বাসায় বসে কাজ করার সময় এই ৫টি অভ্যাস আপনাকে অনেক সাহায্য করবে! 

আমরা অনেকেই ঘরে বসে কাজ করি, করতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করি। কিন্তু, ঘরে বসে কাজ করতে গিয়ে কাজের যথাযথ পরিবেশ পাওয়া মুশকিল। কিন্তু, কিছু অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে ঘরটাকেই অফিস বানিয়ে ফেলতে পারবেন নিজের কাছে। চলুন কিছু টিপস অ্যান্ড ট্রিকস জেনে আসি!

1.Use the Strategy of Safeguards :

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লেখালেখির কাজ সাধারণত বাসায় বসে করা উচিত না। এজন্য আপনার উচিত, আপনার লেখার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন- ল্যাপটপ, মোবাইল ইত্যাদি নিয়ে বাসার কাছে কোনো লাইব্রেরিতে চলে যাওয়া।

লিখুন, কাজ করুন। অযথা ইন্টারনেট কানেক্ট করবেন না। এটা আপনাকে সেল্ফ কন্ট্রোলে সাহায্য করবে। অনেকে বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে, যেসব সফটওয়্যার ইউজ করে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইন্টারনেট, অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ এসব রেস্ট্রিকটেড করে রাখা যায়। 

আপনার অমনোযোগী হওয়ায় কোন ব্যাপারটা দায়ী, তা খুঁজে বের করুন। যেভাবেই হোক, সেখান থেকে বেরিয়ে আসুন। 

2. Use the Strategy of Scheduling:

আমরা অনেক সময় আলসেমির জন্যে ইম্পর্ট্যান্ট কাজ গুলো সাইডে রেখে অযথা কাজে সময় ব্যয় করি বেশি। যে কাজটা আগে করা দরকার, যে কাজটা মনোযোগ দিয়ে করা দরকার, সেটা না করে অপ্রাসঙ্গিক কাজে মন দিই। 

এতে কাজের কাজ কিছুই হয়না। এজন্য — আপনার কাজের একটা Schedule বানিয়ে ফেলুন। ইম্পর্ট্যান্ট কাজ গুলো শুরুতে রাখুন। বড় কাজ গুলো আগেভাগে সেড়ে ফেলুন। এতে হালকা লাগবে। 

একটা কাজ করার সময়ে আরেকটা কাজে হাত দেবেন না। যেমন, আপনি হয়ত একটা আর্টিকেল লিখছেন, এরমধ্যে গিয়ে হয়ত মনিটরে একটা ময়লা দেখে লেখা ফেলে ধোঁয়া মোছায় মনযোগী হয়ে গেলেন। হতে পারে, লেখার সফটওয়্যার থেকে বেরিয়ে ফেসবুকে একটা পোস্ট করার জন্য ঢুকলেন। একটা ছবি তুলতে গেলেন— এগুলো একদমই করা যাবেনা।  

যখন কাজ করতে মনে চাইবে না, তখন দরকার হলে আপনার সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে থাকুন। ব্রেক নিন। কিন্তু অন্য কাজে হাত লাগিয়ে, অন্যমনস্ক করে দেবে এমন কাজ হতে বিরত থাকুন। 

3.Use the Strategy of Foundation: 

কাজের জন্য ব্রেইন সতেজ রাখা জরুরি, ব্রেইনের জন্য শরীর। গোঁড়ায় গিয়ে আপনাকে ঠিক রাখতে হবে সবকিছু।  এজন্য এক্সারসাইজের বিকল্প নেই।  

জিমে যান, ইয়োগা ক্লাস করুন অথবা Strength-training সেশন নিন। দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে অল্প হলেও হাঁটুন।  গবেষণায় প্রমাণিত — Focused, Energized থাকার জন্য এক্সারসাইজের বিকল্প নেই। 

এ নিয়ে Nietzsche বলেছে— “All truly great thoughts are conceived by walking.” 

সো, সারাদিন ফোকাসড থাকতে আধাঘন্টা হলেও একটু হাঁটা হয়ে যাক!

