আর্টিকেল লেখার সময় এই ৫টি ভুল করা যাবেনা!

আমাদের রাইটার্স মোশনে কিছুদিন আগে সপ্তাহব্যাপী একটা কনটেন্ট রাইটিং কনটেস্ট অ্যারেঞ্জ করা হয়। সেখানে অনেক পার্টিসিপ্যান্ট অ্যাটেন্ড করেন এবং তাদের মধ্য থেকে তিনজনকে ফার্স্ট, সেকেন্ড এবং থার্ড হিসেবে পুরষ্কৃত করা হয়। কিন্তু, অধিকাংশ কনটেন্ট রাইটারই কিছু কমন ভুল করার কারণে পিছিয়ে গিয়েছিলো। যদিও তাদের সবাইকেই পুরষ্কৃত করা হয়েছিলো কিন্তু সেরাদের সেরা হওয়ার জন্য তাদের অনেকেই অযোগ্য থেকে যান শুধুমাত্র কিছু ভুলের জন্য। 

তাহলে জেনে নেওয়া যাক এমনই পাঁচটি কমন ভুল এবং তার সমাধান , যে ভুলগুলো আপনার আর্টিকেল বা কনটেন্টগুলোকে মানসম্মত হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বেশ বড়সড় বিপদে ফেলে দিতে পারে। 

1. Formatting:

আর্টিকেলের গুরুত্বপূর্ণ একটি পার্ট হচ্ছে Formatting। এক্ষেত্রে h1, h2 এবং h3 formatting নিয়ে অনেকেই ভুল করে ফেলেন। এই ভুল থেকে মুক্তি পেতে প্রথমত মনে রাখতে হবে,

  • একটি আর্টিকেলে h1 ট্যাগ শুধুমাত্র একবারই আসবে এবং কখনোই আর্টিকেলের মেইন বডিতে h1 ট্যাগ বসে না।  
  • h1 ট্যাগ শুধুমাত্র আর্টিকেলের Title এর জন্য।  এছাড়া অন্য কোথাও h1 ট্যাগ বসে না।

সুতরাং, আমাদের শুরুটা হবে h2 subheading দিয়ে। তারপর এর আন্ডারে যদি কোনো পয়েন্ট বসাতে হয় তাহলে সেটা h3 subheading এ বসাতে হবে। এভাবেই একটা আর্টিকেলে h1 এর পরে h2 তার পরে h3 এমন ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।

যেমন: প্রথম subheading টি হচ্ছে “what do persian cats eat?” এটি হচ্ছে h2 subheading। এরপরে পার্সিয়ান ক্যাট কি কি খায় সেগুলো এই h2 সাব হেডিংয়ের আন্ডারে h3 সাব হেডিংয়ে রাখতে হবে। এভাবে h3 এর আন্ডারে কোনো সাব হেডিং দিতে হলে সেটা চলে যাবো h4 এ। এভাবেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।

2. Highlighting:

অনেকের মধ্যে দেখা যায় আর্টিকেলের টাইটেল, কী ওয়ার্ডগুলি হাইলাইট করতে, বোল্ড করে দিতে এবং লেখার মধ্যে যেখানে যেখানে keyword আসে সেখানটা বোল্ড করে দিতে দেখা যায়। আপনাকে বলছি এবার ছেড়ে দিন এসব পুরোনো ধাঁচ, প্রয়োজন নেই এসবের। তবে আপনি চাইলে সাবহেডিং গুলো একটু করে বোল্ড করে দিতেই পারেন। এতে করে আপনার আর্টিকেলটি আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

3. Intro:

একটা আর্টিকেলের সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তার ইন্ট্রো। কিন্তু অনেকেই গোঁড়ায় গলদ করে বসেন একটা সুন্দর ইন্ট্রোর দিকে মনোযোগই না দিয়ে। অথচ আর্টিকেল লেখার সময় গুরুত্বপূর্ণ এই পয়েন্টটা মনে রেখে লিখতে হবে যে, পাঠক যেন প্রথম লাইন পড়ার পরে দ্বিতীয় লাইন পড়তে বাধ্য হয়৷ ইন্ট্রোতে যদি জগাখিচুড়ি পাকিয়ে যা তা লিখে বসেন তাহলে কিন্তু পাঠক ওখান থেকেই বিদেয় হবে।

পাঠকের মন জয় করার জন্য অবশ্যই ইন্ট্রোতে এমন কিছু লিখুন যাতে পাঠক প্রথম কয়েক লাইন পড়েই বুঝতে পারে আপনার  আর্টিকেল থেকে সে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় জানতে যাচ্ছে।

