ChatGPT দিয়ে কন্টেন্ট লিখিয়ে কি গুগল র্যাঙ্ক করা সম্ভব?
মানুষের লেখা আর্টিকেল এবং AI দিয়ে লেখানো আর্টিকেলের মধ্যে যদি তুলনা করা হয় — তাহলে কেমন ঘটনা ঘটবে? দ’টোর মধ্যে কোনটা ভালো? কোনটা মন্দ?
আবার, ChatGPT এর মাধ্যমে AI দিয়ে কন্টেন্ট লিখিয়ে পাবলিশ করে আদৌ কোনো ফায়দা আছে কি-না? গুগল র্যাঙ্ক করানো সম্ভব কি-না?
প্রথমে মানুষের লেখা একটা আর্টিকেল আমরা পর্যবেক্ষণ করি—
আর্টিকেলটা ” Can A Pet Box Turtle Survive In The Wild ” টাইটেলের একটা আর্টিকেল। এটার কিছু বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলি হচ্ছে –
- প্রোপারলি সাবহেডিং দেয়া।
- Snippet Optimizer করা আছে।
- সার্ভাইভ করতে না পারার কারণ গুলো বিস্তারিত লেখা আছে।
- গুগলে দুই নাম্বার র্যাঙ্ক দখল করে বসে আছে।
এই আর্টিকেলটা একটা মানুষের লেখা।
একই টপিকে যদি ChatGPT কে বলা হয় একটা আর্টিকেল লিখে দিতে তাহলে সে কেমন পারফর্ম করবে?
এজন্য ChatGPT তে গিয়ে তাকে কমান্ড করা হলো যে- ” Write a thousand word blog post on ‘ Can A Pet Box Turtle Survive In The Wild?”
সাথে সাথেই ChatGPT লেখা শুরু করে দিলো। মোটামুটি শুরুতে সে শব্দ সংখ্যার ব্যাপারটা মেইনটেইন করেই লিখছিলো। কিন্তু, সমস্যা হলো- এখানে কোনো সাবহেডিং ব্যবহার করা হচ্ছিলো না।
এক্ষেত্রে, ChatGPT যেটা জেনারেট করে লিখছিলো সেটা একটা ব্লগপোস্ট হিসেবে ব্যবহার করলে SEO এর দিক থেকে খুব ভালো একটা পারফর্ম করার কথা না। কারণ, এখানে কোনো সাবহেডিং ই ব্যবহার করা হয়নি। সুতরাং, এখানে আরো কাজ করা লাগবে।
আরো কিছু কাজ করে, এডিট না করে পাবলিশ করলে ChatGPT এর লেখা আর্টিকেলটা কোনোভাবেই মানুষের লেখা আর্টিকেলের সাথে টেক্কা দিতে পারবে না। কারণ, মানুষের লেখা আর্টিকেলটা প্রোপারলি —
- Snippet Optimized
- SEO Optimized সহ যা যা করা দরকার সবই করা আছে।
এছাড়াও- ওয়ার্ড কাউন্ট করে দেখা গেল, কমান্ডে thousand word লেখার কথা বলা সত্ত্বেও ChatGPT মাত্র 500 word জেনারেট করে দিয়েছে।
এই আর্টিকেলটা কি আসলেই এভাবে ব্যবহার করা সম্ভব? মোটেই না। এজন্য আবার কমান্ড দেয়া হলো যে- ” Use some subheadings ”
এটা করার পরে সে সাবহেডিং যুক্ত করে দিয়েছে৷ কিন্তু, সাবহেডিং গুলো হচ্ছে শুধু মাত্র কারণ গুলোর সাবহেডিং।
