যেভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং করলে গুগল আপডেট আপনার কিচ্ছু করতে পারবে না!

May Core Update 2022 এর পরে অনেক ওয়েবসাইটই ড্রপ খেয়েছে, তা আমরা কমবেশি সবাই ই জানি। কিন্তু কেন এমন হলো তা কী জানি?

যাদের ওয়েবসাইট এমন ড্রপ খেয়েছে তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের ওয়েবসাইটে ৪০%-৫০% কনটেন্টই ছিলো রিভিউ আর্টিকেল।

সো, আপনার ওয়েবসাইটে যদি রিভিউ আর্টিকেলই থাকে অনেকবেশি (হতে পারে ৪০% – ৫০%) সেক্ষেত্রে গুগল আপনাকে পছন্দের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেবে। আপনি যেভাবেই লেখেন না কেন, যত ভালো ভাবেই লেখেন না কেন, আপনার ওয়েবসাইটের ৪০%-৫০% আর্টিকেলই যদি হয় রিভিউ আর্টিকেল, বেস্ট মানি টাইপ আর্টিকেল তাহলে ধরে নিন আপনি রিস্কে আছেন।

তাহলে রিস্ক এড়াতে কি করতে হবে?

৭০%-৮০% ইনফরমেটিভ আর্টিকেল রেখে বাকী ১০/২০% আর্টিকেল রাখুন রিভিউ আর্টিকেল। ইনফরমেটিভ আর্টিকেল বেশি রাখলে অসুবিধে হবে না কারণ আপনি এটা এড দিয়ে মনিটাইজ করতে পারবেন। কিন্তু, বাকী যে ১০% আর্টিকেল লিখবেন সেটাও কিন্তু কিছু নিয়ম মেনে লিখতে হবে। তাহলেই আপনার সাইট টা সেফ থাকবে গুগলের আপডেট থেকে।

কী কী নিয়ম মানতে হবে?

Indirectly Affiliate Marketing:

একটা গল্প বলি। আমাকে USA থেকে একটা কোম্পানি তাদের একটা ব্রেসলেট গিফট করে ওটার রিভিউ লেখার জন্য। ব্রেসলেটটার ওপরে একটা turtle ছিলো এবং সাথে একটা কার্ডও দিয়েছিলো ওরা যেটায় একটা QR Code দেওয়া ছিলো। যেটা মোবাইলে স্ক্যান করার পরে দেখা যায়, ব্রেসলেটটার সাথে যে turtle টা দেওয়া ছিলো ওটার Real Sea Turtle টা পৃথিবীর কোথায় আছে, কি করছে ইত্যাদির একটা লাইভ লোকেশন পেয়ে যাই। বিষয়টা খুবই মজার।

এরপরে আমি এই প্রডাক্টের রিভিউটি যেভাবে লিখি—

প্রথমত, আমার The Turtle Hub সাইটে ঢুকি। আর্টিকেলের টপিক দেই, “Is sea turtle Conservancy Real? What you Don’t know “.  এতে করে আমার আর্টিকেলটি একটা ইনফরমেটিভ আর্টিকেল হয়ে যায়। কিন্তু, আমি নিচেই একটা রিভিউ সেকশন রাখি ওই ব্রেসলেটটার। যেখানে আমার নিজেরই তোলা, যেন দেখলেই মনে হয় আমার ইউজ করা এমন ছবি এড করে দিই এবং ওই QR code স্ক্যান করার পরে যে লোকেশন পাই সেটাও এড করে দিই।

এই ইনফরমেটিভ আর্টিকেলের ভেতর রিভিউ ঢুকিয়ে দেওয়ার বিষয়টাকে বলা হয় “ ইন্ডাইরেক্টলি এফিলিয়েট মার্কেটিং “।

সবসময় যে আপনার রিভিউ বেস্ট টেন, বেস্ট প্রোডাক্ট ইত্যাদি দিয়েই শুরু করতে হবে তা না!

আপনি যে প্রোডাক্ট রিভিউ করবেন সেটা সম্পর্কে হালকা কিছু তথ্য দিয়ে, আর্টিকেলের টাইটেলটি ইনফরমেটিভ দিয়ে পুরো আর্টিকেলের স্ট্রাকচারটাই আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন।

Reusable Block:

রিইউজেবল ব্লক বানানোর বিষয়টা এফিলিয়েট মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে খুবই দরকারী এবং মজার। এতে করে একই প্রডাক্ট সম্পর্কে আরো আর্টিকেল লিখতে গেলে ওই প্রডাক্ট সম্পর্কিত ব্লক আপনার বারবার ক্রিয়েট করতে হবে না। আপনি নতুন একটা আর্টিকেল লিখতে গেলে খুব সহজেই আপনার ক্রিয়েট করা Reusable Block টি অ্যাড করে দিতে পারেন। এতে করে নতুন করে বারবার আপনাকে বিষয়টা ক্রিয়েট করা লাগবে না, সময়ও বেঁচে যাবে।

রিইউজেবল ব্লক বানানোর নিয়মটা ভিডিওতে দেখে নিতে পারেন।

Use your own photos:

ধরুন, আমার মাথার চুল পড়ে একদম টাক হয়ে গিয়েছি। এরপরে আপনি আমাকে একটা তেল ব্যবহার করার জন্য সাজেস্ট করলেন। আপনি বললেন, এই তেলটা এত এত ভালো, এটা ব্যবহার করে অনেকেই ফল পেয়েছে ইত্যাদি। আপনার এত এত কথা শোনার পরেও আমি কিন্তু এটা শিওর হতে চাইবো আপনি নিজে এটা ব্যবহার করেছেন কি-না, আপনার মাথায় চুল গজিয়েছে কি-না।

