আপনার ব্লগের জন্য On page SEO কিছু  অসাধারণ টিপস!

কিছু On Page SEO Tips জেনে নেয়া যাক। হতে পারে এগুলোর কিছু আপনি জানতেন, অথবা অনেকটাই জানেন না। নতুন করে জানলেও ক্ষতি নেই! 

On Page SEO Tips মানে হচ্ছে — এই SEO গুলো আপনি আপনার সাইটে ব্যবহার করবেন। Off Page SEO না। চলুন দশটি টিপস জেনে নেয়া যাক!

Site Speed:

আপনার সাইটের স্পিড ভালো হতে হবে— এই কথাটা আপনি অবশ্যই জানেন। কিন্তু, কীভাবে ভালো স্পিড পাওয়া যাবে, সেটা কী জানেন? 

ভালো স্পিড পাবার জন্য — 

  • ভালো হোস্টিং থাকতে হবে। এটা ভালো স্পিড পাবার ক্ষেত্রে অনেক উপকারী। প্রিমিয়াম হোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে Site Down, WPx হোস্টিং দুটোর মধ্যে একটা ব্যবহার করতে পারেন।  NameCheap থাকলেও মোটামুটি চলে যাবে। 
  • একটা ভালো থিম থাকতে হবে। ভালো থিম মানে এই না যে, থিমটা প্রিমিয়াম হতে হবে। কিছু ফ্রী থিম দিয়েও আপনি শুরু করতে পারেন, যেগুলো বেশ ভালো! 
  • প্লাগইন যত কম পারা যায়, তত কম ব্যবহার করা উচিত। যে কাজটা প্লাগইন ছাড়া করা যায় সেটা প্লাগইন ছাড়াই করে ফেলার চেষ্টা করবেন। 

যেমন, অনেকেই  Google Analytics, Google search console এসব ইনডিকেট করার জন্য প্লাগইন ব্যবহার করে। কিন্তু এগুলো প্লাগইন ছাড়াই করে ফেলা যায়। 

কম প্লাগইন ব্যবহার করলে সাইটটা হালকা থাকে। স্পিড ভালো থাকে। 

স্পিড ভালো রাখার জন্য যেসব প্রিমিয়াম প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন— WPRocket , EWWW Image Optimizer এসব ।  সাথে Popcorn theme টা ব্যবহার করতে পারেন। এতে সাইটের স্পিড ভালো হবে। 

বিগিনার হিসেবে যদি আপনার এই প্রিমিয়াম প্লাগইন ও থিম ব্যবহার করতে অসুবিধা হয় তাহলে আপনার জন্য রয়েছে WordPress Management Service  যেটি নিলে এই প্লাগইন ও থিম সহ অনেক প্রিমিয়াম কিছুই পেয়ে যাবেন ফ্রি-তে! 

Feature Snippet :

আপনি যদি অল্প কিছুদিন আগেও ব্লগিংয়ের দুনিয়ায় এসে থাকেন, তাহলেও এই Featured Snippet সম্পর্কে জানার কথা। 

ধরুন,  কেউ প্রশ্ন করলো— What is the perfect temperature to grow tomatoes? ।  তখন সে গুগলে অর্গানিক রেজাল্ট তো পাবেই, এছাড়াও একদম ওপরে গুগল একটা Snippet দেয়। 

যেটায় প্রশ্নের ছোট একটা পারফেক্ট উত্তর কোনো ওয়েবসাইট লিখে থাকলে, সেটা দেয়া থাকে এবং দেখায় যে গুগল এটা কোন ওয়েবসাইট থেকে নিয়েছে।  এই পুরোটা একটা Snippet আকারে থাকে। এটাকে বলা হয় – Zero Position। 

Feature Snippet এ আসলে লাভ কী?