4. Grammar Mistake: 

ইংরেজিতে একটি আর্টিকেল লিখতে গেলে সবার আগে grammatical ভুলগুলো শুধরে নিতে হবে। আমরা সবাই ই যেকোনো ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারলেও grammatical ভুল যেন আমাদের পিছুই ছাড়ে না। একে দূর করতে যেকোনো ভাবো grammar শিখতে পারেন। বই পড়ে হোক বা মুভি/ সিরিজ দেখে, প্রতিদিন প্রাকটিস করতে হবে। একটু সময়সাপেক্ষ যদিও, তবুও নিজ উদ্যোগে প্রতিদিন প্রাকটিস করে এই দোষটি মুছে ফেলুন শিগ্‌গির। 

5. Snippet Optimization: 

আমরা যখন গুগলে কোনো কিছু জানার জন্য সার্চ করি, একদম উপরে অল্পকথায় সুন্দর একটা উত্তর আমরা পেয়ে যাই। এই উপরের পজিশনটা হচ্ছে জিরো পজিশন। কেউ যখন একটা প্রশ্নের বিষয়ে খুব অল্পকথায় গুছিয়ে এবং সুন্দর করে সেটার উত্তর লিখে ফেলে বা কোনো বিষয়ে অল্প কথায় কিছু তথ্য লিখে ফেলে তখন গুগল সেটাকে জিরো পজিশনে অর্থাৎ ওপরে সেট করে দেয়।  এই জিরো পজিশনে আসার বিষয়টি হচ্ছে মূলত Snippet optimization। এরপর একে একে এই বিষয়ে ওয়ান, টু, থ্রি ইত্যাদি পজিশনে আরও লেখা আসতে থাকে। 

একটা আর্টকেলে যত কম কথায় বেশি তথ্য রাখা যাবে, গোছানো হবে, উত্তর সাবলীল ও সুন্দর হবে গুগল সেটাকে বেশি প্রায়োরিটি দেবে। এই snippet optimization মূলত SEO এর সবচে’ কার্যকরী একটা হ্যাক। 

এই হ্যাকটি মাথায় রেখে কোনো প্রশ্নের স্বল্পকথায়, এক প্যারায় কিন্তু তথ্যবহুল উত্তর লিখলে অনেক বড় বড় কম্পিটিটরদের টেক্কা দিতে পারবেন আপনিও!

জানা গেল পাঁচটি কমন ভুল সম্পর্কে কিন্তু একটি আর্টিকেল মানসম্মত করতে আরও কিছু টুকটাক মশলা প্রয়োজন। ফরম্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে অনেকেই h2,h3,h4 subheading বাদেও অনেক বিষয় মনে রাখা জরুরি। 

যেমন-

  • বুলেট পয়েন্ট ইউজ করা, নাম্বারিং ইউজ করা,  কারো কোটেশন ইউজ করলে সেটা ইটালিক হরফে লিখে কোটেশন মার্ক ইউজ করা ইত্যাদি।

এগুলো খেয়াল করে আর্টিকেল লিখলে লেখাটা আকর্ষণীয় হতে বাধ্য। একজন রাইটারের সফলতা হচ্ছে পাঠকের চোখ তার লেখায় ধরে রাখতে পারলে।  পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে কিছু ট্রিকস ইউজ করতে পারেন যে,

  • একাধারে অনেক কথা না লিখে কয়েক লাইন পরে একটা আকর্ষণীয় subheading দেওয়া, এতে করে পাঠকের বিরক্ত হওয়ার হার অধিকাংশে কমে যাবে। এরপরে তথ্যবহুল কোটেশন ইউজ করা, একটা রেফারেন্সের পরে ফাঁকা রেখে আরেকটা রেফারেন্স দেওয়া ইত্যাদি। 

( আমার একটি কোর্সও রয়েছে কনটেন্ট রাইটিংয়ের ওপরে। যেখানে একটা পরিপূর্ণ লেখা কিভাবে লেখা যায় তার খুঁটিনাটি সব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা চাইলে কোর্সটি করতে পারেন এখনই

সুতরাং, আর্টিকেল লেখার খুঁটিনাটি বিষয়ে দক্ষ হতে চাইলে, একজন সফল আর্টিকেল রাইটার হতে চাইলে আজ থেকে অবশ্যই এসব ভুল এড়িয়ে চলুন এবং আপনার লেখা যথাসম্ভব সাবলীল ও সুন্দর করার দিকে মনোযোগী হয়ে যান আজ থেকেই।

Similar Posts