ব্লগিং করে ইনকাম কীভাবে করা যায়?

প্রথম প্রথম ব্লগিং এর কথা শুনলে অনেকেই জানতে চায়—  ব্লগিং করে কিভাবে টাকা পয়সা ইনকাম করা যায়! 

এই লেখাটি একদম বিগিনারদের জন্য, যারা সবে মাত্র ব্লগিংয়ের নাম শুনেছেন এবং জানতে চান কিভাবে ব্লগিং করে টাকা পয়সা ইনকাম করা যায়।

যারা ব্লগিং করে তাদেরকে যদি প্রশ্ন করা হয় যে, ” আপনি কি করেন, কি কাজ করেন? ” তাহলে সে অবশ্যই একটা আনকম্ফোর্টেবল সিচুয়েশনের মধ্যে পড়ে যায়।  

এর কারণ- প্রথমত, ব্লগিংটা অনলাইনের একটা কাজ।  দ্বিতীয়ত, এটাকে একটা টেকনিক্যাল কাজ বলা যায়। এক্ষেত্রে যদি ব্লগার উত্তর দেয় যে- ” আমি ব্লগিং করি” 

তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ এটা বুঝতে চায় না। 

এজন্য অনেক ব্লগাররা টেকনিক্যালি উত্তর দেয় যে, ” আমি অনলাইনে বিজনেস করি অথবা অনলাইনে কাজ করি” উত্তর শুনে অনেকে আবার এটাকে ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে ধরে নেয়। 

আবার অনেকে যখন শোনে যে, আপনি ব্লগিং করেন এটাকে সে অপরাধ হিসেবেও ধরে নেয়।  অনেক ক্ষেত্রে সে হয়তো শুনেছে ব্লগারদের পুলিশ পেটায়! অনেক নিউজ, লেখা প্রকাশিত হয়ে এসেছে অতীতে এ নিয়ে তাই!

কিন্তু ব্লগিং মানেই যে অপরাধ বা উল্টাপাল্টা লেখা, তা কিন্তু না।  ব্লগিং করলেই যে পুলিশ এসে ধরবে, তা নয়! বরং এটা দিয়ে যে ইনকাম করা যায়, এই ব্যাপারটা অধিকাংশ মানুষই জানে না। আবার অনেকে ভাবতেই পারে না যে- ব্লগিং করে ইনকাম করা যায়!

আপনি যদি ব্লগ সম্পর্কে জানতে চান বা ব্লগার হয়ে থাকেন এবং এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হন তাহলেও প্রশ্নকর্তাকে এই লেখাটির লিংক পাঠিয়ে দিন এক্ষুনি! 

ব্লগ কী! 

ব্লগ হলো সিম্পল একটা ওয়েবসাইট। আমরা যেমন গুগলে গিয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে যাই, ব্লগও হল তেমনি একটা সাধারণ  ওয়েবসাইট।

এর প্রাইমারি ফাংশন হলো, একটা ব্লগ যে টপিকের উপরে বানানো হয় সেই ব্লগে ওই টপিকের উপর অনেকগুলো আর্টিকেল সাজানো থাকে।এর একেকটা আর্টিকেলকে বলা হয় ” ব্লগপোস্ট “।  এখান থেকে ব্লগিং কথাটা এসেছে।

ব্লগিংয়ের প্রথম ধাপ; টপিক সিলেকশন:

ধরুন, আপনি চাচ্ছেন যে একটি ব্লগ বানিয়ে আয় করবেন। এর প্রথম স্টেপ হলো আপনাকে একটা টপিক সিলেক্ট করতে হবে যে, আপনি কিসের উপর ব্লগ বানাতে চান। 

জিনিসটা অনেকটা এরকম যে, আপনি রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে আপনাকে প্রথমে সিলেক্ট করতে হবে , আপনি কোন ধরনের খাবার খেতে চান।  হতে পারে ইন্ডিয়ান কুইজিন, ইংলিশ কুইজিন, বাঙালি খাবার অথবা যে কোন কিছু! কিন্তু আপনাকে আগে সিলেক্ট করতে হবে। 

