আপনার আর্টিকেল কতটা মানসম্মত — তা বুঝবেন যেভাবে!
আপনি কোনো রাইটারের কাছে আর্টিকেল অর্ডার করলেন, সে লিখেও দিলো।
কিন্তু, আর্টিকেলটা আসলেই কতটা মানসম্মত— সেটা কিভাবে বুঝবেন?
এটা বোঝার জন্য আর্টিকেলের ভেতরে কয়েকটা পয়েন্ট আপনাকে লক্ষ্য করতে হবে। এই পয়েন্টগুলো বাদেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, যেগুলো সব আর্টিকেলে লক্ষ্য রাখতে হয়। তা হলো-
- আপনাকে দেখতে হবে আর্টিকেলটা Copyscape এ পাশ করে কি-না।
- আর্টিকেলে কোন গ্রামাটিক্যাল ভুল আছে কি-না।
এগুলো আপনি Copyscape এবং grammarly দিয়ে চেক করে নিতে পারেন।
এগুলো হচ্ছে বেসিক প্রিলিমিনারি চেক। যা আপনাকে প্রত্যেকটা আর্টিকেলের ব্যাপারে করতেই হবে। এই basic check টা করার পরে আপনাকে মোট 9 টা পয়েন্ট খেয়াল রাখতে হবে— যেগুলো ঠিক থাকলে আপনি বুঝতে পারবেন যে, আপনার আর্টিকেলটি একটি মানসম্মত আর্টিকেল।
পয়েন্ট গুলো হলো—
1. The first line should be related to the topic directly :
আপনি যে আর্টিকেলটা লিখবেন, সেটার টাইটেল এবং প্রথম লাইনের মধ্যে একটা সম্পর্ক থাকতে হবে। অর্থাৎ, একদম শুরুটা যে লাইন দিয়ে করা হয় সেই লাইনেই টাইটেলের একটা আভাস থাকতে হবে।
ধরুন, আপনি আর্টিকেল লিখলেন ” পোষা বিড়ালের খাদ্যাভ্যাস ” সম্পর্কে। এখন শুরুতেই আপনার বিড়ালের খাদ্য সম্পর্কিত কোন ইনফরমেশন দিয়ে আর্টিকেলটি শুরু করতে হবে।
এখানে আপনি বিড়াল দেখতে কেমন হয় বা বিড়াল কত দিন বাঁচে — এসব ইনফরমেশন দিতে পারবেন না। যদি আপনার টাইটেল এর সাথে আর্টিকেল এর প্রথম প্যারাগ্রাফ এর কোন মিল না থাকে, তাহলে রিডারদের অ্যাটেনশন ধরে রাখা যায় না।
মোট কথা- আপনাকে আর্টিকেলটি শুরু করতে হবে টাইটেলের সাথে রিলেটেড চৌম্বক কোনো কথা দিয়ে।
2. Snippet Optimization :
Snippet Optimization অনেক ধরনের হয়। এর মধ্যে Paragraph Type Snippet Optimization, Table Type Optimisation ইত্যাদি সহ বহু ধরনের Snippet Optimization আছে।
এগুলোর মধ্যে প্যারাগ্রাফ টাইপ Snippet Optimization বেশি ব্যবহার করা হয়। যা মূলত কোনো কোশ্চেন টাইপ কী-ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
অর্থাৎ, আপনার টাইটেলটা যদি একটা কোশ্চেন টাইপ টাইটেল হয়- তাহলে সেই আর্টিকেলে আপনি প্যারাগ্রাফ টাইপ অপটিমাইজেশন করতে পারবেন।
মজার বিষয় হলো— যদি কম্পিটিশন কম থাকে এবং আপনি ভালোভাবে Snippet Optimization করতে পারেন, তাহলে আপনার আর্টিকেলটা গুগলে জিরো পজিশনে র্যাংক করতে পারবে।
এছাড়াও- এটার ইউজার এক্সপেরিয়েন্স বেশ ভালো দেয়। আসলে Snippet Optimization এমন একটা ব্যাপার, যদি কারো হাতে আপনার পুরো আর্টিকেলটা পড়ার সময় না থাকে তাহলে সে যেন আপনার এই প্যারাগ্রাফ পড়ে পুরো আর্টিকেলটা সম্পর্কে একটা ধারণা নিতে পারে।