দেখা গেল, ” What is the perfect temperature to grow tomatoes? ” প্রশ্নটা নিয়ে অনেক কম্পিটিশন আছে। কিন্তু  এরমধ্যে যদি আপনি দুই-তিন লাইনের মধ্যে এই প্রশ্নটার একটা পারফেক্ট উত্তর লিখতে পারেন, তাহলে গুগল আপনাকে Feature Snippet দিতে পারে। 

আপনার যদি একটা কোশ্চেন কী-ওয়ার্ড থাকে, তাহলে আন্সারটা একদম শর্ট করে গুছিয়ে ছোট আকারে লিখতে হবে আর্টিকেলের শুরুর দিকে। সেকেন্ড প্যারা’তে লেখা ভালো। লেখার পরে প্যারাটা বোল্ড করতে পারেন। এভাবে আপনার Feature Snippet পাবার চান্স আছে।  আন্সার প্যারাগ্রাফ লেখার ব্যাপারে কিছু ব্যাপার লক্ষনীয়—

  • আন্সার প্যারাগ্রাফটা উইকিপিডিয়া স্টাইলের টোন ব্যবহার করে লিখবেন। 
  • Yes, No, Maybe ইত্যাদি শব্দ দিয়ে শুরু করা অনুচিত। 
  • প্যারাগ্রাফটা শর্ট এবং গোছানো হতে হবে।

Feature Snippet পেলে আপনি সব প্রতিযোগিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একদম জিরো পজিশনে চলে আসতে পারবেন। এজন্য প্রত্যেকটা আর্টিকেল Feature Snippet এর জন্য অপটিমাইজ করা জরুরি।  

Feature Snippet নিয়ে বিস্তারিত জানতে ও শিখতে চাইলে করে ফেলুন কোর্সটি! 

Schema Markup :

Sche হলো— একটা এডিশনাল কোট, যেটা আপনার ওয়েবসাইটে প্রত্যেকটা পেইজে থাকবে। যে কোট’টা গুগলকে বোঝাবে— একটা পার্টিকুলার পেইজ কিসের ওপরে তৈরী করা হয়েছে।  

যেমন- Article Schema।  এটা ব্যবহার করা হয়- প্রত্যেকটা আর্টিকেলেই। যার ফলে গুগল বোঝে যে, এটা একটা ব্লগপোস্ট।  

এরপরে আছে- Video Schema।  এটা দিলে গুগল বুঝবে যে, এই পেইজে একটা ভিডিয়ো আছে। 

আরো আছে- Product Schema বা Product Review Schema।    যেটা গুগলকে বোঝায় যে, এই পেইজে কোনো প্রোডাক্ট বা প্রোডাক্ট রিভিউ নিয়ে কথা বলা হয়েছে।  

বর্তমানে এই Schema গুলো আপনার ওয়েবসাইটে থাকা খুবই জরুরি। Schema কীভাবে দেবেন— এর বেশ কিছু ফ্রী সল্যুশনস আছে। তবে এক্ষেত্রে RankMath ব্যবহার করতে পারেন। RankMath এর প্রো ভার্সনটা নিলে ওরাই আপনাকে সবগুলোতে অটোমেটিক Schema দিয়ে দেয়। Video থাকলে Video Schema, Products থাকলে Product Schema ইত্যাদি দিয়ে দেয়। সুতরাং আপনি থাকতে পারেন চিন্তামুক্ত! 

তবে, কথা উঠতে পারে যে— RankMath তো বেশ দামী ব্যাপার-স্যাপার! এতে তো প্রতি মাস বা বছরে কিছু পয়সা খরচ করতেই হবে। তাহলে এক্ষেত্রে আপনার জন্য সমাধান হচ্ছে — WordPress Management Service।  এই সার্ভিসটি নিলে আপনার আর আলাদা করে RankMath এর পেছনে টাকা খরচের জন্য চিন্তা করতে হবে না। আপনাকে প্রিমিয়াম ভার্সনের লাইফটাইম এক্সেস দেয়া হবে। 

 এসব Schema বাদেও একটি Schema হচ্ছে — FAQ Schema!  অর্থাৎ, Frequently Ask Question Schema। যেটা বর্তমানে ব্লগাররা খুব বেশি ব্যবহার করছে। স্পেসেফিক্যালি, পুরোনো কন্টেন্ট আপডেট করার সময় একটা FAQ Schema ব্যবহার করা হয়। 

