৬টি স্ট্রাগল, যা নিশ সাইট Owner রা সবসময় ফেস করে থাকেন!

যারা নিশ সাইটের জগতে নতুন- অর্থাৎ,  যারা নিশ সাইট বানিয়ে নতুন নতুন ইনকাম করতে আসেন তাদের প্রত্যেককেই কিছু স্ট্রাগল করতে হয়, কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। 

এই স্ট্রাগল গুলোর প্রতিকারও রয়েছে। এখানে রইল, তেমনই ছয়টি স্ট্রাগল- প্রায়ই যার মুখোমুখি হন নিশ সাইট Owner রা!

Expand your knowledge about Blogging with this article. ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, যা প্রতিটি ব্লগারের ফলো করা উচিত! 

1.টাকা খরচ করবো না-কি সময়? 

নতুন নতুন এটা নিয়ে সবাই একটু দ্বিধাদ্বন্দে ভুগে থাকেন। সিদ্ধান্ত নিতে বেশ সময় লাগে যে, আসলে কী করা উচিত?  টাকা খরচ করা উচিত না-কি সময় খরচ করা উচিত? 

টাকা বা সময় খরচ করার ব্যাপারটা হলো—

আপনি যখন একটা নিশ সাইট খুলবেন, অবশ্যই সেটা অযথা বসিয়ে রাখার জন্য খুলবেন না৷ আপনার নিশ সাইটটা সচল রাখতে হবে। সচল রাখার জন্য প্রয়োজন কন্টেন্ট।  

কিন্তু, কন্টেন্ট তো আর এমনি এমনি তৈরী হয়না। কন্টেন্ট তৈরী করতে হয়। হয় আপনি নিজে তৈরী করুন বা অন্য কাওকে দিয়ে তৈরী করিয়ে নিন, যেকোনো একটা পদ্ধতিতে আপনাকে কন্টেন্টটা তৈরী করতে হবে৷ 

মোটকথা, আপনার সাইটের কন্টেন্ট আপনি দুইভাবে পেতে পারেন। 

  1. টাকার বিনিময়ে কারো কাছ থেকে লিখিয়ে নিতে পারেন।
  2. নিজের সময় খরচ করে, নিজেরটা নিজেই লিখে নিতে পারেন। 

টাকার বিনিময়ে কারো কাছ থেকে কন্টেন্ট পেতে হলে আপনি কোনো এজেন্সির কাছে অর্ডার দিতে পারেন অথবা কোনো রাইটার হায়ার করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার নিজের সময় দেয়া লাগবে না কিন্তু নির্দিষ্ট একটা পয়সা আপনাকে খরচ করতে হবে। 

এছাড়া, নিজে লিখতে গেলে টাকা খরচ হবেনা৷ যেহেতু নিজের কাজ নিজেই করছেন।  কিন্তু, আপনার সময়টা খরচ হবে। 

এখন, বিগিনারদের সমস্যা হয় এ বেলায় সিদ্ধান্ত নিতে যে তারা নিজের কাজ নিজে করবে না-কি টাকা খরচ করে কাওকে দিয়ে লিখিয়ে নেবে। আসলে কোনটা করা উচিত? 

একটা বিগিনার নিশ সাইট Owner এর ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ই টাকা খরচ করে কন্টেন্ট লেখানোর সামর্থ্য থাকেনা। এজন্য যদি আপনার বাজেট কম থাকে তাহলে কষ্ট করে নিজের কন্টেন্টটা নিজে লিখে নেয়াই ভালো। 

তবে, যদি নিজেই লিখতে চান তাহলে শিওর হয়ে নিন যে আপনার ইংলিশে ভালো একটা দক্ষতা আছে এবং কন্টেন্ট রাইটিংয়ের ওপর খুব ভালো জানাশোনা আছে। কারণ, একটা ব্লগ লেখা আর প্যারাগ্রাফ লেখা কিন্তু সমান কথা না। আপনার কন্টেন্ট রাইটিংয়ের ব্যাপারে পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। 

কন্টেন্ট রাইটার হতে হলে আপনাকে জানতে হবে— কীভাবে রিডারের মনযোগ আকর্ষণ করতে হয়, কিভাবে রিসার্চ করতে হয়, সহজভাবে কিভাবে লিখতে হয় ইত্যাদি। এসব নিয়ে Writers Motion এ কোর্স আছে। জানতে চাইলে জয়েন করে ফেলুন! 