4.Use the Strategy of Monitoring:

প্রতি সপ্তাহে কয়টা পোস্ট করছেন? প্রতিদিন লিখছেন তো? প্রতিদিন লেখার বেশ ভালো ফলাফল আছে। যখনই আপনি কোনো কাজ করবেন দীর্ঘমেয়াদি, সেটা প্রতিদিনের কাজ বানিয়ে ফেলুন।

আপনি সকালবেলা উঠে প্রতিদিন ব্রাশ করেন, আপনার ব্রেকফাস্ট, আপনার শাওয়ার— এসব যেমন প্রতিািনের রুটিন,  লেখাটাও এমন জীবনের একটা অংশ বানিয়ে ফেলুন। 

Discover more interesting content on Blogging by reading this post. ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, যা প্রতিটি ব্লগারের ফলো করা উচিত! 

‘ কালকে পোস্ট করেছি, আজ করবো না। এখন ঘুমাবো, সকালে উঠে করি’ ইত্যাদি চিন্তা ভাবনা আনা যাবেনা। আপনি যখনই কাজের মধ্যে গ্যাপ আনবেন, তখনই আলসেমি লাগবে। শুরু করতে সময় লাগবে। 

5.Use the Strategy of Treats :

বাচ্চারা ভালো রেজাল্ট করলে অনেক বাবা-মা সোজা স্কুল থেকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে যান, বাচ্চাকে ট্রিট দেয়ার জন্য।  শপিংয়ে নেন, মিউজিয়াম অথবা পার্কে নিয়ে যান। এতে বাচ্চাটা পরে আরো ভালো রেজাল্ট করার জন্য উৎসাহ পায়। 

আপনি নিজেও নিজের কাছে একটা বাচ্চা। আপনার নিজেকে নিয়ে করার আছে অনেক কিছু।  একঘেয়ে কাজ না করে, কাজটাকে ইনজয় করুন। এজন্য নিজেকে ট্রিট দেয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। 

যখনই বড় কোনো টাস্ক কমপ্লিট করবেন, নিজেকে ট্রিট দিন। পছন্দসই কিছু করুন। যখন নিজেকে কিছু দেবেন, নিজের কাছ থেকেও ফেরত পাবেন।  

আপনি যদি পড়তে পছন্দ করেন, তাহলে নিজের আনন্দের জন্য লেখার চেয়ে পড়ার পেছনে সময় বেশি দিন।  এই পড়াটা আপনার কাছ থেকে সময় নিলেও, আপনার লেখার জন্য ফিরিয়ে দেবে শত-শত আইডিয়া। যা আপনার ব্লগিং জার্নি সহজ করে তুলবে!

BONUS 

একটা বাড়তি স্ট্রাটেজি শেয়ার করা যেতে পারে, যা অনেকের দরকার হয়।  এটা হচ্ছে – Strategy of Accountability।  

অনেকেই তার ক্লায়েন্ট বা পাঠকের এক্সপেকটেশন বোঝেন। সেভাবে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু, নিজেকে বুঝতে হিমশিম খান। নিজেকে হারিয়ে ফেলেন। 

অন্যের দায়িত্ব বোঝার পাশাপাশি নিজের দায়িত্ব নেয়ার জন্য কিছু কাজ করা যেতে পারে।  যেমন— 

  • Accountability Group: একটা গ্রুপ বানিয়ে ফেলুন। একে অপরের ট্র্যাক রাখুন। 
  • Coach: কোচও হায়ার করতে পারেন আপনাদের গ্রুপের জন্য। কোচের কাজ হবে, সবার প্রোগ্রেস চেক করা, গাইড করা।
  • Client: ক্লায়েন্টও এক্ষেত্রে হেল্পফুল হতে পারে। 
  • Accountability Buddy: গ্রুপ খুলতে না পারলেও একটা বিশ্বস্ত বন্ধু বানিয়ে ফেলুন, যে প্রতিদিন আপনার প্রোগ্রেস চেক করবে!

সবকিছু মিলিয়ে— আগে নিজেকে জানুন, নিজেকে বুঝুন, পরিস্থিতি অনুযায়ী প্ল্যান করুন, প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করুন!

আপনি যদি এ ব্যাপারে আরো জানতে চান, অভ্যাস কিভাবে আপনার জীবন সহজ, সুন্দর এবং প্রোডাক্টিভ করে তুলতে পারে—  তাহলে আমেরিকান রাইটার ‘ Gretchen Rubin ’ এর লেখা বই ‘ Better Than Before ’ পড়তে পারেন। বুঝতে পারবেন, অভ্যাস বদলানো বেশ একটা কঠিন কাজ না। ঠিক করতে পারবেন, নিজেকে ভালো রাখতে কখন কোন কাজটা করা উচিত! 

Similar Posts