রিভিউ আর্টিকেলের ব্যাপারটাও সেইম। আপনাকে রিডারদের কাছে, গুগলের কাছে প্রমাণ করতে হবে এই প্রডাক্টটি আপনি ইউজ করেছেন। এজন্য আপনাকে ওই প্রডাক্টের আপনারই তোলা কিছু ছবি শেয়ার করতে হবে। ছবিগুলো এমনভাবে তুলতে হবে যাতে একদম বোঝা যায় এগুলো কোনো কমার্শিয়াল ফটোশুট না, ইউজারের নিজেরই তোলা।

অনেকসময় দেখা যায়, কোনো কোনো কোম্পানি রিভিউয়ারের কাছে প্রডাক্ট পাঠিয়ে তারপর রিভিউ দিতে বলে। তারা চাইলেই ছবি তুলে দিতে পারে।

কিন্তু আপনার বেলায় এমন হলো যে, আপনি নতুন নতুন রিভিউ করছেন, এখনও কোম্পানি নিজ থেকে আপনাকে প্রডাক্ট পাঠাবে এই অবস্থাটা আসেনি।

এক্ষেত্রে ছবি কোথা থেকে কালেক্ট করবেন?

মনে করুন, আপনি একটা কোম্পানির ট্রেডমিলের রিভিউ লিখবেন। কিন্তু ট্রেডমিলটা আপনার কাছে নেই। আপনি সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্য কোথাও ফিটনেস সম্পর্কিত গ্রুপ বা মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারেন। ফেসবুকে বা গুগলে ওই ট্রেডমিল কোম্পানি বা মডেল নেম সার্চ করে অনেক ইউজারের পোস্ট, কমেন্ট বা কোশ্চেন পেয়ে যাবেন। এভাবে যারা যারা প্রডাক্টটি ইউজ করেছে তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে ছবি চেয়ে নেবেন।

যত যা-ই হোক না কেন, কমার্শিয়াল ফটোশুট ব্যবহার না করে ইউজারের নিজের তোলা ছবি রিভিউ আর্টিকেলে ব্যবহার করবেন। এতে রিভিউটি রিডার এবং গুগল, সবাই রিভিউটি পছন্দ করবে।

Cautions on writing reviews:

ছবি যেমন রিয়েল হওয়া চাই লেখাটাও তেমনই হওয়া দরকার। যেন রিডার আপনার লেখা পড়ে বুঝতে পারে প্রডাক্টটি আপনি ইউজ করেছেন। এজন্য একজন ইউজার যেভাবে রিভিউ দেবে ভালো মন্দ মিশিয়ে সেভাবে লেখাই ভালো।

এখন যদি এমন হয় যে, প্রডাক্টটি আপনি ইউজ করেননি এজন্য এর ভালো মন্দ সম্পর্কে ঠিকমত জানেনও না তাহলে অ্যামাজনে এই প্রডাক্টের পেজে গিয়ে নিচে স্ক্রল করে অনেক ইউজারের একচুয়াল রিভিউ পাবেন। সেখান থেকে বেশকিছু রিভিউ পড়বেন। সবগুলো পড়তে হবে এমন নয়।

ফাইভ স্টার, ফোর স্টার ইত্যাদি পড়লেই হবে। ফাইভ স্টার রিভিউ পড়ার পরে প্রডাক্টটি ইউজ করে যারা সুপার স্যাটিসফাইড তাদের মতামত পেয়ে যাবেন। ওয়ান স্টার পড়ার পরে প্রডাক্টের মেজর কোনো ফল্ট থাকলে ওগুলো বুঝতে পারবেন। আবার ফোর স্টার পড়লে দেখবেন, যাদের প্রডাক্টটি ভালো লেগেছে কিন্তু কোনো একটা কারণে একটু সমস্যা হয়েছে তাদের মতামত, সমস্যা জানতে পারবেন।

সো, এগুলো পড়ার পরে আপনার আইডিয়া হবে রিয়েল লাইফে এই প্রডাক্ট নিয়ে মানুষের ধারণা কি, কি কি সুবিধা এবং কি কি অসুবিধা তারা ভোগ করছে। এরপরে তাদের ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজ করেই আপনার রিভিউটি সুন্দর করে সাজিয়ে ফেলতে পারেন।

সো, একটা সাইট সেফ রাখার জন্য প্রথমত আপনাকে রিভিউ কনটেন্টের পরিমাণ কমিয়ে ২০%-১০% এ নিয়ে আসতে হবে।

এরপর ওপরের বিষয়গুলো মাথায় রেখে রিভিউ কনটেন্ট দিলে আশা করা যায় আপনার সাইট সেফ থাকবে। গুগলের আপডেটের কারণে বড়সড় ক্ষতি হওয়ার সম্ভবানাও অনেকাংশে কমে আসবে।

কিন্তু, এতকিছু মেইনটেইন করা যদি আপনার পক্ষে একটু কঠিন হয়ে দাঁড়ায় তাহলেও চিন্তার কিছু নেই। কারণ, Writers Motion আপনাকে এই সবকিছু মেইনটেইন করে একটা রিভিউ আর্টিকেল খুব সুন্দর করে গুছিয়ে দিতে প্রস্তুত। সুতরাং, দেরি না করে আপনার আর্টিকেলের জন্য এখনই যোগাযোগ করতে পারেন Writer’s Motion এ!

Looking for more insights on Blogging? You may find this post valuable. ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, যা প্রতিটি ব্লগারের ফলো করা উচিত! 

Similar Posts