ফ্রীল্যান্স কন্টেন্ট রাইটিং কী? কিভাবে করবেন?

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং জগতে আয় করার জন্য যতগুলো পন্থা আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো ” ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটিং”। লেখালেখি করার মাধ্যমে আপনি কীভাবে মার্কেটপ্লেস থেকে উপার্জন করতে পারবেন তা নিয়েই আমাদের আজকের আলোচনা।

ফ্রিল্যান্সিং জগতে কনটেন্ট রাইটিং অনেক বিস্তৃত একটি শাখা। একটি গাছ যেমন আকাশ জুড়ে অসংখ্য ডাল-পালা ছড়িয়ে মাটির উপর দাঁড়িয়ে থাকে,ঠিক একই ভাবে অসংখ্য শাখা-উপশাখা নিয়ে কন্টেন্ট রাইটিং সেক্টরও আপনাকে উপার্জনের জন্য একটি শক্ত শেকড়ের সন্ধান দিতে সক্ষম।

এবার মূল আলোচনায় ফিরে আসা যাক। কন্টেন্ট রাইটিং কি, এটি নিয়ে কাজ করতে হলে আপনাকে কি কি করতে হবে তা একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সংক্ষেপে আপনার কাছে স্পষ্টভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করবো আজ।

ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটিং জিনিসটা আসলে কি?

ফ্রিল্যান্সিং জগতে কনটেন্ট রাইটিং সবসময়ই একটি আকর্ষণীয় কাজ হিসেবে প্রচলিত ছিল, বর্তমানেও আছে। কনটেন্ট রাইটিংয়ের জগতে আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ক্যাপশন, ব্লগ পোস্টে লিখে ইনকাম করতে পারেন।

ধরুন আমার একটা ওয়েবসাইট আছে। সেই ওয়েবসাইটের জন্য কন্টেন্ট দরকার। এখন আপনি যদি কন্টেন্ট রাইটিং পারেন, তাহলে আমি আপনাকে হায়ার করে বলবো আমার সাইটের জন্য কন্টেন্ট লিখে দিতে। এর বিনিময়ে আমি আপনাকে টাকা দেবো। এটিই মূলত কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করা।

কিভাবে ফ্রিল্যান্স কনটেন্ট রাইটিং ফিল্ডে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করা যায়?

যেকোনো কাজ করে ইনকাম করার ইচ্ছা থাকলে আমাদের অবশ্যই পূর্ব পরিকল্পনা এবং সঠিক দিক-নির্দেশনা থাকা দরকার। আমি আজকে চেষ্টা করব ফ্রিল্যান্সিং কনটেন্ট রাইটিং নিয়ে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে যাতে আপনারা মার্কেটপ্লেসগুলোতে প্রতিষ্ঠিত লেখক হিসেবে নিজেই নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারেন।

মার্কেটপ্লেস নির্ধারণ করা

আপনি কোন মার্কেটপ্লেসে অর্থাৎ কোন দেশের কোন রিজিওনে কনটেন্ট রাইটিং করতে চান সেটি আপনাকে প্রথমে ঠিক করতে হবে। সেই অনুযায়ী আপনাকে সেই রিজিয়নের পারিপার্শ্বিক অবস্থা বুঝে প্রিপারেশন নিতে হবে। 

সহজ করে বললে, মনে করুন,আপনি বাংলা ভাষায় কনটেন্ট লিখবেন তাহলে আপনার কন্টেন্ট লেখার সীমাবদ্ধতা শুধুমাত্র বাংলাদেশের মধ্যেই থাকবে। কিন্তু আপনি যদি ইংরেজিতে কনটেন্ট লিখতে পারেন, তাহলে আপনি পুরো বিশ্বের যেকোন দেশের কনটেন্ট লিখতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনার মার্কেটপ্লেস অনেক বেশি বিস্তৃত হবে। আপনার জবের ব্যবস্থাও ভালো হবে।

ভাষা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা

আপনি বাংলা অথবা ইংরেজি যে ভাষাতেই কন্টেন্ট লিখুন না কেন আপনি সর্বপ্রথম ভাষার যথাযথ ব্যবহার জানেন কিনা, ব্যাকরণগত সমস্যা আছে কিনা, সেগুলো আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনি যদি ইংরেজিতে কন্টেন্ট লিখতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ইংরেজি গ্রামার সম্পর্কে এবং ইংরেজি কন্টেট কিভাবে লিখতে হয়, কিভাবে সেটাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, কিভাবে মানুষকে আকৃষ্ট করা যায় সেই ব্যাপারে ধারণা রাখতে হবে।