অর্থাৎ, কেন সার্ভাইব করতে পারে বা পারে না এই কারণ গুলোর সাবহেডিং।
আবার, সে এখানে কিছু ভুল ইনফরমেশন ও দিয়েছে। একটা Pet Turtle কে কখনোই wild এ ছাড়া উচিত না। এটা শুরুতেই বলা উচিত। কিন্তু, ChatGPT এটা বলেনি। সে এখানে কিছু কিছু ফ্যাক্ট বলেছে যেসব ক্ষেত্রে Pet Turtle সার্ভাইভ করতে পারে।
মানুষের লেখা আর্টিকেলে বিস্তারিত ভাবে বলা আছে যে-
- কখনোই একটা Pet Turtle কে wild এ ছাড়া উচিত না।
- কেন একটা Pet Turtle কে wild এ ছাড়া উচিত না।
- কি কি জিনিস চিন্তা ভাবনা করতে হবে।
- ইম্প্যাক্টের ওপর কি কি ভূমিকা রাখবে ইত্যাদি।
কিন্তু, ChatGPT লিখিত আর্টিকেলে শুধুমাত্র কিছু ফ্যাক্টরের কথা বলা হয়েছে। আসলে এই আর্টিকেলটা মোটেই সম্পূর্ণ না।
সাধারণত, সব আর্টিকেলেই কিছু অরিজিনাল রিসার্চ থাকলে ভালো হয়।
অরিজিনাল রিসার্চটা কী?
এমন কিছু তথ্য রাখা যেগুলো আপনার আর্টিকেলটাকে অন্য আর্টিকেল থেকে আলাদা করবে। এই গুলো ফেসবুকে পোল তৈরী করে, স্ট্যাটিস্টিক্স এড করে, কাস্টম ইমেজ বা ভিডিয়ো ব্যবহার করে করা যায়। এটা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে কোর্সের যুক্ত হতে পারেন।
এবার ChatGPT কে কমান্ড দেয়া হলো যে- ” Can you add some statistics? ”
ফলাফল হিসেবে পজিটিভ কিছু পাওয়া যায়নি। সে বারবার একই জিনিস দিচ্ছিলো। এজন্য আবার বলা হলো- ” Can you tell me some statistics about box turtle in wild?”
এরপরে সে টুকটাক কিছু স্ট্যাটিস্টিক দিয়েছে। আসলেই এগুলো ঠিক কি-না তা বোঝা যায়নি। এক্ষেত্রে আর্টিকেলটা ব্যবহার করতে চাইলে ফ্যাকচুয়াল কনফার্মেশন লাগবে যে- সে যে তথ্য গুলো দিয়েছে সেগুলো আসলেই ঠিক কি-না।
কারণ, ChatGPT প্রায়ই ভুল তথ্য দেয়। হয়ত আপনার দেখে মনে হবে সত্যিই বলছে। কিন্তু, একচুয়াল ফ্যাক্টটা হয়তো ভুল। এটা ChatGPT এর হোমস্ক্রিনেই বলা আছে যে- এটা ফ্যাকচুয়ালি ভুল ইনফরমেশন দিতে পারে।
ChatGPT লিখিত আর্টিকেলটা ব্যবহার করতে হলে আপনাকে কিছু জিনিস এড করে নিতেই হবে। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে যে স্ট্যাটিস্টিক্স গুলো দিলো সেগুলো ভেতরে ভেতরে বসিয়ে দিতে পারেন। এখন এসব পরিবর্তন করার পরে এই আর্টিকেলটাকে ১০ এর মধ্যে কত দেয়া যায়?