এভাবেই আপনাকে প্রথমে সিলেক্ট করতে হবে যে, আপনি কোন ব্যাপার নিয়ে লিখতে চান। কোন ব্যাপার নিয়ে ব্লগ খুলতে চান। 

যেমন, আমার নিজেরই একটা ওয়েবসাইট আছে The Turtle Hub  যেখানে আমি টার্টেল দিয়ে কথা বলি। অর্থাৎ এখানে কচ্ছপ এর আদি-অন্ত নিয়ে আমি আর্টিকেল পাবলিশ করি।  আরেকটা ব্লগ আছে যেখানে আমি একুরিয়াম নিয়ে কথাবার্তা বলি।  আবার আরো একটা ব্লগ আছে যেখানে হোম অফিস নিয়ে আর্টিকেল পাবলিশ করি।

কিন্তু, আপনার যে এগুলো নিয়েই কাজ করতে হবে তা কিন্তু না! আপনার এগুলো ভালো নাও লাগতে পারে। আপনার মনে হল যে আপনার গার্ডেনিং খুবই পছন্দ। সুতরাং, আপনি গার্ডেনিং নিয়ে আর্টিকেল পাবলিশ করবেন গার্ডেনিং নিয়ে ব্লগিং করবেন।

দ্বিতীয় ধাপ; ব্লগ বানানো:

যেকোনো ওয়েবসাইট বা ব্লগ বানানোর জন্য দু’টো জিনিস লাগে—  

  • এক, ডোমেইন নেম। 
  • দুই, হোস্টিং।

ডোমেন নেইম হলো —  google.com,  facebook.com অথবা youtube.com। এগুলো এক একটা ডোমেইন নেইম। 

ডোমেইন নেইমের ব্যাপারটা হলো, আপনি যদি কোনো একটা রেস্টুরেন্ট খোলেন, অবশ্যই সেটার একটা নাম দিতে হবে।  আপনি একটা দোকান করলে সেটার একটা নাম দিতে হবে। কারণ দোকানের নামে ওই দোকান বা রেস্টুরেন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। নাহলে তো আপনি বিজনেস করতে পারবেন না!

এভাবে ব্লগ বানালেও একটা ডোমেইন নাম কিনতে হবে এবং প্রতিবছরই এটা রিনিউ করতে হবে। 

হোস্টংয়ের ব্যাপারটা হলো- রেস্টুরেন্ট অথবা দোকান করতে গেলে আপনার কিন্তু একটা জায়গা ভাড়া নিতে হবে। রেস্টুরেন্টটা অবশ্যই আপনি আকাশে করতে পারবেন না। এজন্য একটা জায়গা দখল করতে হবে,  হয় ভাড়া দিয়ে অথবা কিনে। 

এমনই আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ বানাতে গেলেও আপনার একটা জায়গা লাগবে। এই জায়গাটাকে বলা হয় – হোস্টিং। 

হোস্টিং এমন একটা জায়গা বা সার্ভার, যেখানে আপনি আপনার পাবলিশ কৃত  ব্লগপোস্ট, আর্টিকেল এগুলো রাখবেন। আপনার এই জায়গাটারও ভাড়া দিতে হবে, প্রতি বছর রিনিউ করতে হবে।

সুতরাং আপনি একটি ডোমেইন নেইম কিনলেন, একটি হোস্টিং ভাড়া নিলেন। তাহলেই আপনি একটা ব্লগ বানাতে পারবেন। 

যেহেতু সিম্পল ওয়েবসাইট বানানোর জন্য কোনো কোডিং করা লাগে না, এজন্য সিম্পল একটা ওয়েবসাইট আপনি কোন রকম কোডিং ছাড়াই ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই বানাতে পারবেন, শুধুমাত্র ডমেইল মেইন এবং হোস্টিং ভাড়া কর! 