আপনি যদি ইংরেজিতে কন্টেন্ট লিখতে চান তাহলে আপনাকে ইংলিশ গ্রামার, ইংলিশ লিটারেচার বেশি বেশি করে পড়তে হবে যাতে করে আপনি ইংরেজিতে সাবলীল ভাবে লিখতে পারেন ।

আপনি যে দেশের মার্কেটপ্লেসে কাজ করবেন সেখানকার ইংরেজি কেমন, সেখানকার মানুষজন কি ধরনের কন্টেন্ট পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে আপনাকে সেই সাইকোলজি সম্পর্কেও ধারণা রাখতে হবে। তাহলে আপনি ভাষাগত দিক থেকে অনেক বেশি ছাড় পাবেন এবং আপনার কনটেন্ট মানুষ পড়ে আনন্দ পাবে এবং আপনার মার্কেটপ্লেসে ডিমান্ড বেড়ে যাবে।

ইংরেজি ভাষায় ভালো করার জন্য আপনি ইংরেজি খবরের কাগজ, ইংলিশ মুভি, টিভি সিরিয়াল অথবা প্রচুর পরিমাণে ইংরেজি বই পড়তে পারেন। এতে আপনি বাহিরের দেশের বিভিন্ন মানুষের লেখার ধরন সম্পর্কে জানতে পারবেন, তাদের লেখার প্যাটার্ন সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং আপনি এগুলো আপনার নিজের কনটেন্ট এর মধ্যে প্রয়োগ করতে পারবেন।

একটি নিশ সিলেক্ট করা

নিশ বলতে সাধারণত আমরা একটি নির্দিষ্ট টপিককে বুঝিয়ে থাকি। আপনাকে কোনো একটি বিষয়ের সবকিছুর ওপর সমানভাবে জ্ঞান রাখতে হবে ব্যাপারটি কিন্তু এমন নয়। 

ধরুন আপনি এডুকেশনাল কনটেন্ট লিখে থাকেন। কিংবা বিজ্ঞানের জিনিসপত্র বা ফাইন্যান্স এর জিনিসপত্র এগুলো নিয়ে লিখতে আপনি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। এখন আপনাকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে অনেক জটিল জিনিস পত্র লিখতে হবে অথবা ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স নিয়ে নিজ থেকে লিখতে হবে ব্যাপারটা এমন না। 

লেখা শুরু করার আগে আপনার যেই জিনিসটা আদতে জানতে হবে তা হলো কোনো কিছু রিসার্চ কিভাবে করতে হয় তা। আপনাকে প্রথমত কোন একটি নির্দিষ্ট টপিক সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। 

আপনি যা নিয়ে লিখবেন সেই ফিল্ড কিরকম ,অন্যান্য রাইটাররা কিভাবে এর আগে কোন রিসোর্স থেকে লিখালিখি করেছে এগুলো আপনাকে জানতে হবে। 

এরপর ঐ টপিক নিয়ে আপনি লিখে যাবেন, ওই টপিকের ক্লায়েন্টদের কাজে বিড করতে থাকবেন। এভাবে আস্তে আস্তে ওই নিশে রাইটার হিসেবে আপনার একটা শক্ত অবস্থান গড়ে উঠবে।

এবার আমরা কথা বলব আরো কিছু সাধারণ বিষয় নিয়ে যেগুলো যেকোনো নিশ নির্বিশেষে সকল ধরনের কনটেন্ট রাইটারের জানা উচিত। সর্বপ্রথম আপনাকে প্রচুর পরিমাণে বই পড়ার অভ্যাস করতে হবে বা লেখালেখি জগতের ভিতরে ঢুকে থাকার অভ্যাস করতে হবে। আপনি যে ভাষায় লেখেন সে ভাষার বিভিন্ন ব্লগ অনুসরণ করবেন তাহলে আপনি একটা সময়ে গিয়ে আপনার কন্টেন্টের কোয়ালিটি ইম্প্রুভ করতে পারবেন।

কোথায় কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ পাবেন?

