গুগল আপডেটের পরেও কেন এই সাইট গুলোর ট্রাফিক কমেনি!

আপনার যারা ব্লগিং করেন তারা অনেকেই জানেন যে ,রিসেন্টলি গুগল একটা আপডেট দেয় যে—  কারণে অনেক সাইটের ধ্বস নামে। ৯০% এর বেশি সাইটের ট্রাফিক নেমে যায়। এমন মহামারীর সময়ও কিছু কিছু সাইট আছে যেগুলোর ট্রাফিক কমেনি। এমন সাইট খুবই রেয়ার,  হাতে গোনা হলেও এই সাইট গুলোর ট্রাফিক কমেনি। 

এমন কিছু কমন সাইট সম্পর্কে জানা যাক এবং কি কি কারণে, কি কি কমন বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে এদের ট্রাফিক কমেনি সেগুলো আলোচনা করা যাক। যাতে বুঝতে পারি যে, আমাদের আসলে কি কি করা উচিত— গুগল আপডেটের এমন ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাঁচার জন্য। 

Use Custom Image:

প্রথমেই আছে— BONSAI Empire।  

এই সাইটে ঢুকেই দেখতে পারবেন যে, এরা প্রথম যে স্ট্রাটেজিটা ফলো করে তা হল — ওরা সব কাস্টম ইমেইজ ব্যবহার করে। আপনি যদি ওদের কোনো পোস্টে যান, তাহলে দেখতে পারবেন— যে যে ছবি ওরা ব্যবহার করুক না কেন সব গুলোই নিজের তোলা অথেন্টিক ছবি অর্থাৎ এমন ছবি যা ইন্টারনেটে আগে কখনো ছিল না, শুধুমাত্র ওরাই প্রথমবারের মত ব্যবহার করেছে।

এই কাজটা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর ফলে গুগল মনে করে যে আপনি একজন রিয়েল মানুষ। আপনার মধ্যে কোন সাত-পাঁচ নাই। 

এই ওয়েবসাইট ছাড়াও বাকী গুলোও প্রত্যেকেই এমন কাস্টম ছবি ব্যবহার করেছেন। কেউ কেউ ওয়াটার মার্ক দিয়েও ব্যবহার করেছে। এই কাজটা তারা এত সূক্ষ্মভাবে করেছে যে, বলা যায় এই কারণে ও গুগল তাদের উপর ধ্বংসযজ্ঞ টা চালায়নি। 

আবার সফটওয়্যার রিলেটেড সাইটগুলোতে তারা নিজেরাই স্ক্রিনশট নিয়েছে, নিজেদের স্ক্রিনশট ব্যবহার করেছে। 

আবার এর মধ্যে একটা সাইট— ” Bearded Dragon Food ” যেটা স্টক ছবিও ব্যবহার করেছে। তা-ও তার ট্রাফিক কমেনি। অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে সবারই এই ব্যাপারগুলো যে কমন তা না। 

প্রত্যেকেই কোন না কোন কাজের কারণে বেঁচে গেছে। তবে এই সাইটটা স্টক ছবি ব্যবহার করেছে বলে যে, আপনিও ব্যবহার করবেন তা-না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গুগল কাস্টম ছবি ব্যবহার করাটাকে প্রায়োরিটি দিয়ে থাকে। আপনি যদি একটা অর্গানিক ছবি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনি অনেকটাই সেইফ জোনে থাকবেন।

Monetization :

সাইট মনটাইজেশনের ক্ষেত্রে আপনি যদি শুধু অ্যাড আর এফিলিয়েট নিয়ে পড়ে থাকেন — এটা ভালো দেখায় না। একটা প্রকৃত সাইট কখনোই শুধুমাত্র অ্যাড আর এফিলিয়েট এর পেছনে পড়ে থাকবে না। সে এগুলো ও করবে কিন্তু এর পাশাপাশি হয়তো কোর্স সেল করবে, লিড জেনারেশন করবে, প্রোডাক্ট সেল করবে— অনেক কিছুই করবে। 

মোটকথা যা যা করা যায় একটা সাইট ওপেন করার পরে— সবকিছুই করার চেষ্টা করতে হবে। শুধুমাত্র অ্যাড আর এফিলিয়েট এর উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকাটা বুদ্ধিমানের কাজ না।

এখানে দেখবেন Bonsai Empire সাইটটা তাদের মনিটাইজেশন কিন্তু এড দিয়ে করছে না। কোর্স সেল করে করছে। অর্থাৎ তারা কিন্তু রিয়েল বিজনেস করছে। গুগল এটাই চায় যে, আপনি সাইট ওপেন করে একদম পারফেক্ট বিজনেস ম্যান হয়ে উঠুন।

