niche site vs authority site

নিশ সাইট vs অথরিটি সাইটঃ কোনটা আপনার জন্য ভালো হবে?

আমি এই পোস্টে নিশ সাইট এবং অথরিটি সাইট দুটোরই ভালো মন্দ দিকগুলো নিয়ে কথা বলবো। দুটারই যেমন ভালো দিক আছে, ঠিক তেমন অসুবিধাও আছে। পুরা পোস্ট পড়ে আপনি বুঝতে পারবেন কোনটা আপনার জন্য বেশি ভালো হবে। চলুন শুরু করা যাক।

প্রথমে ছোট করে একটু বলে নিই নিশ সাইট আর অথরিটি সাইট বলতে আসলে কি বোঝায়। নিশ সাইট বলতে আসলে ছোট খাটো সাইট বোঝায়। এসব সাইটে কন্টেন্ট এর পরিমান বেশি না। পুরা সাইটই সাধারনত প্যাসিভ থাকে, মানে একবার আর্টিকেলগুলো লেখা হয়ে গেলে আপনার আর কোনো কাজ নেই। সাইট নিজের গতিতে আগাবে। অন্যদিকে অথরিটি সাইট বলতে বোঝায় অনেক বড় সাইট, যেগুলোতে শত শত কন্টেন্ট আছে। অথরিটি সাইটে প্যাসিভ ব্যাপারটা খুব কম থাকে। আপনাকে রেগুলার কাজ করতে হবে একটা অথরিটি সাইটের পেছনে যেমন সপ্তাহে ১টা বা ২টা কন্টেন্ট দেওয়া, ভিডিও বানানো ইত্যাদি।

যদি আরেকটু অন্যভাবে বলি, সব অথরিটি সাইটই শুরুর দিকে থাকে নিশ সাইট। নিশ সাইটকে আস্তে আস্তে বড় করলেই সেটা একসময় অথরিটি সাইট হয়ে যায়।

আমি আগেই বলেছি অথরিটি সাইট আর নিশ সাইট দুটোরই সুবিধা যেমন আছে, অসুবিধাও আছে। যেমনঃ

১। প্যাসিভ ইনকামে জন্য নিশ সাইট অসাধারন। আপনি যদি এমন কিছু করতে চান যে, কোনো একটা সাইটের পেছনে ২-৩ মাস সময় দেবেন, তারপর আর সেটা নিয়ে কোনো কাজ করবেন না সেক্ষেত্রে নিশ সাইট বেস্ট। নিশ সাইটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক (আমার মতে কমপক্ষে ৩০টা) কন্টেন্ট পাবলিশ করার পর আপনার আর কিছু করার তেমন দরকার পড়বেনা। সাইট নিজের গতিতে আগাবে, ইনকাম জেনারেট করতে থাকবে। আপনাকে শুধু ৪-৫ মাস পর পর সাইটের ব্যাকএন্ডে লগইন করে প্লাগইনগুলো আপডেট, স্প্যাম কমেন্ট ডিলিট এসব ছোটখাটো কাজ করতে হবে। কিন্তু একটি অথরিটি সাইটের ক্ষেত্রে তেমনটা হবেনা। ওখানে আপনাকে রেগুলার কাজ করতে হবে, কন্টেন্ট দিয়েই যেতে হবে। কোনো থামাথামি নাই।

২। অথরিটি সাইটের একটা মেজর সুবিধা হলো, এখান থেকে অনেক অনেক বেশি ইনকাম করা সম্ভব। তাছাড়াও ইনকামের জন্য অনেক অনেক পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় যেগুলোর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় হলো ইনফো প্রোডাক্ট সেল করা। ইনফো প্রোডাক্ট সেল করা বলতে বোঝাচ্ছি একটা ই-বুক, পডকাস্ট, ভিডিও টিউটোরিয়াল সিরিজ ইত্যাদি বানিয়ে সেগুলো সেল করা। একটা নিশ সাইটে ইনফো প্রোডাক্ট সেল করা গেলেও সেটা থেকে কনভার্সন খুব বেশি হবে না, যেমনটা হবে একটা অথরিটি সাইটে।

৩। যদিও আগের পয়েন্টে আমি বলেছি অথরিটি সাইট থেকে ইনফো প্রোডাক্ট সেল করে অনেক বেশি ইনকাম করা যায়, কিন্তু এতো ঝামেলাও আছে। আপনাকে প্রতিদিন কাস্টমার সাপোর্টের পেছনে সময় দিতে হবে, কাস্টমারদের সাথে কথা বলতে হবে, কেউ রিফান্ড চাইলে সেই রিফান্ড দিতে হবে, কোনো কাস্টমার সমস্যায় পড়লে সেটা সল্ভ করতে হবে ইত্যাদি। মোটকথা পুরা ব্যাপারটা আপনার জন্য একটা ফুলটাইম জবের মতো হয়ে যেতে পারে।