Snippet Optimization সম্পর্কে জানতে আপনি চাইলে রাইটারস মোশন এর একটি কোর্স করে নিতে পারেন অথবা ডিটেলসে একটি ভিডিও দেখে নিতে পারেন।
3. Proper Headlines :
প্রত্যেকটা আর্টিকেলের ভেতরেই প্রোপার হেডলাইন ব্যবহার করা উচিত। পাশাপাশি প্রত্যেকটা হেডলাইন যেন আর্টিকেলের মূল টাইটেল এর সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকে।
যদি আপনি পোষা বিড়ালের খাবার সম্পর্কিত আর্টিকেল লিখে থাকেন, তাহলে প্রত্যেকটা হেডলাইন বিড়ালের খাদ্য তালিকা বা খাদ্য সম্পর্কিত কোন হেডলাইন-ই হতে হবে।
এখানে আপনি অন্য কোন বিষয়বস্তু সম্পর্কিত হেডলাইন দিতে পারবেন না। হেডলাইন পছন্দ করার জন্য, আপনি আপনার টপিক অনুযায়ী গুগলের সার্চ করে সাজেশন বক্স থেকে অথবা বিভিন্ন রেজাল্ট থেকে পছন্দ মত সাব হেডিং বা হেডলাইন সিলেক্ট করে নিতে পারেন।
মোটকথা, যে টপিকেই আর্টিকেল লেখেন না কেন- টাইটেলের সাথে যাতে সাবহেডিং গুলো টপিক্যালি রেলেভেন্ট হয়।
4. Internal Links:
যাকে দিয়ে আর্টিকেল লেখাবেন তাকে অবশ্যই বলে দেবেন যে, সে যেন প্রোপার ইন্টার্নাল লিঙ্ক করে দেয়।
যদি আপনি রাইটার্স মোশনে আর্টিকেল অর্ডার করে থাকেন তাহলে খুবই ভালো। রাইটার্স মোশন থেকে আপনাকে প্রোপারলি ইন্টার্নাল লিংক করে দেয়া হবে।
ইন্টার্নাল লিংক করার ক্ষেত্রে আপনার যদি নির্দিষ্ট কোনো লিংক থেকে থাকে— কোনো আর্টিকেলের লিংক বা কোনো সাইটের লিংক, তাহলে সেগুলো রাইটারকে বুঝিয়ে দেবেন। যাতে সে ওই লিংকগুলো দিয়ে প্রোপারলি ইন্টারনাল লিংক করে দিতে পারে।
5. Short Paragraph :
ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ এ আর্টিকেল লেখা ভালো। এতে ভিজিটরদের পড়তে সুবিধা হয়। ডেক্সটপে যারা আর্টিকেল পড়ে থাকেন তাদেরও সুবিধা হয়, বিশেষ করে যারা মোবাইল ইউজার তাদের জন্য বেশি সুবিধা জনক।
কারণ, একটা শর্ট প্যারাগ্রাফ এর আর্টিকেল ডেক্সটপে খুবই ছোট এবং এক দুই লাইনের লাগলেও মোবাইলে কিন্তু সেটা খুবই বড় দেখায়। এজন্য খুব বেশি বড় প্যারাগ্রাফের আর্টিকেল পড়াটা কিছুটা বিরক্তিকর।
এক্ষেত্রে মোবাইল ইউজারদের কথা মাথায় রেখেই মূলত একটা প্যারাগ্রাফ সর্বোচ্চ তিন লাইন রাখা উচিত, এর বেশি না। যদি প্যারাগ্রাফ এক লাইনেরও হয় তাহলেও কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু, কোনভাবেই বেশি বড় করা যাবে না।
আজকাল অনেকেই ব্লগ রাইটিংকে একাডেমিক রাইটিংয়ের সাথে গুলিয়ে ফেলেন। আসলে দু’টো মোটেই এক জিনিস না। একাডেমিক রাইটিংয়ে অনেক রুলস ফলো করতে হয়। যেটা ব্লগ রাইটিংয়ে করতে হয় না।
এজন্য ব্লগ রাইটিংয়ের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে- কিভাবে লিখলে ভিজিটরদের জন্য সুবিধা হবে, পড়তে আরামদায়ক হবে।
এছাড়াও আপনাকে মনে রাখতে হবে— Not too much explanation under one sub-heading!