আবার Dragons Diet সাইটটা নিজেদের প্রোডাক্ট সেল করছে। ই-কমার্স সাইটের মত করে বানিয়ে ফেলেছে। যেটা একটা রিয়েল বিজনেস। এখানে এরা অবশ্যই এড আর এফিলিয়েট এর উপর একদম বসে নেই, নিজের মত একটা বিজনেস দাঁড় করিয়ে ফেলছে।

আবার Dollar Sprout  সাইটটা নিজের একটা পডকাস্ট ই খুলে ফেলেছে। এটাও একটা রিয়েল বিজনেস এবং এফিলিয়েটের বাইরের খুব সুন্দর একটা কনসেপ্ট যেটা দিয়ে বিজনেস করা যায়।

অর্থাৎ এই সাইটগুলো অ্যাড এবং এফিলিয়েট তো করছে তার পাশাপাশি কিছু না কিছু উপায় খুঁজে বের করেছে যেটা দিয়ে তারা আসল বিজনেসের স্বাদটা নিতে পারবে।  এজন্য কেউ কোর্স করছে, কেউ পডকাস্ট করছে, কেউ প্রোডাক্ট বিক্রি করছে।

Community & Forum:

আর একটা ব্যাপার প্রত্যেকটা সাইটেই কমন— যেটা হলো তাদের প্রত্যেকেরই কমিউনিটি আছে। আপনি দেখবেন এখানে এই Bonsai Empire সাইটের ফেসবুকে প্রায় কয়েক লাখ লাইক, ইনস্টাগ্রামে কয়েক লাখ ফলোয়ার। 

এই ব্যাপার গুলো গুগল যখন দেখবে যে— এই সাইটটার সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক এত স্ট্রং, তখন সে অবশ্যই তাকে ট্রাফিক কমিয়ে দিয়ে বিপদের মুখে ফেলবে না। এই সোশ্যাল নেটওয়ার্ক গুলো ঢাল হয়ে দাঁড়াবে।

কমিউনিটির পাশাপাশি এই সাইটের ফোরামও আছে। ফোরাম ব্যাপারটা অনেক হেল্পফুল, যেটা ট্রাফিক বাড়াতে সাহায্য করে। এই আপডেটের সময় এমন দুটো সাইট দেখেছি, যেগুলোর ট্রাফিক কমা তো দূর কী বাত, ট্রাফিক আর উল্টো বেড়েছে। দেখা গেলো দু’টো সাইটেরই ফোরাম আছে। 

যেহেতু ফোরামের মধ্যে রিয়েল ইউজাররা কথাবার্তা বলে, সেহেতু এটা google এর জন্য অথেন্টিক সাইট হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পায়। যেহেতু ভালো রিয়েল ইনফরমেশন পাওয়া যায় এখান থেকে…

অর্থাৎ মোটকথা হলো গুগলের আপডেট থেকে বেঁচে থাকতে হলে আপনাকে কিছু কমন জিনিস করতে হবে। এখন থেকেই আপনার কাজ হলো—

প্রথমত, কোনো ছবি ব্যবহার করলে করতে হবে আপনার নিজের তোলা ছবি। যেটা ইন্টারনেটে অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না। 

দ্বিতীয়ত, একটা কমিউনিটি গড়ে তুলতে হবে। সেটা আপনি যে কোনো প্ল্যাটফর্ম দিয়ে শুরু করতে পারেন। হয়তো ফেসবুকে পেজ খুলতে পারেন, পিন্টারেস্টেও থাকতে পারেন, টুইটার instagram এসব জায়গায়ও আপনি আপনার কমিউনিটি গড়ে তুলতে পারেন।

একসাথে এতগুলো প্লাটফর্মে ঢুকতে না পারলেও, যে কোনো একটা অন্তত শুরু করুন। হয়তো ইউটিউবে একটা চ্যানেল খুলুন, ফেসবুকে একটা পেজ রাখুন। এগুলো কমন ব্যাপার।

অবশ্যই প্রত্যেকটা সাইটেরই একটা ফেসবুক পেইজ এবং একটা ইউটিউব চ্যানেল থাকা উচিত। এরপরে আপনি চাইলে ইনস্টাগ্রামেও থাকতে পারেন, পিন্টারেস্টেও থাকতে পারেন। পিন্টারেস্ট এখনকার সময়ে ভালো ট্রাফিকের একটা ভালো মাধ্যম।

কমিউনিটির পাশাপাশি আপনি একটা ফোরাম খুলতে পারেন। 

তৃতীয়ত,  এড এবং এফিলিয়েটের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে সাইড বিজনেস শুরু করুন। কিছু একটা করুন যেটা আপনার সাইটটাকে ইউনিক করে তুলবে। আশা করা যায় তাহলে গুগলের এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বেঁচে যেতে পারেন আপনিও!

Similar Posts