৭টি কুইক ট্রাফিক হ্যাক আপনার ওয়েবাসাইটের জন্য!

” কোয়ালিটিফুল আর্টিকেল ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য খুবই সুবিধাজনক একটি পথ “— এটা ওয়েবসাইট নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের সকলেরই জানার কথা। কিন্তু, পাশাপাশি এটাও সত্যি যে শুধুমাত্র কোয়ালিটিফুল কনটেন্ট দিয়েই ট্রাফিক বাড়ানোর স্বপ্ন দেখলে দীর্ঘমেয়াদী অপেক্ষা করতে হবে। ট্রাফিকের পরিমাণ আপ-ডাউন করতে করতে বছরখানেক পরে একটা উপযুক্ত পরিমাণ ট্রাফিক দেখতে পারবেন।

এত কষ্টের আলাপ সাইডে রেখে যদি ইনস্ট্যান্ট কিছু হ্যাকস জানা থাকে, যেগুলো ফলো করলে ইনস্ট্যান্ট কিছু ট্রাফিক আসবে তাহলে কেমন হয়?

তাহলে চলুন, এমনই সাতটি ট্রাফিক হ্যাক সম্পর্কে জানা যাক!

1.Proper Internal Link:

স্পেসিফিক কোনো টপিক সম্পর্কে জানার জন্য যখন গুগল করে কোনো আর্টিকেল বের করে পড়া শুরু করি তখন এই টপিক সম্পর্কিত আরো তথ্য বহুল আর্টিকেল চোখের সামনে নিমিষেই চলে আসলে ভালোই লাগে। একটা আর্টিকেলে ঢুকেই বহু ইনফরমেশন!  কষ্ট করে নতুন করে সার্চ করা লাগে না।

এই একই আর্টিকেলের ভেতর অন্য আর্টিকেলের লিংক দেয়াটাকেই বলা হয় ইন্টারনাল লিংক। আপনিও যদি এভাবে ইন্টারনাল লিংক করেন তাহলে এই ইন্টারনাল লিংকের কারণে রিডারের যেমন সুবিধা হবে, তেমনি সুবিধা হবে আপনারও!

ধরুন, একজন রিডার আসলো আপনার ওয়েবাসাইটে ” ক্যাট নিয়ে কিভাবে ট্রাভেল করা যায় ” এ সম্পর্কে আর্টিকেল পড়তে। পড়তে গিয়ে যদি সে তার সামনেই ক্যাট সম্পর্কিত আরো আর্টিকেলের লিংক পায় তাহলে তার সেই লিংকে ক্লিক করার সম্ভাবনা রয়েছে কয়েকগুণ!

কারণ, ইন্টারনাল লিংক করা না থাকে তাহলে রিডার যে পোস্ট পড়তে আসে শুধু সেটা পড়েই চলে যায়। কিন্তু ইন্টারনাল লিংক করা থাকলে আরো দু’চারটা পোস্ট পড়তে পারে, পড়ার সম্ভাবনা থাকে।

যদি ক্লিক করে কয়েকটা আর্টিকেল পড়ে ফেলে তাহলে কি হবে?

তাহলে আপনার লাভ হবে। পেইজ ভিউ বেড়ে যাবে। একজন রিডারই আপনার সাইটে আরো কিছুক্ষণ বেশি সময় ধরে থাকবে, কয়েকটা পোস্ট বেশি পড়বে। আপনার ট্রাফিকের পরিমাণও বেড়ে যাবে। 

কিন্তু সবসময় খেয়াল রাখতে হবে, যেনতেন জায়গায় ইন্টারনাল লিংক করলেই হবে না। প্রোপার ইন্টারনাল লিংক করতে হবে।

যেমন, আপনি আপনার ক্যাট সম্পর্কিত কোনো আর্টিকেলের মধ্যে ডগ সম্পর্কে কোনো আর্টিকেলের লিংক ঢুকিয়ে দিলেন। এখন যে ভিজিটর আপনার ওয়েবাসাইটে ক্যাট সম্পর্কে জানতে এসেছে সে নিশ্চয়ই ডগ নিয়ে আগ্রহী নয়। ক্যাট সম্পর্কিত কোনো তথ্যই তাকে আকর্ষণ করতে পারবে৷

সুতরাং প্রোপার ইন্টারনাল লিংক করুন, ট্রাফিকের পরিমাণ বাড়ান!