মূল ব্যাপার হলো— আপনার একটা কন্টেন্ট আছে এবং আপনি সেটায় একটা FAQ যুক্ত করতে চান। যেমন- একটা কোশ্শেন তারপরে একটা আন্সার, আবার একটা কোশ্শেন তারপরে একটা আন্সার… এভাবে দিতে চাচ্ছেন।  

আগেও এটা করা হতো, কিন্তু কোনো Schema ব্যবহার করা হতো না। তবে এখন  Schema ব্যবহার করাটা ব্লগারদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। আপনিও করতে পারেন। RankMath দিয়ে খুব সহজেই করে ফেলা যায়। এটা করলে আপনার On Page SEO একটা এক্সট্রা বুস্ট পাবে। 

 পুরোনো কন্টেন্ট আপডেট করা:

আমরা শুধু দিনের পর দিন কন্টেন্ট দিয়েই যাই। কিন্তু, বহুসময় পর যে পেছনে কিছু কন্টেন্ট পুরোনো হয়ে যায় — সেগুলোর দিকে আর নজর দিইনা। এতে পুরোনো কন্টেন্ট গুলো আমাদের সাইটে ট্রাফিক দেয়া কমিয়ে দেয়। 

এজন্য উচিত কিছু দিন পরপর পুরোনো কন্টেন্ট আপডেট করা। কীভাবে বুঝবেন, কোন কন্টেন্টটা আপডেট করতে হবে? কীভাবে আপডেট করতে হবে? 

এগুলো বিস্তারিত জানতে চাইলে দেখে আসতে পারেন এই ভিডিয়োটি

কন্টেন্ট আপডেট করার সময় খেয়াল রাখবেন-

  • কন্টেন্টের টাইটেলটা যাতে 60-65 ক্যারেক্টরের মধ্যে থাকে। 
  • আর্টিকেলের Readability ঠিক আছে কি-না। 
  • কোনো প্যারাগ্রাফ তিন-চার লাইনের বেশি হওয়া উচিত না। 
  • Extra Subheading যুক্ত করা যায় কি-না। করা গেলে যুক্ত করবেন। এতে আর্টিকেলটা পরিপক্ব হয়। 
  • অরিজিনাল ছবি ব্যবহার করা। এমন ছবি, যেটা আপনি নিজের হাতে তুলেছেন। অথবা অন্য কারো কাছ থেকে ফ্রি-তে বা টাকা দিয়ে নিয়েছেন।  যেন ছবিটা দেখলেই বোঝা যায়, ছবিটা একদম অথেনটিক।

অরিজিনাল ছবি নিজে তুলতে পারলে ভালো। যদি প্রোডাক্টটি আপনার কাছে না থাকে তাহলে প্রোডাক্টের ছবি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে কালেক্ট করবেন। কোনো বন্ধুর কাছ থেকে,  রিলেটেড নিশের ফেসবুক গ্রুপ ইত্যাদি মাধ্যম থেকে কালেক্ট করবেন।  

এসব জায়গায় না পেলে স্টক ইমেজের দিকে আগাতে পারেন। স্টক ইমেজ ব্যবহার করলে চেষ্টা করবেন সেটাও একটু এডিট করে দেয়ার জন্য, তাহলে ভালো হয়।  

  •  প্রতিটা আর্টিকেলে Relevant YouTube Video Embed করতে পারেন। 
  • বেশি বেশি ইন্টারনাল লিংক করতে হবে। প্রোপার ইন্টারনাল লিংক করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ।  যে পোস্টটা আপনি আপডেট করবেন, সেটা থেকে অন্যান্য পোস্টে ইন্টারনাল লিংক করবেন। আবার, অন্যান্য পোস্ট থেকে আপডেটকৃত পোস্টে ইন্টারনাল লিংক করবেন। 