কীওয়ার্ড রিসার্চ :

ধরুন, আপনি ব্লগের টপিক সিলেক্ট করেছেন যে, আপনি গার্ডেনিং নিয়ে ব্লগিং করবেন।  আপনার আর্টিকেল গুলোর আলাদা আলাদা টপিক থাকবে। অর্থাৎ আপনাকে গার্ডেনিং এর বিভিন্ন টপিক নিয়ে আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে এবং সেই টপিকগুলো আপনার সিলেক্ট করতে হবে। 

যেমন, একটা টপিক হতে পারে যে – ” আপনার বাসার ভেতরে কিভাবে টমেটোর গাছ বড় করবেন” অথবা হতে পারে যে, “কিভাবে ছাদবাগান করা যায়”,” ছাদ বাগানে কিভাবে সবজি লাগানো যায়” ইত্যাদি।  

Explore more about Blogging with this related post. ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, যা প্রতিটি ব্লগারের ফলো করা উচিত! 

এমন বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল হতে পারে। এই যে টপিক গুলোর কথা বলা হলো, ব্লগিং এর ভাষায় এটাকে বলা হয় “কী-ওয়ার্ড”। এবং এই টপিক গুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা, পড়াশোনা করাটাকে বলা হয় কী-ওয়ার্ড রিসার্চ করা।  

এখন আপনি সিলেক্ট করলেন, ” কিভাবে ছাদ বাগান করা যায়”  এটা হল আপনার একটা কী-ওয়ার্ড।  এরপরে এই কী-ওয়ার্ডের আন্ডারে আপনার বিশাল একটা আর্টিকেল লিখতে হবে।

একটু ভালো করে বোঝার জন্য, আপনি কোনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে হয়ত বাঙালিয়ানা খাবার পছন্দ করলেন। কিন্তু, বাঙালিয়ানা খাবার বলতে যে শুধু ভাত মাছ ডাল— তা কিন্তু না! বাঙালিয়ানা খাবারের মধ্যে অনেক রকমের খাবার, অনেক পদের খাবার হতে পারে। 

আপনি তো আর সবকিছু একবারে খাবেন না। আপনাকে এখানে খাবারের পদ পছন্দ করতে হবে, তারপর অর্ডার করতে হবে। এই খাবারের পদ গুলোকে আপনি কিওয়ার্ডের সাথে তুলনা করতে পারেন।

এভাবে ধরুন, আপনি ৫০ টা কিওয়ার্ড সিলেক্ট করলেন। এখন এই ৫০ টা কী-ওয়ার্ডের উপর আপনার 50 টা আর্টিকেল লিখতে হবে।  

আর্টিকেল লেখার উদ্দেশ্য :

আমরা যখন ব্লগিং করি তখন আমাদের মেইন টার্গেট থাকে একটা।  এই একটা টার্গেট পরিপূর্ণ না হলে ব্লগিং করে কোন লাভ নেই। 

টার্গেটটা হলো, আপনি যে কী-ওয়ার্ডের ওপরে আর্টিকেল লিখবেন, সে কী-ওয়ার্ড টা লিখে যদি কেউ গুগলে সার্চ করে, তাহলে যেন আপনার আর্টিকেলটা সবার উপরে আসে।  

যেমন আপনি যদি একটা আর্টিকেল লিখেন যে, “কিভাবে ছাদ বাগান করা যায়”। এখন যদি কেউ এটা জানতে চায় এবং এটা লিখে গুগলে সার্চ করে, তাহলে যেন আপনার আর্টিকেলটা সবার উপরে আসে — এমনভাবে ওই আর্টিকেলটা লিখতে হবে। 

আপনি নিজেই বুঝুন, যখন আপনি কোনো কিছু গুগলে সার্চ করেন, অবশ্যই প্রথমে যে রেজাল্টটা আসে সেই পেইজেই ক্লিক করেন অধিকাংশ সময়। 

আমরা কখনই প্রথম রেজাল্টটা বাদ দিয়ে দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ রেজাল্টটা দেখি না।  বা সেটার উপর তেমন একটা ভরসাও করতে পারি না, যতটা ভরসা করতে পারি প্রথম রেজাল্ট এর উপরে! 

