্ন হলো— একটা কচ্ছপ কি শুরুতেই সে বিশ ইঞ্চি বড় হয়?  বা আজীবনই ২০ ইঞ্চি লম্বা থাকে? অবশ্যই না।

সো, AI Content Tool আপনার মত করে আপনাকে একটা আর্টিকেল লিখে দিতে পারবে না। হতে পারে, AI Content Tool এর গ্রামাটিকাল এরর হওয়ার সম্ভাবনা কম হয়। কিন্তু, AI Content Tool এর আর্টিকেলে কিছু কিছু ফ্যাক্ট ভুল থাকে। কারণ, কোনো বিষয়বস্তু সম্পর্কে সে পরিপূর্ণ তথ্য দিতে অক্ষম। এজন্য কোনো AI Content Tool কনটেন্ট ক্রিয়েট করলে আপনাকে ডাবল চেক করতে হবে, ম্যানুয়ালি রিভিউ করতে হবে।

Looking for more insights on Content Writing? You may find this post valuable. এই ৫টি উপায়ে আপনি আরো দ্রুত লিখতে পারবেন!

দুই.  ঘুরিয়ে পেচিয়ে একই ইনফর্মেশন দেওয়া

শুধুমাত্র ওয়ার্ড কাউন্ট ফিলআপ করার জন্য একটা আর্টিকেলে একই সেনটেন্স ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বারবার দেয়। এজন্য অনেক ফ্ল্যাপ থাকে। দেখা যায়, আপনি যদি তাকে এক হাজার ওয়ার্ডের একটা আর্টিকেল লিখতে বলেন সে আপনাকে এক হাজার ওয়ার্ডই দেবে। কিন্তু, আসল ইনফরমেশন হবে তিন’শ – চার’শ ওয়ার্ডের। বাকি লেখায় সে শুধু ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে একই ইনফরমেশন দিয়ে ওয়ার্ড ফিলআপ করেছে।

এই দুটো মেজর সমস্যা AI Content Tool এ পাওয়া যায়। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি কি AI Content Tool একদমই ব্যবহার করতে পারবেন না?  পারবেন, অবশ্যই পারবেন।সেক্ষেত্রে আপনার কিছু শর্ত মানতে হবে।

শর্ত হলো, যখনই আপনি কোন AI Content Tool কে কীওয়ার্ড দেবেন এবং তদনুযায়ী সে আপনাকে কনটেন্ট টা দেওয়ার পরে আপনার ওই কনটেন্ট টা ম্যানুয়ালি চেক করা লাগবে। কোনো ফ্যাক্টে ভুল আছে কি-না, কোনো লেখা কয়েকবার ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে দেয়া আছে কি-না ইত্যাদি চেক করে দেখতে হবে। এসব যদি করতে না পারেন, তাহলে এই AI Content Tool ব্যবহার না করাই ভালো।

এবার কথা হচ্ছে, সব কাজই যদি আপনার করতে হয়, ফ্ল্যাপ থাকলে এডিট করতে হয়, বারবার চেক করতে হয় তাহলে AI Content Tool আসলে আপনার কতখানি সময় বাঁচাচ্ছে? কতখানি হেল্প করছে?

মোটকথা, আপনার সেই সময়ও যাচ্ছে, পরিশ্রমও করতে হচ্ছে। এরচে’ নিজের হাতে অথবা কোনো কনটেন্ট রাইটারকে দিয়ে একটা ভালো এবং অরিজিনাল কনটেন্ট লেখানোই বেটার।

আরেকটা মজার বিষয় হচ্ছে বর্তমানে অনেকেই এই AI Content Tool দিয়ে কনটেন্ট ক্রিয়েট করে তাদের ওয়েবসাইটে দিচ্ছে।

প্রায়ই দেখা যায়, অনেক অনেক ওয়েবসাইট আছে যাদের হাজার হাজার হাজার কন্টেন্ট রয়েছে। ওয়েবসাইটটা হয়তো এক বছর আগে শুরু করেছে কিন্তু ২০-৩০ হাজার কনটেন্ট রয়েছে। এই ওয়েবসাইট গুলোর ব্লগ সেকশনে গিয়ে নিচে স্ক্রল করে তাদের পেইজ সেকশনে গেলে অনেক পেইজ দেখতে পারবেন। (যেমন হতে পারে হাজার হাজার পেইজ রয়েছে।)

আসলে তারা হাজার হাজার কনটেন্ট এবং পেইজ ক্রিয়েট করছে শুধুমাত্র AI Content Generated Tool ব্যবহার করে। আর, AI Content Tool তাদেরকে যে কনটেন্ট টা দেয় তারা সেই হুবহু কন্টেন্টটিই কপি পেস্ট করে বসিয়ে দেয়। এভাবেই তারা Without any ‘ পরিশ্রম ‘ — এসব ওয়েবসাইট চালিয়ে যাচ্ছে।

বাস্তবিক অর্থে, এই জিনিসগুলো অবশ্যই ভালো না। এগুলো করা যাবে না। এই কন্টেন্ট গুলোতে অসংখ্য ফ্ল্যাপ রয়েছে এবং এগুলোর ভেতর ইনফরমেশনেও অনেক ভুল রয়েছে। এ কারণে, এই কনটেন্ট টুল ইউজার ওয়েবসাইটের ভবিষ্যৎ তেমন একটা ভালো হয় না। কারণ, এই ওয়েবসাইট গুলোর ট্রাফিক একটা সময় অনেক বাড়তে থাকে।

