কখন আপনার আরেকটা ওয়েবসাইট বানানো উচিত?

একটা আলাদীনের চেরাগ পাবার পরে আরেকটা পেতে মন চাইবে— এটাই স্বাভাবিক।

ঠিক এভাবেই, একটা ওয়েবসাইট বানানোর কিছুদিন পরেই ইচ্ছে করে নতুন আরেকটা ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেলতে। ইচ্ছের মর্যাদা দিয়ে অনেকে বানিয়েও ফেলেন। এরপর হয় কী-  তিন-চারটা ওয়েবসাইটের মালিক হোন ঠিকই। কিন্তু, কোনো ওয়েবসাইটকেই ঠিকঠাক মত বড় করতে পারেন না। এই মাল্টিপল ওয়েবসাইট সিনড্রোমের ব্যাপক সমস্যা রয়েছে।

Need to understand more about Blogging? This post might help you. ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, যা প্রতিটি ব্লগারের ফলো করা উচিত! 

আপনার কী আসলেই মাল্টিপল ওয়েবসাইট বানানো উচিত?

অনেকে মনে করেন, মাল্টিপল ওয়েবসাইট থাকলে কোনো একটা ওয়েবসাইটের দিকেই ভালো ভাবে খেয়াল রাখা হয় না৷ এতে জগাখিচুরি অবস্থা হয়ে যায়। এজন্য যেকোনো একটা ওয়েবসাইট নিয়েই থাকা উচিত৷

আসলেই কী তাই?

হতে পারে কিছু ক্ষেত্রে তা-ই!  কিন্তু, শুধুমাত্র একটা ওয়েবসাইট নিয়ে পড়ে থাকার কিছু অসুবিধা’ও আছে। ধরুন, আপনার একটাই মাত্র ওয়েবসাইট আছে। কিন্তু, কিছু কারণে হুট করে গুগল আপনার ওই একমাত্র ওয়েবসাইটটাকেই পেনাল্টি দিয়ে দিলো। কি করবেন আপনি?

এক্ষেত্রে আপনি গুগলের কাছে জবাবদিহিতা চাইতে পারবেন না। তাহলে কি করবেন?

এই ব্যাপারটা ঠিক এমন যে, আপনার কাছে দশটা ডিম ছিলো। আপনি দশটা ডিমই একটা মাত্র ঝুড়িতে রেখে দিয়েছেন। হঠাৎ, ঝুড়িটা পড়ে ভেঙে গেলো। তার সাথে সেই দশটা ডিমও। আপনার আর কোনো ডিমই বাকী রইল না। যদি আপনি পাঁচটা ডিম মাথা খাটিয়ে অন্য ঝুড়িতে সরিয়ে রাখতেন তাহলে ব্যাপারটা নিশ্চয়ই এত মর্মান্তিক হতো না, রাইট?

এজন্যই বলা হয়, ” Don’t put all your eggs in baskets! “

অর্থাৎ, আপনার ইনকামসোর্স শুধুমাত্র একটা না রেখে পাশাপাশি আরো ইনকামসোর্স রাখা উচিত। এতে করে যেকোনো একটা ইনকাম সোর্সের ওপর তালা ঝুললেও বাকীগুলো যেন খোলা থাকে এবং আপনাকে সচল রাখে। 

এই কারণে, যেকোনো একটা ওয়েবসাইটের ওপর নির্ভরশীল থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

একসাথে অনেক গুলো ওয়েবসাইট বানাতে ক্ষতি কী?

ক্ষতি আছে। লাগাতার কয়েকটা ওয়েবসাইট বানালে আপনি কোনোটাতে ফোকাস করতে পারবেন না। একেকটা ওয়েবসাইটের পেছনে নূন্যতম কিছু সময় ইনভেস্ট করা জরুরি৷ একসাথে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আপনি ভাবতে পারবেন না। মনে রাখবেন- আপনি মানুষ, অবশ্যই রোবট না!