কিন্তু, এই ঝামেলা না নিতে চাইলে কোনো রাইটার এজেন্সি বা সলো রাইটার হায়ার করতে হবে। 

2.Website এ শুধু রিভিউ কন্টেন্ট দেয়া:

অনেকেই সাইট খুলেই রিভিউ লিখতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন৷ যেন রিভিউ কন্টেন্ট ছাড়া গতি নেই। কিন্তু, এটা খুবই বাজে অভ্যাস। গুগল এটা একদমই পছন্দ করে না। শুধু রিভিউ দিলে আপনার সাইটটা হুমকির মুখে পড়ে যাবে খুব দ্রুত। 

এজন্য আপনার ওয়েবসাইটকে একটা ব্র্যান্ড হিসেবে দাঁড় করাতে হবে। এজন্য শুধু রিভিউ কন্টেন্ট দেয়া অনুচিত৷ এর বদলে—  ইনফরমেটিভ কন্টেন্ট দিতে হবে, সাইটের ভালো একটা লোগো থাকতে হবে, অথেনটিক একটা About Us পেইজ থাকতে হবে যেখানে আপনার সম্পর্কে অথেনটিক কিছু তথ্য থাকবে যেমন- আপনি কে, সাইটটা তৈরী করার পেছনের উদ্দেশ্য, আপনার একটা ছবি ইত্যাদি। 

3.কন্টেন্ট পাবো কোথায়?

বিগিনারদের অধিকাংশের সমস্যা এটা— কন্টেন্ট কোথা থেকে নেবো? 

ধরুন, আপনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে আউটসোর্সিং করবেন। টাকা দিয়ে কন্টেন্ট কিনে নেবেন। কিন্তু পাবেন কোথায় এটা খুঁজে পাচ্ছেন না। 

অনেকে সলো রাইটার হায়ার করে। টাকা বাঁচানোর জন্য সবচেয়ে কমদামে যে সার্ভিস দেয় তাকেই হায়ার করে থাকে। কিন্তু, এখানেও রাইটার হিসেবে যারা বিগিনার তারাই একদম কমদামে সার্ভিস দিয়ে থাকে। তাদের এক্সপেরিয়েন্স খুবই কম থাকে। 

কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন রাইটারের লেখার কোয়ালিটি সাধারণত খুব একটা ভালো হয় না। পয়সা বাঁচানোর জন্য অনেকেই ইনফেরিওর কোয়ালিটির আর্টিকেল কিনে থাকেন, যেটা খুব একটা ভালো না। 

এছাড়াও একটা সমস্যা হচ্ছে, রাইটারের কাছ থেকে আর্টিকেল লিখিয়ে নেয়ার পরে কিভাবে বোঝা যায় যে আর্টিকেলের মান কেমন, ভালো না-কি খারাপ! এই ভালো খারাপের ব্যাপারটা নিশ সাইট Owner রা জানেন না। এজন্য রাইটার যা লিখে দেয় সেটাই চোখ বন্ধ করে পাবলিশ করে দেয়। 

এক্ষেত্রে বাজেট ভালো থাকলে অভিজ্ঞ রাইটারের কাছে যান অথবা অভিজ্ঞ এজেন্সির কাছে যান, যারা আপনাকে পুরো ব্যাপারে হেল্প করবে৷ যেমনটা Writers Motion এ করা হয়ে থাকে। 

আর বাজেট কম হলে নিজেকেই আপডেট করে ফেলুন। বোঝার মত নিজেকে তৈরী করুন, যাতে একটা আর্টিকেল দেখেই বুঝতে পারেন যে সেটায় কিসের ঘাটতি আছে বা কোন ব্যাপারটা বাড়তি আছে। 

4. ওয়েবসাইটের ঠিকঠাক মনিটাইজেশন:

নিজের ওসেবসাইটের প্রোপার মনিটাইজেশন অনেকেই করেন না, করতে পারেন না৷ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ এখন পর্যন্ত মনিটাইজেশন বা ওয়েবসাইট থেকে আর্ন করা বলতে বোঝে অ্যামাজনের অ্যাফিলিয়েট করা। 