১০ এর মধ্যে ৫/৬ এর বেশি দেয়া মোটেই যুক্তিযুক্ত না। কারণ, এখানে ফুল টপিক্যাল রেলেভেন্সটা আসেনি।
এছাড়াও আরো অনেক কিছু এখানে যুক্ত করা যায় যেগুলো ChatGPT করেনি। ChatGPT SEO এর দিক থেকে ব্যাপারটা বোঝেনা।
এগুলো ছাড়াও ChatGPT কে আরো কমান্ড দেয়া যেতে পারে। যেমন- তাকে বলা হলো, ” Can you SEO optimized the article ”
এটার ফলাফলেও সে আবার আগের মতই টানা লিখে যাচ্ছিলো। কোনো সাবহেডিং দিচ্ছিলো না এবং এটা মোটেই SEO Optimized মনে হচ্ছিলো না। আপনারা চাইলে দেখে নিতে পারেন নিজের মত করে।
এই আর্টিকেলটার মধ্যে অনেক গুলো কাজ করতে হয়েছে।
গুগল কী ChatGPT লিখিত আর্টিকেলটা পছন্দ করবে?
গুগল বারবার বলেছে- তারা AI দিয়ে লেখানো কোনো আর্টিকেল পছন্দ করে না। আপনি ChatGPT দিয়ে একটা আর্টিকেল লিখিয়ে পাবলিশ করার পরে গুগল যদি কোনোমতে বুঝতে পারে এটা AI Generated তাহলে বড়সড় ঝামেলা হয়ে যাবে। আপনার কন্টেন্ট গুগল র্যাঙ্ক করাবে না। আপনার সাইটকে পেনাল্টি দেবে। এরকম অসংখ্য সাইটকে পেনাল্টি দিয়েছে।
এই আর্টিকেলটা AI Content Detector দিয়ে চেক করা হলো। এটা যে AI দিয়ে লেখা, এটা ডিটেক্টর বোঝে কি-না সেটা পরীক্ষা করা হলো।
এজন্য AI Content Detector লিখে সার্চ করার পরে অনেক গুলো ডিটেক্টর পাওয়া যাবে। মজার ব্যাপার হলো- একেকটা ডিটেক্টর একেক রকম রেজাল্ট দেয়। এরমধ্যে বেশির ভাগের রেজাল্টই আসে- Human Generated Content।
অর্থাৎ, আপনি যদি AI দিয়ে কন্টেন্ট লিখিয়ে কিছু এডিট করেন, অরিজিনাল রিসার্চ, স্ট্যাটিস্টিক্স বসান তাহলে কোনোমতে গুগলকে ফাঁকি দেয়া সম্ভব।
কিন্তু, তা-ও এটা সম্পূর্ণ ভাবে টপিক্যাল রেলেভেন্ট না। যদি আপনি এমন একটা AI লিখিত আর্টিকেল দিয়ে গুগলে র্যাঙ্ক করেন তাহলে একই টপিকে একজন মানুষ যেকোনো মূহুর্তে একটা আর্টিকেল লিখে খুব সহজেই আপনার কন্টেন্টকে টেক্কা দিয়ে পেছনে ফেলতে পারবে। কারণ, অবশ্যই মানুষের হিউম্যান জেনারেটেড কন্টেন্টটা বেশি SEO Optimized, আরো ফ্যাকচুয়ালি কারেক্টেড একটা আর্টিকেল।
তারপরেও যদি AI নিয়ে আপনি আগাতে চান, এই রিস্ক গুলো মাথায় রেখে আগাতে হবে। না হলে পরে সমস্যায় পড়তে পারেন। এ বেলায়ও, ChatGPT যা দেবে সেটাই ব্যবহার করতে পারবেন না। একটু জোড়াতালি দিয়ে এডিট করে নিতে হবেই। তবে যতই জোড়াতালি দেন না কেন, যতই এডিট করেন না কেন— দিনশেষে যখন AI Generated র্যাঙ্ক করা কন্টেন্টের টপিকে কোনো হিউম্যান জেনারেটেড কন্টেন্ট চলে আসবে, তখন AI Generated কন্টেন্টটা অবশ্যই পিছিয়ে যাবে।
রিস্ক থাকা সত্বেও, ChatGPT দিয়ে শুধুমাত্র ব্লগ লেখা বাদেও অনেক কিছু করা সম্ভব। যেটা ব্লগারদের অনেক কাজে লাগতে পারে!