যে চারটি নিশকে AI কখনোই কাবু করতে পারবে না!

AI এর ভয়াল থাবা সব জায়গায় যেহেতু পড়ছে, আজকাল অনেকেই ভয় আছে যে — কোন নিশ নিয়ে কাজ করব, আর কোনটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে! 

এজন্য এখানে আমরা কথা বলবো এমন চারটা নিশ নিয়ে, যেগুলো নিয়ে কাজ করলে আশা করা যায় আপনার সাইট ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, এ আই আপনাকে ওভারটেক করতে পারবে না — বরঞ্চ আশা করা যায়, আপনি AI এর থেকে কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবেন। 

বলে রাখা ভালো এই চারটে নিশের প্রত্যেকটাই একটু কঠিন নিশ। অন্যান্য নিশের তুলনায় এই নিশ গুলোতে কাজ করতে হলে আপনাকে একটু বেশি পরিশ্রম করতে হবে। 

কিন্তু, যদি একটু পরিশ্রম করে এইসব নিশের ওপরে আপনার একটা সাইট দাঁড় করাতে পারেন, তাহলে অনেক বেশিই ভরসা রাখা যায় যে— AI এসে আপনার সাইটটাকে ওভারটেক করতে পারবে না বা আপনার বিজনেসটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে না। 

1.Affiliate / Review Content :

এই নিশের নামটা শোনার শুরুতেই মনে হতে পারে যে, এটা আর কেমন গুরুত্বপূর্ণ নিশ! AI কে কমান্ড করলেই তো যেকোনো রিভিউ কন্টেন্ট লিখে দিতে পারে! 

কিন্তু, এখানে আসলে ওই ধরনের আর্টিফিশিয়াল রিভিউয়ের কথা বলা হয়নি। একদম অরিজিনাল রিভিউয়ের  কথা বলছি। অর্থাৎ রিভিউটা এমন হতে হবে যে, প্রোডাক্টটা আপনি নিজে ব্যবহার করেছেন বা আপনি নিজে ব্যবহার করতে পারবেন।

এজন্য রিভিউতে অবশ্যই প্রোডাক্টের অথেন্টিক ছবি ব্যবহার করবেন,  আনবক্সিং এর সময় ছবি তুলবেন, প্রোডাক্টটা কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটার একটা পরিপূর্ণ ছবি ব্যবহার করবেন। 

প্রডাক্ট ব্যবহারের সত্যিকারের উপকারিতা, অপকারিতা ইত্যাদি ব্যাখ্যা করবেন। দরকার হলে প্রোডাক্টটা নিয়ে নিজে একটা ভিডিও বানাবেন। সেটাও রিভিউতে অ্যাটাচ করে দেবেন। যেন রিভিউ টা পড়লে মনে হয় যে, আপনি নিজে অনেকদিন ধরে প্রোডাক্টটা ব্যবহার করেছেন, তারপরে রিভিউটা লিখেছেন।

এই ধরনের রিভিউ কখনো AIbওভারটেক করতে পারে না। কারণ রিভিউতে ব্যবহারকৃত ছবিগুলো বা ভিডিওগুলো আপনি ছাড়া দুনিয়ার আর কারো কাছে নেই! স্বয়ং AI বাবাজির কাছেও না!

প্রশ্ন হতে পারে, বাংলাদেশে বসে অ্যামাজনের প্রোডাক্টের অ্যাকসেস তো পাওয়া যায় না।  তাহলে কি করব?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা অ্যামাজনের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করি। কিন্তু, বাংলাদেশে অ্যামাজন কাজ করে না।  তাই বাংলাদেশে বসে amazon এর প্রোডাক্ট হাতে পাওয়ার সম্ভাবনাও কম। 