এজন্য আপনার আর্টিকেল লেখার সময় প্রথম টার্গেট হবে, যেন মানুষজন আপনার আর্টিকেলটা পড়ে আপনার ওয়েবসাইটে আসে। এজন্য এমন ভাবে আর্টিকেলটা লিখতে হবে যাতে ওই আর্টিকেলটা প্রথম দিকের র‌্যাংক করে।

এখন আপনি ৫০ টা আর্টিকেল লিখলেন। এই ৫০ টার মধ্যে ৪০ আর্টিকেল র‌্যাংক করলো। বাকি দশটা করলো না।  এতেও আপনার লাভ! 

আপনার যে কোন একটা কী-ওয়ার্ড মানুষ দিনে গড়ে ৫০০ বার সার্চ করে। এখন এই ৫০০ মানুষের মধ্যে ৫০ % বা ৬০%  মানুষ আর্টিকেল পড়ার পরে আপনার ওয়েবসাইটে যাচ্ছে। 

একটা আর্টিকেল দিয়ে যদি পঞ্চাশটা মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে আসে, এমন করে ৪০ টা আর্টিকেল থেকে কতগুলো মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে আসবে ভাবুন তো!  

এই যে মানুষজন আপনার আর্টিকেল পড়তে গিয়ে ওয়েবসাইটে ক্লিক করছে,, আপনার ওয়েবসাইটটা ভিজিট করছে— এই মানুষজনের ভিজিট করাটাকে ব্লগিংয়ের ভাষায় বলা হয় ” ট্রাফিক আসা “। এই ট্রাফিক মানে রাস্তার ট্রাফিক না এটার মানে হচ্ছে যে, ওয়েবসাইটে মানুষজন আসছে।

যদি আপনি দেখেন আজকে আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক ৫০০০, তারমানে আপনার ওয়েবসাইটে পাঁচ হাজার জন মানুষ আজকে ভিজিট করেছে। এই যে মানুষজন আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করছে এখান থেকে মূলত মূল খেলাটা শুরু!  

এটাকে ধরতে পারেন যে, আপনি একটা রেস্টুরেন্ট খুলেছেন। সেখানে মানুষজন আসছে, ভিড় করছে। রেস্টুরেন্টে যদি কাস্টমার আসে অবশ্যই সেখানে আপনার একটা ইনকাম হবে। তেমনি আপনার ওয়েবসাইটে মানুষ আসলে এখান থেকেই আপনার ইনকামটা শুরু হবে!

আর্টিকেল দিয়ে ইনকাম :

ওয়েবসাইট দিয়ে ইনকাম করার অনেক উপায় আছে। যেমন-

অ্যাডভার্টাইজ দেয়া :

এক্ষেত্রে আপনাকে কোন একটা কোম্পানির কাছে যেতে হবে এবং তাদেরকে গিয়ে বলতে হবে যে, “আমার ওয়েবসাইটে আপনাদের প্রোডাক্টের এড দিতে চাই”। 

এতে আপনি যখন আপনার আর্টিকেলে ওই কোম্পানির এড দেবেন তখন মানুষজন যখন আপনার আর্টিকেলটা পড়বে, তারা ওই কোম্পানির Ad টা দেখবে। এর বিনিময়ে ওই কোম্পানি আপনাকে একটা  নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেবে। 

ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রেই এই কোম্পানিটা হয়, ” Google Adsense “।  যেটা হলো একটা Ad Management কোম্পানি, যেটা গুগলের একটা শাখা।

এজন্য আপনাকে Google Adsense এ একটা একাউন্ট খুলতে হবে। এখান থেকে Ad নিয়ে তারপরে আপনার ওয়েবসাইটে দিতে হবে।  এরপরে Google Adsense  আপনাকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেবে।