এখন কথা বলা যাক কন্টেন্ট রাইটিং এর ভেতর কি ধরনের কাজ আছে। কন্টেন্ট রাইটিংয়ের অনেকগুলো সেক্টর আছে তার মধ্যে কপিরাইটিং, ক্রিয়েটিভ রাইটিং, সিভি রাইটিং, প্রুফ রিডিং, বিভিন্ন ভাষা থেকে ট্রান্সলেশন ইত্যাদি কাজ আপনি করতে পারেন।

আপনি যদি Fiverr, Freelancer, UpWork এর মত ওয়েবসাইটগুলোতে সার্চ দেন কনটেন্ট রাইটিং নিয়ে ,তাহলে আপনি কন্টেন্ট রাইটিং এর উপর অনেক জব পাবেন। যদি আপনি যথেষ্ট পরিমাণ দক্ষ হন এবং আপনার একটি ভালো রকমের পোর্টফলিও থাকে, সেক্ষেত্রে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।

কাজে বিড করার আগে অবশ্যই দেখে নিবেন কাজটা আসলেই আপনি পারেন কিনা। খামোখা বিড করবেন না। যখন আপনি কনফিডেন্ট থাকবেন যে ক্লায়েন্ট যা চাচ্ছে সেটা বুঝেছেন এবং ওভাবে আর্টিকেল লিখতে পারবেন, তখনই বিড করবেন।

যখন ক্লায়েন্ট আপনার কাজের স্যাম্পল চাইবে, তখন আপনার পোর্টফোলিও ক্লায়েন্টকে দেখাবেন। প্রফেশনাল লুকিং একটা পোর্টফোলিও ক্লায়েন্টকে ইম্প্রেস করবে, এতে আপনার কাজ পাবার সম্ভাবনাও বাড়বে।

কনটেন্ট রাইটিং থেকে আপনি কি ধরনের স্যালারি আশা করতে পারেন?

শুরুর দিকে আপনি তেমন বেশি স্যালারি পাবেন না। হয়তো ইন্টারন্যাশনাল সাইটগুলোতে ১০০০ ওয়ার্ডের কাজ ৫-৭ ডলারের রেঞ্জে করতে পারেন। এটা একদম বিগিনারদের জন্য। বাংলাদেশের লোকাল ক্লায়েন্টদের কাজও করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ১০০০ ওয়ার্ডের জন্য পেমেন্ট ৫০০ টাকার মতো হয়ে থাকে।

সময়ের সাথে সাথে আপনার অভিজ্ঞতা যত বাড়বে, তত বেশি আপনি চার্জ করতে পারবেন।

কিভাবে কন্টেন্ট রাইটিং শিখবেন?

চাইলে নিজে নিজে ইংরেজি ব্লগপোস্টগুলা ঘেটে ঘেটে আপনি কন্টেন্ট রাইটিং শিখতে পারেন। তারা কিভাবে লিখেছে সেটা দেখে দেখে শিখতে পারেন । তবে এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

যদি আপনি একটা স্ট্রাকচার্ড গাইডলাইন চান, তাহলে আমার কন্টেন্ট রাইটিং কোর্সটা করতে পারেন

আমার কন্টেন্ট রাইটিং কোর্সে যা যা থাকছেঃ

  • টোটাল কোর্স লেসনঃ ২৫টি
  • কোর্স ডিউরেসনঃ ৬ঘন্টা+
  • রিসোর্স শীট বা চিট শিট (হেডলাইন লিখার টেকনিক)
  • স্পেশাল কমিউনিটি (আমাদের ফেসবুক কমিউনিটি)
  • সাথে থাকছে ইন্সট্রাকটর দের সাথে যেকোনো সময়ে যোগাযোগের সুবিধা।
  • লাইফটাইম এক্সেসঃ কোর্সে একবার জয়েন দেওয়ার পর যেকোনো সময় নিজের ইচ্ছামতো লগ ইন করে আমাদের কোর্স লেসন দেখতে পাবেন। আপনার এক্সেস কখনো সরানো হবে না।
  • ১০০% মানি ব্যাক গ্যারান্টিঃ যদি কোর্সে জয়েন করার পর আপনার মনে হয় এই কোর্সটি নিয়ে আপনি লাভবান হননি বা কিছু শিখতে পারেননি তাহলে আপনি চাইলে মানি ব্যাক পেয়ে যাবেন। তবে এরজন্য কোর্সে জয়েনের ২৪ঘন্টার মধ্যে এই মানি ব্যাক রিকুয়েষ্ট করতে হবে এবং আপনার সম্পুর্ণ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। ২৪ঘন্টা অতিক্রম হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে এই শর্ত কাজ করবে না।
  • সংযুক্ত নতুন ফিচার “প্রাইভেট ফোরামঃ আমাদের কোর্স লেসন দেখার পাশাপাশি যদি কোনো নির্দিষ্ট লেসন নিয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তবে আপনি সেটি প্রাইভেট ফোরামে পোস্ট করতে পারেন এবং সেখানে অন্যান্য সদস্যরাও উত্তর বা মতামত দিতে পারবে। মূলত এখানে একটি আলোচনা হবে সবার মধ্যে।

বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করতে পারেন

Similar Posts