এজন্য আপনি এমন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে পারেন যেগুলো ধরাছোঁয়ার ব্যাপার নেই। এক্ষেত্রে আপনি সফটওয়্যার রিভিউ করতে পারেন।।  সফটওয়্যার এর বেলায়, প্রথমে আপনি সফটওয়্যার টা কিনবেন। তারপরে এই সফটওয়্যার এর খুঁটিনাটি যা কিছু আছে সবকিছু আপনি এমন ভাবে রিভিউ করবেন যেন অথেন্টিক মনে হয়, পড়তে আরাম লাগে।

এবারও- নিজের ছবি দিয়ে, ভিডিও দিয়ে, আপনি কাজ করছেন সফটওয়্যারটা তে এমন প্রমাণাদি রেখে — তারপরে রিভিউটা লিখতে হবে। 

2.News / Entertainment :

এক্ষেত্রে আপনি কোনো নিশের নিউজ অথবা এন্টারটেইনমেন্ট নিয়ে কথাবার্তা বলবেন। কিন্তু এই নিশে যাওয়ার সমস্যা হলো, এই নিশটা কখনোই সম্পূর্ণ প্যাসিভ হবে না। 

যেহেতু এটি নিউজ রিলেটেড নিশ সুতরাং আপনাকে প্রতিদিন বা প্রতি সপ্তাহে কাজ করেই যেতে হবে। এটা দিয়ে কোন প্যাসিভ ইনকাম আসবে না।

তবে এটার একটা ভালো দিক হচ্ছে, এই নিশের ব্যাপারে AI খুব একটা কর্তৃত্ব ফলাতে পারে না। কারণ, AI আপনাকে একদম রিয়েল টাইম নিউজ দিতে পারবে না। সেক্ষেত্রে এখানে সম্পূর্ণ কর্তৃত্বটাই আপনার হাতে রইলো।

সুতরাং, এই জিনিসটা নিয়ে কাজ করলে আপনি AI  এর থেকে অনেকটা এগিয়ে থাকবেন। যেহেতু AI এখন পর্যন্ত এত রিয়েল টাইম আপডেটেড কনটেন্ট জেনারেট করতে পারে না।

3. Troubleshooting Tech :

অসংখ্য প্রোডাক্ট আছে যেগুলো ব্যবহার করতে গিয়ে অধিকাংশ মানুষ অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়। যেমন কেউ কোনো একটা মাইক্রোফোন ইউজ করতে গিয়ে এমন সমস্যার সম্মুখীন হলো যে—  তার কথা শোনা যাচ্ছে না অথবা মাইক্রোফোনটা ভালোভাবে কাজ করছে না। অথবা যে কোন কিছু। 

এমন সমস্যার সমাধান তারা যখন কোথাও খুঁজে পান না, তখন বিভিন্ন সময় ওই প্রোডাক্ট রিলেটেড সমস্যার সমাধান খুঁজতে  গুগলের শরণাপন্ন হন। সেহেতু এই জিনিসটা আপনার জন্য একটা ভালো উপায় হতে পারে AI কে টেক্কা  দেয়ার জন্য।

এজন্য আপনি বিভিন্ন প্রোডাক্টগুলোর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা খুঁজে বের করে, সেগুলোর কারণ এবং সমাধান নিয়ে লিখতে পারেন। প্রয়োজন হলে সমস্যাগুলো কি কি ধাপে সমাধান করা যায়, সেই ধাপগুলোর ছবি স্টেপ বাই স্টেপ তুলে দিতে পারেন।

এই নিশের সাথে কাজ করার একটা ভালো দিক হচ্ছে, আপনি যখন স্টেপ বাই স্টেপ কোনো প্রোডাক্টের সমস্যা এবং সমাধান নিয়ে লিখবেন, সেটা কিন্তু একটু অথেন্টিক হবে। এই ব্যাপার গুলো কোন ChatGPT বা AI আপনাকে লিখে দিতে পারবে না।  

কারণ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স গুলো এমন সমস্যার সমাধান স্টেপ বাই স্টেপ জানেনা। সুতরাং এক্ষেত্রেও আপনি এগিয়ে থাকলেন। 

এই সমস্যাগুলো যে কোনো প্রোডাক্টের হতে পারে। অথবা কোন সফটওয়্যারেরও হতে পারে অথবা যেকোনো কিছুর হতে পারে! 