ছোট সাইটের ক্ষেত্রে ম্যানুয়ালি ইন্টারনাল লিংক করা যায়। কিন্তু, বড় সাইট হলে প্লাগইন ব্যবহার করে করাটা সহজ। ম্যানুয়ালি করাটা বেশ কঠিন। 

ইন্টারনাল লিংক করার জন্য Link Whisper ব্যবহার করতে পারেন। এটা ব্যবহার করতে একটু টাকা পয়সা খরচ করতে হয়। এর বিকল্প হিসেবে LinkC ব্যবহার করতে পারেন। 

SEO এর ক্ষেত্রে Internal Link করাটা খুবই আন্ডাররেটেড। খুব একটা গুরুত্ব দেয়া হয়না। কিন্তু এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।  ইন্টারনাল লিংকের ব্যাপারটা এমন যে, আপনার ওয়েবসাইট নিজেই নিজেকে ব্যাকলিংক দিচ্ছে।  

দেখুন, ওয়েবসাইটের টেকনিক্যাল কোনো সমস্যা আছে কি-না:

এটা দেখার জন্য আপনি আপনার ওয়েবসাইটের Google Search Console এ যাবেন। Search Console এর বাম দিকে অনেক গুলো অপশন থাকে। এরমধ্যে একটা সেকশন আছে— Experience নামের। এই Experience অপশনের নিচে তিনটা রিপোর্ট থাকবে। 

  1. Repore
  2. Core Vital Report
  3. Page experience Report

এই প্রতিটা রিপোর্টে গেলেই প্রতিটার ডিটেইলস আপনি পাবেন। মূলত দেখাবে— কত গুলো URL Poor, কতগুলো URL  ভালো, কতগুলো URL এর ইমপ্রুভমেন্ট প্রয়োজন ইত্যাদি। 

যদি এমন দেখায় যে, অনেক গুলো URL Poor অবস্থায় আছে বা রেডমার্ক করা আছে, তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার ওয়েবসাইট কোনো একটা টেকনিক্যাল সমস্যায় আছে। সমস্যা অনুযায়ী সমাধান করতে হবে। অনেক সময় এমন টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে পোস্ট গুলো গুগল ইনডেক্স যায় না।  

E.E.A.T স্ট্যাবলিশ করা: 

আগে আমরা জানতাম- E.A.T।  যেটা দিয়ে বোঝাতো— Expertise Authorititiveness Trustworthiness।  এখন গুগল আরেকটা E যোগ করেছে। যেটা দিয়ে বোঝায় – Experience। 

আপনার সাইটে E.E.A.T আনার জন্য বেশ কয়েকটা টিপস আছে। যেমন- 

  • প্রতিটা পোস্টের নিচে একটা Author Bio সেকশন রাখবেন। এখানে নিজের ছবি দেবেন। নিজেকে নিয়ে কয়েক লাইনের বর্ননা লিখবেন। 
  • Author Bio থেকে আরেকটা পেইজে লিংক করবেন। যেটার নাম হবে- About Author Page।  যেখানে গেলে Author সম্পর্কে পুরো ডিটেইলস জানা যাবে। 
  • এসবের পাশাপাশি একটা About Site Page রাখবেন। এখানে আপনার ওয়েবসাইটের আদ্যোপান্ত লিখবেন। কেন এটার জন্ম, এর উদ্দেশ্য কী  ইত্যাদি।
  • ওয়েবসাইটের ফুটওয়্যারে NAC Information   দিবেন। NAC হলো—  Name, Address, Contact। 

নিজের নাম, এড্রেস, ইমেইল, নাম্বার ইত্যাদি শেয়ার করবেন। 

এই ব্যাপার গুলো প্রমাণ করে যে, আপনার সাইটটা পুরোদস্তুর একজন মানুষ চালাচ্ছে, কোনো রোবট একে নিয়ন্ত্রণ করছে না। সুতরাং, আপনার সাইটে ব্যবহার করার জন্য এই টিপস গুলো ভালো লাগলে কাজে লাগিয়ে ফেলুন আজই!

Similar Posts