তারপরে গুগল যখন বুঝতে পারে যে, এই ওয়েবসাইট AI Content Tool ইউজ করছে তখন ওই ওয়েবসাইটকে গুগল পেনাল্টি দিয়ে দেয়। আর তখনই হঠাৎ করে ওই ওয়েবসাইটের ট্রাফিক একদম নিচের দিকে চলে যায়, ওয়েবসাইটটা ড্রপ খেয়ে যায়।

আবার, এই টুল ইউজ করা সত্ত্বেও অনেক সাইটে দেখবেন যে, কিছু কিছু কীওয়ার্ডের জন্য সাইডটা অনেক র‍্যাঙ্ক করে।

যদিও, ওই সাইটের কন্টেন্টগুলো ভালো হয় না। কারণ, তারা AI Generated Content Tool দিয়ে কনটেন্ট ক্রিয়েট করে। আর, দিস ইজ দা লোয়েস্ট ফর্ম অব কনটেন্ট। এই লোয়েস্ট ফর্ম অব কনটেন্ট থাকার পরেও কিছু কিছু কীওয়ার্ডের জন্য তারা র‍্যাঙ্ক করছে।

তাহলে সেইম কীওয়ার্ড দিয়ে যদি আপনি নিজের একটা অরিজিনাল কনটেন্ট আপলোড করেন তাহলে কেমন হবে?  অবশ্যই আপনার অরিজিনাল কনটেন্টটা গুগলের প্রথম রাঙ্কে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

কারণ, প্রথমে ওই কীওয়ার্ড নিয়ে AI Generated Tool দিয়ে লেখার পরেও যেহেতু র‌্যাঙ্ক করেছে একই কীওয়ার্ড নিয়ে যদি কোনো রাইটার একটা ভালোমানের লেখা আপলোড করে অবশ্যই তার মান এবং র‌্যাঙ্ক— দু’টোই AI Content এর চেয়ে এগিয়ে থাকবে। 

একটা উদাহরণ দেই

ধরুন আপনার গার্ডেন রিলেটেড একটা সাইট রয়েছে। আরো একটা সাইট দেখলেন যেটাও গার্ডেন রিলেটেড কিন্তু তারা AI Content Tool ব্যবহার করে কনটেন্ট আপলোড করে। এক্ষেত্রে, তাদের সাইটের লিংক টা যে কোনো keyword Resource Store এ দিতে পারেন।

Dive deeper into Content Writing by checking out this article. 2023 সালে যেভাবে গুগলে র‌্যাংকের জন্য Product Roundup আর্টিকেল লিখতে হবে!

তারপরে দেখবেন যে, তাদের কোন পেইজের, কোন কীওয়ার্ড গুলো প্রথমদিকে রেঙ্ক করছে। যেগুলো প্রথমদিকে র‌্যাঙ্ক করছে সেই কীওয়ার্ড গুলোর উপর আরো রিসার্চ করে আপনি সেটার ওপর আরো ভালো অরিজিনাল কনটেন্ট আপলোড করতে পারেন।

এতে দেখা যাবে, তাদের কন্টেন্টের অবস্থা খুবই বাজে হওয়া সত্ত্বেও তাদের পেজ অনেক উপরে র‌্যাঙ্ক করছে সেহেতু আপনার অরিজিনাল কনটেন্ট অবশ্যই তাদের উপরে অবস্থান করবে।

তারমানে আপনি যদি র‌্যাঙ্ক করা কোনো কনটেন্টের ( যেটা AI Content Tool  দিয়ে লেখা হয়েছে)  কীওয়ার্ড নিয়ে অরিজিনাল কনটেন্ট লেখেন তাহলে ওই র‌্যাঙ্ক করা সাইটকে বিট করে তাদের উপরে চলে যেতে পারবেন!

তাহলে এ আই কন্টেন্টের ভবিষ্যৎ কি?

আশা করা যায়, এখনকার চেয়েও পরবর্তীতে এ আই কন্টেন্টের ভবিষ্যৎ আরো ভালো হবে। কারণ, পরবর্তীতে এটি আরো উন্নত হবে। এর যত ভুল ত্রুটি আছে সেগুলো শোধরানো হবে।

কিন্তু, এখন যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় ব্যবহার করা কোন বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এ ব্যাপারে গুগলও বলেছে, তারা যদি বুঝতে পারে কোনো ওয়েবসাইট এআই জেনারেটেড কনটেন্ট আপলোড করে তাহলে সেই ওয়েবসাইট কে তারা পেনাল্টি দেবে।

এটাও একটা গুরুতর সমস্যা সুতরাং এখনই এ আই কন্টেন্টের উপরে ভরসা না করে নিজের কনটেন্ট নিজেই লিখুন অথবা কনটেন্ট রাইটার হায়ার করে লিখিয়ে নিন, নিরাপদ থাকুন।

Similar Posts

One Comment

  1. আপনি যেহেতু বললেন AI Contnet tool গুলো ভবিষ্যতে আরো বেশি আপগ্রেড হবে। তো কেউ যদি ভবিষ্যতে কন্টেন্ট রাইটিং কে নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চায় এইটা কতোটুকু বুদ্ধিমানের কাজ হবে?? আর কন্টেন্ট রাইটারদের চাহিদাই বা কেমন থাকবে যখন AI content tool অনেক বেশি আপগ্রেড থাকবে??

Comments are closed.