আপনার ওয়েবসাইটে যদি এর পরে ১০০ মানুষ আসে, এই ১০০ মানুষের জন্য যত টাকা দিবে, যদি ৫০০০ মানুষ আসে তাহলে পাঁচ হাজার মানুষের জন্য ও সেই অনুপাতে আরো বেশি টাকা দেবে। 

সুতরাং যত বেশি ট্রাফিক বাড়বে, Ad থেকে আপনার ইনকামের পরিমাণটাও তত বাড়বে। বিনিময়ে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেবে। 

Explore more about Blogging with this related post. ব্লগ পাবলিশ করার জন্য বেস্ট সময় কখন! 

এই টাকাটা কোথায় জমা হয়? 

এই টাকাটা মূলত জমা হয়, আপনার Google Adsense এর একাউন্টে। Google adsense  ছাড়াও আরো অনেক কোম্পানি আছে যাদের এডভারটাইজার হিসেবে আপনি কাজ করতে পারেন।

আপনি যদি অন্য কোনো কোম্পানির এডভার্টাইজার হিসেবে কাজ করেন তাহলে, সেই কোম্পানির টাকা জমা হবে ওই কোম্পানিতে আপনার যে একাউন্ট আছে সেখানে। 

এরপর আপনি যখন ইচ্ছা তখন ওই অ্যাকাউন্ট থেকে আপনার নিজের দেশের কোন অ্যাকাউন্টে ডলারটা উইথ ড্র করতে পারবেন। এভাবে আপনি ডলার থেকে টাকাটা পাবেন। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং :

আর্টিকেল দিয়ে ইনকাম করার আরেকটি পন্থা হচ্ছে, এফিলিয়েট মার্কেটিং করা। ধরুন, আপনি একটা আর্টিকেল লিখলেন যে- ” ঘরের ভেতর কিভাবে টমেটো গাছ বড় করা যায়”। 

সেখানে আপনি এমন একটা টবের কথা উল্লেখ করলেন যেটায় টমেটো গাছ লাগালে ভালো হয়। এই যে টবটার গুণগান করলেন, এর পাশাপাশি আপনি একটা অ্যাফিলিয়েট লিংক দিয়ে দিতে পারেন।  বলতে পারেন যে, এই টনটা খুবই ভালো, তুমি চাইলে amazon এর এই লিংকে গিয়ে এই টবটা কিনতে পারো। সেখানে আপনি এই প্রোডাক্টের লিংকটা এড করে দিবেন।

এইযে আমাজনের হয়ে মার্কেটিংটা করলেন, এতে টবের যে টোটাল প্রাইস সেখান থেকে একটা নির্দিষ্ট পার্সেন্ট কমিশন আপনাকে দেবে। 

যদি এখান থেকে আপনাকে ১০% কমিশন রেট ধরে টাকা দেয়, তাহলে টবের দাম ১০০ টাকা হলে আপনি পাবেন ১০ টাকা। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সুবিধা হলো, আপনার কোনো প্রোডাক্ট নিজের কিনতে হবে না, বেচতে হবে না, বানাতে হবে না। এসব কিছুই করতে হবে না। শুধু আপনি মার্কেটিং করবেন। আপনার সুবাদে কেউ প্রোডাক্ট কিনলে সেই প্রোডাক্টের প্রাইস থেকে একটা কমিশন পাবেন। 

লিড জেনারেশন করা:

তিন নাম্বার পন্থা হতে পারে লিড জেনারেশন করা। যদিও এটা সব ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য না। ধরুন আপনার একটা গাড়ির ওয়েবসাইট আছে।  যেখানে গাড়ি নিয়ে কথাবার্তা লিখে থাকেন। 