অর্থাৎ, অনেকেই করেন কী- একটা সাব হেডিংয়ের ভেতরে ৫০০ ওয়ার্ডের একটা প্যারাগ্রাফ লিখে ফেলেন।
এ-বেলায় সাজেশন থাকবে যে, একটা সাব হেডিংয়ের ভেতরে কোনভাবেই 200 থেকে 250 ওয়ার্ডের বেশি লিখবেন না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যদি এমন হয় যে, একটা সাব হেডিংয়ের ভেতরে আপনার 500 ওয়ার্ড লিখতেই হবে— তাহলে ওই সাব হেডিংয়ের ভেতরে আরও ছোট ছোট সাব হেডিং ব্যবহার করবেন।
যেমন- আপনার মূল সাবহেডিংটা যদি হয় h2, তাহলে তার ভেতরে আরো কিছু h3 বা h4 সাব হেডিং ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। এতে রিডারদের পড়তে সুবিধা হবে এবং দেখতেও খুব সুন্দর লাগবে।
6. Link to relevant products :
আপনার আর্টিকেলে যদি এমন কোনো প্রোডাক্ট নিয়ে কথা বলেন, যেই প্রোডাক্টটা অ্যামাজন অথবা কোথাও আছে— তাহলে সেই প্রোডাক্টের লিংক দিয়ে দিতে হবে।
যাতে কোনো ভিজিটরের যদি ওই প্রোডাক্টটা পছন্দ হয় তাহলে সে যেন সরাসরি আপনার আর্টিকেল থেকেই কিনতে পারে। এতে আপনি যদি ওই প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট হয়ে থাকেন, আপনিও একটা কমিশন পাবেন।
7. Use numbered points, bullet points:
একটা আর্টিকেলে গতানুগতিক লম্বা একটা প্যারাগ্রাফ পড়তে কিন্তু ভালো লাগে না। আর্টিকেলটাকে দৃষ্টিনন্দন করতে নাম্বার পয়েন্ট, বুলেট পয়েন্ট ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
জরুরি না যে, প্রত্যেকটা আর্টিকেলেই আপনার এসব ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু, যতটা সম্ভব করার চেষ্টা করবেন।
গুরুত্বপূর্ণ ধারাবাহিক তথ্য গুলোকে নাম্বারিং করতে পারেন। অথবা বুলেট পয়েন্ট দিয়ে আলাদা করতে পারেন। এতে করে ভিজিটর পড়তে আরাম পাবে। বিরক্ত হবে না।
8.Native Tone:
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কনটেন্ট লেখা হয় USA এর মানুষের জন্য। বাংলাদেশের যারা আর্টিকেল লিখে থাকেন, তাদের অনেকের আর্টিকেল পড়েই বাইরের মানুষরা ধরে ফেলেন যে আর্টিকেলটা তাদের দেশের কেউ লেখেননি। তারা আর্টিকেলে ন্যাটিভ টোনটা খুঁজে পাননা।
এজন্য চেষ্টা করবেন এমন একজনকে দিয়ে আর্টিকেল লেখাতে, যার লেখায় USA এর ন্যাটিভ টোন খুঁজে পাওয়া যাবে। অথবা যদি নিজে লেখেন তাহলেও ওদের টোনটা ধরে লিখতে চেষ্টা করবেন।
এই ন্যাটিভ টোন আনার জন্য আপনি চেষ্টা করতে পারেন। এটা শেখার কিছু নেই। প্র্যাকটিসের ব্যাপার। এজন্য মুভি সিরিজের সাহায্য নিতে পারেন৷ ওদের কথাবার্তা, টোন সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে পারেন।
মোদ্দাকথা, আপনি যাদের জন্য আর্টিকেল লিখবেন তাদের কাছে যেন লেখাটা খাপছাড়া মনে না হয়। এজন্য আর্টিকেলে গ্র্যামাটিক্যাল ভুল সংশোধনের পাশাপাশি ন্যাটিভ টোন আনার ক্ষেত্রেও নজর দেয়া জরুরি।
এরকম ন্যাটিভ টোন সমৃদ্ধ আর্টিকেল লিখিয়ে নিতে এখনই Writers Motion এ যোগাযোগ করুন!
9. No Boring Conclusion :
অধিকাংশ মানুষ ই Conclusion এ পুরো আর্টিকেলের একটা সামারি দিয়ে দেয়। যদি আপনার আর্টিকেল লেখা সুন্দর হয়, তাহলে অবশ্যই একটা ভালো পরিমাণের ভিজিটর আপনার আর্টিকেলটা পুরোটাই পড়বে।
যারা পুরো আর্টিকেলটা পড়বে, তাদের কিন্তু আবার Conclusion এ গিয়ে একই তথ্য সমৃদ্ধ কোনো Summary পড়ার দরকার নেই।
Conclusion টা এমন ভাবে লিখতে হবে, যেটা পড়ে মানুষজন আপনার আরেকটা আর্টিকেল পড়তে চাইবে।
যেমন- আপনি একটা পোষাপ্রাণীর কোনো নির্দিষ্ট অভ্যাস নিয়ে একটা আর্টিকেল লিখলেন। কিন্তু, Conclusion এ উল্লেখ করে লিংক অ্যাটাচ করে দিলেন যে, ওই প্রাণীর আরো কিছু অভ্যাস আছে। যদি ভিজিটররা পড়তে চায় তাহলে যেন লিংকে গিয়ে সেসব আর্টিকেল ও পড়ে নিতে পারে।
মোটকথা—
এই ছিলো নয়টি পয়েন্ট, যা একটা আর্টিকেলকে শতগুণ মানসম্মত হতে সাহায্য করে।
একটা আর্টিকেল খাপছাড়া ভাবে কিছু প্যারাগ্রাফে লিখে দিলেই সেটা মানসম্মত হয় না। প্রত্যেকটা প্রোডাক্টের যেমন গুণগত মান দেখে মানুষ পছন্দ করে, তেমনি আর্টিকেলের বেলায়ও তা-ই।
এজন্য আপনার আর্টিকেলটা মানসম্মত করতে উপরিউক্ত পয়েন্ট গুলো ফলো করুন আজ থেকেই!