তাহলে সল্যুশন কী?

সল্যুশন খুবই সহজ। আপনি যখন একটা ওয়েবসাইট বানাবেন তখন সেটা একটা পর্যায়ে না পৌঁছানো অবধি সেটার পেছনেই সময় দিন।  পর্যায়টা হতে পারে, মাসে এক হাজার ডলার ইনকাম করা অবধি। অর্থাৎ, আপনার ওয়েবাসাইট দিয়ে মাসে নূন্যতম এক হাজার ডলার আয় করতে পারা পর্যন্ত ওই ওয়েবসাইটের পেছনে মনযোগ ঢেলে দিন।

কারণ, যখন আপনার ওয়েবাসাইট আপনাকে মান্থলি এক হাজার ডলার দিতে পারছে, তখন ধরে নিন আপনার ওয়েবাসাইটটি একটা স্টেবল জায়গায় পৌঁছে গেছে। এরপর আপনি ওই ওয়েবসাইট রেখে, নতুন আরেকটা ওয়েবসাইট শুরু করতে পারেন।

কিন্তু!  এর মধ্যেও আরেকটা কথা রয়েই গেছে। এক হাজার ডলার ইনকাম করতে পারলেই আরেকটা ওয়েবসাইট না বানিয়ে, ওই ওয়েবসাইটটাকে একটা ফুল অটোমেটেড সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসা উচিত।

এই সিস্টেমটা কী?

ধরুন, আপনার ফার্স্ট ওয়েবসাইটের জন্য দু’জন রাইটার হায়ার করলেন। তারা আপনাকে কনটেন্ট দিতে থাকবে। এক্ষেত্রে, আপনি রাইটারদেরকে তিন চার মাসের কনটেন্ট লেখার জন্য কীওয়ার্ড ও রিসার্চ করে দিলেন, তারা তাদের মত কনটেন্ট দিতে থাকলো। তাদের কনটেন্ট সাজিয়ে গুছিয়ে পাবলিশ করার জন্য একজন কনটেন্ট ম্যানেজারও রাখলেন।

এরপর এখানে আপনার আর কোনো কাজ নেই বললেই চলে। আপনি আপনার ওয়েবাসাইট সচল রাখার জন্য কিছু মানুষ হায়ার করেছেন, তারাই আপনার ওয়েবাসাইটের কাজ বাজ করে দেবে।

 এখন আপনার কোথাও নিজের একটিভ থাকা লাগছে না। এরকম পর্যায়ে এসে তারপর আপনি অন্য আরেকটা ওয়েবসাইটের পেছনে সময় দিতে পারেন। এরপরে যত ওয়েবসাইটই ক্রিয়েট করেন না কেন, একই প্রসেসে কাজ করুন। সময় দিন। একটা পর্যায়ে নিয়ে যান। তবে, তিনটার বেশি ওয়েবসাইট পোর্টফোলিওতে না রাখাই বেটার। কারণ, পুরোপুরি অটোমেটেড প্রসেসে ওয়েবসাইট গুলো চলার পরেও যতখানি ফোকাস দেয়া জরুরি- তিনটার বেশি ওয়েবসাইট হলে সম্ভব হয়না। এতে ওয়েবসাইটের গ্রোথ কমে যাবে।

তিনটা ওয়েবসাইট থাকার পরেও যদি একান্তই নতুন ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করতে চান, তাহলে তিনটার মধ্যে একটা সেল করে দিয়ে নতুন ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করতে পারেন।

এভাবে এগোলে অনেকগুলো ওয়েবসাইট নিয়ে আর হিমশিম খাবেন না। প্রতিটি জিনিসেরই যত্ন প্রয়োজন।  যত্ন ছাড়া কে ক’দিন থাকে?

আপনার ওয়েবাসাইট গুলোর যত্ন নিন, ভালো রাখুন।

Similar Posts