প্রথমতঃ হাজার হাজার জিনিসের অ্যাফিলিয়েট করা যায়, বহু অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক আছে অ্যামাজন ছাড়াও— এটা আপনাকে জানতে হবে। অ্যামাজন অনেক কম কমিশন দেয়। এমন নেটওয়ার্ক ও পাবেন যারা অ্যামাজনের থেকেও আপনাকে বেশি কমিশন দেবে। 

এজন্য অ্যামাজন ছাড়াও আরো কিছু অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে ভিডিয়োটি দেখে ফেলতে পারেন।

এরপর যারা এড দিয়ে ইনকাম করতে চান তারা শুরু করেন Adsense দিয়ে এবং অ্যামাজনের মতই Adsense কেও একমাত্র আস্থা বলে ধরে নেন। কিন্তু Adsense এর থেকে বেটার অপশন হচ্ছে Ezoic।  

যদি আপনার সাইটটা মোটামুটি বড় হয়,  50,000 সেশন থাকে প্রতি মাসে তাহলে Mediavine এ অ্যাপ্লাই করতে পারেন। এর থেকে বড় হলে AdThribe এ অ্যাপ্লাই করতে পারেন। এগুলো সবই হচ্ছে প্রিমিয়াম অ্যাড নেটওয়ার্ক,  যার মাধ্যমে আরো অনেক বেশি ইনকাম করতে পারবেন। 

Discover more interesting content on Blogging by reading this post. ব্লগ পাবলিশ করার জন্য বেস্ট সময় কখন! 

উদাহরণ হিসেবে, যদি আপনার 50,000 পেইজ ভিউ থাকে তাহলে   Adsense থেকে যা ইনকাম করবেন – একই ট্রাফিকে Mediavine থেকে তার সাত-আট গুণ বেশি ইনকাম করা সম্ভব। তাহলে আপনি Mediavine রেখে Adsense এ কেন থাকবেন? 

এছাড়াও, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা Ad ছাড়াও অনেক টেকনিক আছে মনিটাইজেশন করার। আপনি চাইলে লিড জেন করতে পারেন, ড্রপ শিপিং করতে পারেন। এগুলো ডিপেন্ড করবে আপনার সাইটটা কি নিয়ে বানিয়েছেন সেটার ওপর। 

5.ভিডিয়ো বানাতে ভয়:

বর্তমান সময়ে পুরো বিশ্বটা ভিডিয়ো কন্টেন্টের ওপর ঝুঁকে আছে। এমন সময় এসেও অধিকাংশ মানুষ ভিডিয়ে বানাতে ভয় পান। কিন্তু, আগাতে হলে রিটেন কন্টেন্টের পাশাপাশি একটা ইউটিউব চ্যানেল থাকা জরুরি। 

সবচেয়ে ভালো হয়, যে নিশে আপনার সাইটটা আছে সেই নিশের ওপর যদি নিজেই কাজ করে থাকেন। তাহলে নিশটা সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকবে এবং ভিডিয়ো বানানো সহজ হবে। 

ভিডিয়ো বানাতে খুব বড়সড় সেটাপের প্রয়োজন নেই। প্রথম প্রথম নিজের সেলফোনটা বের করেই সেলফি ক্যামেরা দিয়ে ভিডিয়ো করা শুরু করে দিন। আস্তে আস্তে অনেক দূরে চলে যেতে পারবেন। 

এক্ষেত্রে নিজের চেহারা দেখাতে, ইংলিশে কথা বলতে সমস্যা হয় তাহলে এর ও সমাধান আছে। এজন্য যখন কন্টেন্ট লিখিয়ে নেবেন তখনই পাঁচ মিনিটের একটা ভিডিয়ো স্ক্রিপ্ট ও লিখিয়ে নিতে পারেন। স্ক্রিপ্টটা টেক্সট টু অডিয়ো জেনারেট টুল দিয়ে অডিয়ো জেনারেট করে সেটা র‌্যান্ডম কিছু ক্লিপের সাথে লাগিয়ে দিতে পারেন। 