2. Quora Marketing:

আজকাল প্রশ্নোত্তরের জন্য Quora বেশ জনপ্রিয়। এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে আপনি বাড়াতে পারেন আপনার ওয়েবাসাইটের ট্রাফিক! এজন্য,

  • প্রথমে Quora তে গিয়ে আপনার নিশ সম্পর্কে সার্চ করুন।
  • এই টপিকে যেসব কোশ্চেন পাবেন সেগুলোর উত্তর দেবার চেষ্টা করুন।
  • প্রতি চারটা প্রশ্নের উত্তরের মধ্যে একটা উত্তরের নিচে আপনার ব্লগপোস্টের লিংক দিয়ে দিন। আন্সারের নিচে বলতে পারেন, কেউ যদি এ সম্পর্কে আরো জানতে চায় তাহলে যেন আপনার দেয়া লিংকটি ভিজিট করে। এতে আপনার ওয়েবাসাইটের ভিজিটর এবং ট্রাফিক— সবই বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রতি চারটা আন্সারের ভেতর একটাতে লিংক দিতে বলার কারণ হলো, আপনি যদি প্রতিটা আন্সারেই একটা করে লিংক ঢুকিয়ে দেন তাহলে Quora আপনার প্রোফাইলটি স্প্যাম হিসেবে কাউন্ট করতে পারে। জানেনই তো, আজকাল এসব সাইটগুলো একটু বেশিই কড়াকড়ি হয়ে যাচ্ছে! 

সুতরাং, এভাবে Quora তে প্রশ্নের উত্তর দিন আর নিজের সাইটের মার্কেটিং করুন!

3. YouTube Marketing:

একটা ওয়েবসাইটের সাথে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে একটা ইউটিউব চ্যানেল থাকা খুবই উপকারী। ইউটিউব থেকে ট্রাফিক খুবই বেশি আসে। ইউটিউব কনটেন্ট নিয়ে অনেকের সংকোচ থাকে, প্রশ্ন থাকে। যেমন—

  • ইউটিউবে কিভাবে ভিডিয়ো দেবো?

জরুরি না যে আপনার চেহারা দেখিয়েই ভিডিয়ো বানাতে হবে। আপনি চাইলে র‌্যান্ডম কিছু ভিডিয়ো ক্লিপের সাথে শুধু ভয়েসওভার দিয়ে ভিডিয়ো বানাতে পারেন, আপলোড করতে পারেন।

  • কোন বিষয়ে ভিডিয়ো বানাবো?

আপনার ওয়েবাসাইটে যে বিষয় নিয়ে ব্লগ লিখবেন ওই স্ক্রিপ্টটাকেই ঘুরিয়ে পেচিয়ে ভিডিয়োর জন্য উপযোগী করে তুলুন। ওই বিষয়ট নিয়েই বানিয়ে ফেলতে পারেন ভিডিয়ো! ইউটিউব চ্যানেলে ওয়েবসাইটের মার্কেটিং করুন এবং এভাবেই ইউটিউব মার্কেটিংয়ের মাধ্যমেও ট্রাফিকের পরিমাণ বাড়িয়ে ফেলুন।

(এছাড়া ইউটিউব ভিডিয়ো মেকিং সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে প্লেলিস্টটা দেখে আসতে পারেন।)

4. পুরোনো পোস্ট আপডেট করা:

Google Analytics এ গিয়ে চেক করবেন কোন কোন কীওয়ার্ডের জন্য কোনো আর্টিকেল গুগলের ফার্স্ট, সেকেন্ড বা থার্ড পেইজে আছে। এটা দেখানো জন্য Google Analytics এর সাথে Search Console এড থাকা লাগবে। (এসম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দেখে ফেলুন ভিডিয়ো।)  

সো, এরপরে কোন কীওয়ার্ডের জন্য আপনার সাইট দুই বা তিন নাম্বার পেইজে আছে সেগুলো দেখেন। দুই বা তিন নাম্বার পজিশনে থাকা মানে, গুগল আপনার সাইটটা ওই কীওয়ার্ডের জন্য দুই বা তিন নাম্বার পজিশনে নিয়ে গিয়েছে।

যদি আপনি এই পোস্ট গুলো আবার আপডেট করেন (যেমন— ওই পোস্টটা আরেকটু এডিট করা, আরো ইনফরমেশন এড করা, ওইটা সম্পর্কে কোনো ভিডিয়ো মেক করা) তাহলে ফার্স্ট পজিশনে চলে আসার সম্ভবনা বেড়ে যাবে। আর যদি ফার্স্ট পজিশনে চলে যেতেই পারেন, তাহলে অবশ্যই ট্রাফিক বাড়বে তড়তড় করে!