এজন্য আপনি এই নিশ নিয়ে কাজ করার সময় একটা প্যাটার্ন ফলো করবেন।  একটা নির্দিষ্ট নিশ নিয়ে কাজ করবেন।  অর্থাৎ আপনি একটা আর্টিকেল লিখলেন মাইক্রোফোনের সমস্যা নিয়ে, আবার একটা আর্টিকেল লিখলেন একটা সফটওয়্যার নিয়ে — ব্যাপারটা এমন জগাখিচুড়ি করবেন না। 

যদি আপনি সফটওয়্যার নিয়ে আগাতে চান তাহলে সফটওয়্যার নিয়েই কাজ করুন। অথবা যদি বিভিন্ন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে সেগুলো নিয়েই আগান। এক্ষেত্রেও আপনি অবশ্যই AI এর থেকে অনেকটা গিয়ে থাকবেন!

4. DIY:

DIY এর মানে হচ্ছে — Do It Yourself।  

এই নিশটা প্রোডাক্টিভ মানুষজনদের জন্য। যারা ঘরের বিভিন্ন দরকারি জিনিসপত্র নিজের হাতে তৈরি করে থাকেন, বিভিন্ন টেকনিক ব্যবহার করে — তারা এই নিশটা নিয়ে কাজ করতে পারেন।  

ধরুন বাজারে একটা পণ্য কিনতে পাওয়া গেল, কিন্তু সেটার আকাশচুম্বী দাম! 

জিনিসটা দেখতে সুন্দর, কিনতে লোভ হচ্ছে৷ জিনিসটা হতে পারে ঘর সাজানোর বস্তু, একটা ঝাড়বাতি অথবা ড্রিম ক্যাচার।  

কিন্তু, আকাশচুম্বী দাম এড়ানোর জন্য সেটা আপনি ঘরে বসেই ঘরের কিছু জিনিসপত্র দিয়েই হোমমেড বানিয়ে ফেলতে পারেন। 

এমন হলে এই নিশটা নিয়ে আপনি কাজ করতে পারেন। কারণ, AI কখনোই এই নিশটা প্রডিউস করতে পারবে না। এই নিশের ব্যাপারে AI বড়জোর আপনাকে আইডিয়া দিতে পারবে। কিন্তু স্টেপ বাই স্টেপ প্রক্রিয়াগুলো লিখে দেখাতে পারবে না। 

যদি ভবিষ্যতে এমন একটি সুন্দর আর্টিকেল AI লিখতেও পারে, তবুও এক জায়গায় শূন্যস্থান থেকেই যাবে। কারণ, এমন নিশ নিয়ে কাজ করতে হলে প্রত্যেকটা স্টেপ বাই স্টেপ ছবি লাগবে। 

আপনি কিভাবে একটা পণ্য বানাচ্ছেন, কি কি ব্যবহার করছেন, কোনটার পর কোন ধাপে যাচ্ছেন— এমন প্রত্যেকটা প্রোডাক্ট,  প্রত্যেকটা ধাপের ছবি দিতে হবে। 

সুতরাং এই ছবিগুলো অবশ্যই AI এর কাছে থাকবে না। তাই এই নিশ নিয়ে কাজ করলেও আপনি অনেক এগিয়ে থাকবেন। তবে এই নিশটা সবার জন্য না। শুধুমাত্র যারা ক্রিয়েটিভ, নতুন নতুন কিছু চিন্তা করার ক্ষমতা রাখেন তাদের জন্য।

এই হলো চারটি নিশ— ধারণা করা হয় এই নিশ গুলোকে AI কখনোই ওভারটেক করতে পারবে না। তাই, আপনি চাইলে অবশ্যই এই নিশগুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন!

Similar Posts