মোটকথা, পিছিয়ে থাকবেন না। যেকোনো ভাবেই হোক না কেন, শুরু করুন। 

6.ওয়েবসাইটকে স্কেল-আপ করতে না পারা:

ওয়েবসাইটের কন্টেন্টটাকে বড় পরিসরে নিয়ে যেতে না পারার ব্যাপারটাই হচ্ছে স্কেল-আপ করতে না পারা।  যখন আপনার ওয়েবসাইটটা প্রফিটেবল হবে, অর্থাৎ আপনি জানেন যে আপনি যে আর্টিকেল দিচ্ছেন সেটা দিয়ে প্রতিমাসে খরচ বাদ দিয়েও অনেক ইনকাম করতে পারছেন, তখন স্কেল-আপ নিয়ে ভাবা উচিত। 

যেমন, আপনি যদি মাসে দশটা আর্টিকেল দেন তাহলে আপনার ভাবা উচিত যে দশটার জায়গায় বিশটা বা ত্রিশটা আর্টিকেল দিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে একটা SOP বানাতে হবে। যার ফুল ফর্ম হচ্ছে – Standard Of Procedure।  

এটা দিয়ে আপনি রাইটার হায়ার করবেন, একজন এডিটর রাখবেন ইত্যাদি। এভাবে আর্টিকেল পাবলিশ করার পুরো প্রোসেসটা স্ট্রিমলাইন করার চেষ্টা করবেন। অর্থাৎ, আপনার অনুপস্থিতিতেই যাতে ব্যাপার গুলো অটোমেটেড হয়ে যায়। 

উদাহরণস্বরূপ — 

আপনার রাইটার থাকবে কয়েকজন, যারা আপনার আর্টিকেল লিখে দেবে। এই কয়জনকেই আপনি ট্রেইনআপ করিয়ে ফেলবেন SOP এর মাধ্যমে। 

SOP তে সব নির্দেশনা দিয়ে রাখবেন। তারা দেখলেই যেন বুঝতে পারে কি করতে হবে। এর ফলে নতুন রাইটার নেয়ার সময়ে তাকে বোঝাতে খুব একটা সময় লাগবে না। রাইটাররা লেখার পরে, লেখাটা একটা সফটওয়্যারে জমা দেবে। যেমন- Click Up।  

পাশাপাশি একজন WordPress Editor রাখবেন।  যিনি Click Up এ জমা হওয়া কাজ গুলো WordPress এ নিয়ে ঠিকঠাক ইন্টারনাল লিংক করে দেবে, ড্রাফট করবে, প্রয়োজনীয় ছবি / ভিডিয়ো ইত্যাদি সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে বসিয়ে আর্টিকেলটাকে সাজিয়ে ড্রাফট অবস্থায় রেখে দেবে।

এরপরে আপনি শুধু, ড্রাফটটা দেখে কোনো ভুলভ্রান্তি আছে কি-না দেখার পরে পাবলিশ করে দেবেন। এ পর্যন্ত আপনার নিজে উপস্থিত থেকে কোনো কাজ করা লাগছে না শুধু পাবলিশ করা ছাড়া। এ পর্যায়ে আপনি অনেকদিন পর একবার ঢুকেও অনেক গুলো আর্টিকেল একসাথে পাবলিশ করতে পারবেন। আপনার কাজের বোঝাটা কম। 

এইযে, ধারাবাহিক একটা কার্যক্রম— এটা করতে পারলে কিন্তু একটা ইন্ডাস্ট্রির মত দাঁড় করানো হয়ে যাবে। প্রত্যেকটা কাজ গোছানো। গতানুগতিক ভাবে আপনার আন্ডারে কাজ করা লোকেরাও কাজ করতে থাকবে সহজ ভাবে। 

এক্ষেত্রে আপনি চাইলে তিনজন রাইটার রাখতে পারেন, আবার বাড়িয়ে দশজন ও রাখতে পারেন। যত বেশি রাখতে পারবেন তত আপনার প্রডাকশন বাড়বে। 

যখনই আপনার ওয়েবসাইটটা মোটামুটি বড় হবে তখনই এই অটোমেট প্রোসেসটা করার চেষ্টা করুন৷ এটা আপনার জন্য বেশ ফলদায়ক হবে।  

Similar Posts