5. কীওয়ার্ড হ্যাক:

ধরুন, আপনি সার্চ করলেন কিভাবে একটা অফিস ডেক্স অর্গানাইজ করা যায়। কিন্তু, গুগলে এ সম্পর্কে বেশ কিছু মানুষ সার্চ করলেও এটা নিয়ে ভালো কোনো আর্টিকেল নেই। এজন্য এই কোয়শ্চনের রেজাল্টে গুগল মামা এই কোশ্চেনেরই সিমিলার কিছু পোস্ট উপরের দিকের পজিশনে রেখে দিয়েছে। এজন্য আপনি যদি এই কীওয়ার্ডটা নিয়ে ভালো একটা আর্টিকেল লেখেন তাহলে আপনার আর্টিকেলটা র‌্যাঙ্ক করার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

সো, আপনার ট্রাফিক বাড়ার সম্ভাবনাও বেশি! 

6. ব্লগপোস্ট লেখা:

যখন কোনো ব্লগপোস্ট লিখতে যাবেন তখন সেই টপিকটা গুগলে সার্চ করুন। তাহলে দেখবেন, পিপল অলসো আস্ক কোশ্চেনে ওই টপিক রিলেটেড অনেক কোশ্চেন পেয়ে যাবেন। যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন ওই কোশ্চেনগুলো আপনার ব্লগপোস্টে এড করতে।

এতে হবে কি, আপনার আর্টিকেলটা একটা পূর্ণাঙ্গ আর্টিকেল হবে এবং আপনি যে কীওয়ার্ড নিয়ে কাজ করতে গিয়েছিলেন সেটা বাদেও আরো অনেক কীওয়ার্ডের জন্য আপনার আর্টিকেলটা র‌্যাঙ্ক করবে। যদি এসব মেইনটেইন করে আর্টিকেল লিখতে বেশ অসুবিধা হয়ে যায় তাহলে কষ্ট না করে Writer’s Motion এ অর্ডার করতে পারেন কাঙ্ক্ষিত আর্টিকেল!

7. Headline:

ভালো একটা হেডলাইন লেখাও একটা আর্ট!

একই আর্টিকেল দু’টো ভিন্ন হেডলাইনের জন্য আলাদা আলাদা অর্থ বোঝাতে পারে। হেডলাইন লেখার ক্ষেত্রে এমন একটা লাইন মেইনটেইন করতে হবে যাতে হেডলাইনটা ক্লিকবিগ না হয়।

ক্লিকবিগ হচ্ছে, আপনি হেডলাইনে এমনকিছু লিখলেন যা আপনার আর্টিকেলের কানাকঞ্চিতেও নেই। শুধুমাত্র ভিজিটর পাবার জন্য একটা ফেইক হেডলাইন দিয়ে দিলেন। এটা হলো মানুষের সাথে প্রতারণা করা। এটা করা যাবে ন

  • তাহলে কিভাবে হেডলাইন লিখবো?

ধরুন, আপনি একটা আর্টিকেল লিখলেন এবং হেডলাইন দিলেন ” ViewSonic VK200M Monitor Review “

কিন্তু, একই আর্টিকেল আপনার পাশের জনও লিখলো এবং হেডলাইন দিলো, ” ViewSonic VK200M Monitor Review (An Honest Look) ।

সো এক্ষেত্রে আপনার চেয়ে আপনার পাশেরজনের হেডলাইনটাই কিন্তু অ্যাট্রাকটিভ এবং বেশি ভিউ পাওয়ার যোগ্য। এভাবে কিছু ট্রিক্স খাঁটিয়ে হেডলাইন লিখলে আপনার আর্টিকেলটি হয়ে উঠবে আকর্ষণীয়। এতে ভিজিটর বাড়ার পাশাপাশি ট্রাফিকের পরিমাণও বেড়ে যাবে।

এই ভালো হেডলাইন কিভাবে দেয়া যায় তা সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞান অর্জন করতে র‌্যাঙ্ক করা আর্টিকেলের হেডলাইন দেখুন নিয়মিত, অন্যরা কিভাবে লিখছে ইত্যাদি এবং এর পাশাপাশি চাইলে এ সম্পর্কে একটা কোর্সও করে ফেলতে পারেন।   তাহলে মোটামুটি ধারণা হবে কিভাবে একটা ভালো অ্যাট্রাকটিভ হেডলাইন লিখতে পারবেন।

সবশেষে, এই ছিলো সাতটি ট্রাফিক হ্যাক।

আশা করা যায়, কোয়ালিটিফুল কনটেন্টের পাশাপাশি যার যেকোনো একটা মাত্র ট্রাই করেও আপনার ট্রাফিকের পরিমাণ বাড়িয়ে ইনস্ট্যান্ট একটা উন্নতি দেখতে পারেন খুব দ্রুতই!

Similar Posts