ওই ওয়েবসাইটে একটা ফর্ম রাখতে পারেন এমন যে, কেউ যদি গাড়ি কিনতে চায় তাহলে যেন সে ওই ফর্মে তার নাম এবং কন্টাক্ট নাম্বার, ই-মেইল, সে কোন গাড়ি কিনতে চায় এসব তথ্য দিয়ে রাখে।  এতে সে যে গাড়িটা কিনতে আগ্রহী, আপনি সেই গাড়িটা যে ডিলার কম দামে বিক্রি করবে তার সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন। 

কেউ একটা গাড়ি কিনতে চাইলো, সে আপনার রাখা ফর্মে নিজের নাম, ই-মেইল, সে কোন গাড়ি কিনতে চায় এসব তথ্য লিখে সাবমিট করলো। এইযে আপনাকে তথ্য গুলো দিলো, এটাকে বলা হয় “লিড”।

এরকম ১০০০ মানুষ আপনাকে লিড দিলো। কিন্তু, আপনার তো কোনো গাড়ির ব্যবসা নেই। এখন ধরুন এই লিড নিয়ে আপনি কাকরাইলে গেলেন। সেখানে গিয়ে একটা গাড়ির কোম্পানির মালিকের সাথে কথা বললেন যে, 

“আমার কাছে এই ১,০০০ টা লিড আছে। এই ১,০০০ মানুষ গাড়ি কিনতে চায়। তুমি চাইলে এই লিড গুলো আমার থেকে কিনতে পারো। বিনিময়ে প্রতিটা লিডের জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা তুমি আমাকে দেবে। “

কিন্তু, গাড়ির মালিক আপনার থেকে টাকা দিয়ে মানুষের ইনফরমেশন কেন কিনবে? 

কারণটা খুবই সহজ। এইযে ১,০০০ মানুষ লিড দিলো, এরা কিন্তু খুবই ওয়ার্ম অডিয়েন্স। তাদের জন্য গাড়ির মালিকের এক্সট্রা কোনো মার্কেটিংয়ের ঝামেলা পোহাতে হবেনা। 

এই মানুষ গুলো গাড়ি কেনার জন্য একদম প্রস্তুত।  সুতরাং কিছু কথাবার্তা বলে ডিল করলেই গাড়ির মালিকের ব্যবসা রমরমা। সেখান থেকে একটা মানুষ যদি  গাড়ির মালিককে একলাখ প্রোফিট দিয়ে একটা গাড়ি কিনে, সেই একলাখ টাকা দিয়ে গাড়ির মালিক আপনাকে একটা লিডের বিনিময়ে একহাজার টাকা দিতেই পারে। 

আবার, আপনি কেন লিড বিক্রি করবেন?

এর কারণটাও সহজ- আপনার নিজের গাড়ির ওয়েবসাইট ঠিকই আছে, কিন্তু আপনার কোনো গাড়ির কোম্পানি নেই। এজন্য লিড বিক্রি করাটা হবে আপনার একটা ইনকাম সোর্স। 

এই ইনকামটা করার জন্য আপনার নিজের কোনো গাড়ি কেনা লাগছে না, সেল করা লাগছে না, কাস্টমার ডিল করা লাগছে না, কোনো প্রকার ঝামেলা বাদেই ইনকাম হচ্ছে। অর্থাৎ লিড কেনাবেচায় দু’ পক্ষেরই লাভ হচ্ছে। এই লিড কেনা-বেচা করাটাকেই বলা হয় ” লিড জেনারেশন “।

এই হলো ব্লগিং করে ইনকাম করার কিছু পন্থা। এটা একদমই বিগিনারদের জন্য একটা লেখা। ব্লগিং করে আরো টেকনিক্যালি অনেক ভাবে ইনকাম করা যায়। আপাতত, আপনি বিগিনার হলে এটুকুই জানুন অথবা ” ব্লগিং করে আবার ইনকাম করা যায় না-কি!” বলা প্রশ্নকর্তা বন্ধুটিকে আর্টিকেলটি পাঠিয়ে দিন! 

Similar Posts