৪। নিশ সাইটের ক্ষেত্রে তেমন কোনো হার্ড কমিটমেন্টের দরকার পড়ে না। আপনি সাইটের পেছনে ৪-৫ মাস সময় দেন, কন্টেন্ট লেখেন, ব্যস আর তেমন কিছু না করলেও চলবে। কিন্তু একটা অথরিটি সাইট করার আগে অনেক হার্ড কমিটমেন্টের দরকার পড়ে। আপনাকে বুঝতে হবে এই সাইটটার উপর আপনাকে বছরের পর বছর কাজ করে যেতে হবে। হুট করে ভাবলাম কাজ করবো না আর তাহলে হবেনা।

৫। অথরিটি সাইটের ক্ষেত্রে অনেক বড় বড় কিওয়ার্ড টার্গেট করেও র‍্যাঙ্ক করা যায়। কিন্তু নিশ সাইটের ক্ষেত্রে আপনাকে ছোট থেকে শুরু করতে হবে। খুব স্পেসিফিক কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করতে হবে। একটা ছোট নিশ সাইট দিয়ে বড় বড় কিওয়ার্ড টার্গেট করে স্ট্যাবল র‍্যাঙ্কিং পাওয়া খুবই কঠিন ব্যাপার।

[sociallocker]

৬। নিশ সাইটের ক্ষেত্রে একটা মজার ব্যাপার হলো, খুব ছোট একটা টপিককে খুব ভালোভাবে কভার করা যায়। ঠিকমতো কভার করা গেলে অনেক অথরিটি সাইটও ওই টপিকে আর্টিকেল লিখলে র‍্যাঙ্কিং এ আপনিই এগিয়ে থাকবেন। ধরুন আপনার নিশ সাইট হলো Night Photography নিয়ে। এই টপিকে আপনার সাইট হলো বস। Night Photography এর উপর সব কিছু আপনার সাইট কভার করেছে, মানে আপনার সাইট পুরোপুরি Night Photography এর উপর ডেডিকেটেড। এখন ধরুন আরেকজনের একটা অথরিটি সাইট আছে পুরোপুরি Photography এর উপর। ধরুন সে তার সাইটে Night Photography নিয়ে একটি আর্টিকেল লিখলো। এখন গুগুল দেখবে, তার আর্টিকেলটা অথরিটি সাইট থেকে লেখা হলেও, আপনার সাইট পুরোপুরি Night Photography এর উপর ডেডিকেটেড। সেক্ষেত্রে গুগুল তার আর্টিকেল থেকে আপনারটাকেই হায়ার র‍্যাঙ্কিং দিবে।

৭। অথরিটি সাইটের ক্ষেত্রে একটা অন্যতম সুবিধা হলো আপনাকে শুধু গুগুলের অর্গ্যানিক ট্রাফিকের উপর নির্ভর করতে হবেনা। ধরুন কোনো কারনে আপনার সাইটে গুগুল থেকে কোনো ট্রাফিক আসছে না আর। একটা অথরিটি সাইটের ক্ষেত্রে সেটা মেজর কোনো সমস্যা না। কারন ট্রাফিকের আরো অনেক অনেক সোর্স থাকে একটা অথরিটি সাইটে যেমন, ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল, টুইটার একাউন্ট, ইন্সটাগ্রাম একাউন্ট ইত্যাদি। তবে নিশ সাইটের ক্ষেত্রে এটা একটা মেজর সমস্যা হবে কারন সাধারনত নিশ সাইটের ট্রাফিকের মেইন সোর্স থাকে গুগুলের অর্গ্যানিক ট্রাফিক।

৮। সবশেষে যেটা বলবো তা হলো, অথরিটি সাইট হলো অনেকটা ফুলটাইম জবের মতো। ওটার পেছনে আপনাকে রেগুলার সময় দিতে হবে, কাজ করতে হবে। অন্যদিকে নিশ সাইট হলো প্রজেক্টের মতো। আমরা একটা প্রজেক্টের পেছনে কয়েক মাস সময় দিয়ে যেমন নতুন প্রজেক্ট শুরু করতে পারি, নিশ সাইট ঠিক তাই। আপনি একটা নিশ সাইট এর পেছনে কয়েক মাস সময় দিয়ে সেটা রেডি করে পরে আরেকটা নিশ সাইটের কাজ শুরু করে দিতে পারেন।

আমি যেটা করে থাকি

আমি প্রথমে একটা নিশ সাইট দিয়েই শুরু করতে পছন্দ করি। কারন তখন বাজেট বেশি থাকেনা। আমি টার্গেট করি মোটামোটি ৩০-৩৫ টা কন্টেন্ট দেবার। কন্টেন্ট দেবার পর ৫-৬ মাস অপেক্ষা করি। যদি দেখি সাইট থেকে ইনকাম আসা শুরু হয়েছে, তাহলে সেই ইনকামটাই আমি আবার রি-ইনভেস্ট করে কন্টেন্ট এর পেছনে। এভাবে একটা নিশ সাইটকে আস্তে আস্তে বড় করা যায়। এভাবে করলে রিস্ক ফ্যাক্টরটাও আমার মতে অনেক কমে আসে।

[/sociallocker]

Similar Posts

2 Comments

  1. অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার জানতে পারলাম আপনার এই পোস্টটা পড়ে আশা করি আপনি আপনার লেখা অব্যাহত রাখবেন যাতে আমরা আরো অনেক কিছু জানতে পারি.

Comments are closed.